অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবেই আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি। হঠাৎ নির্বাচনী আমেজে চাঙ্গা ভাব দেখা দিয়েছে দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে।
গত সোমবার থেকে দলটি তাদের প্রার্থী প্রত্যাশী নেতাদের কাছে মনোনয়ন ফরম বিক্রি কার্যক্রম শুরু করে। দুই দিনেই ৩২২২ টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছে দলটি। মনোনয়ন ফরম বিক্রি উপলক্ষে দলটির নয়াপল্টনের কার্যালয়ে চলছে উৎসবের আমেজ। নেতাকর্মীর ঢল নেমেছে কার্যালয়ের সামনে।
তবে এই উৎসবের মাঝেই মনোনয়ন নিয়েও লড়াই শুরু হয়েছে দলটির অনেক নেতাকর্মীদের মধ্যে। প্রার্থীতা নিয়ে দু গ্রুপের সংঘর্ষে আদাবরে আওয়ামী লীগের দুই কর্মী নিহত হলেও বিএনপিতে এমন ঘটনা এখনো ঘটেনি।
জানা গেছে ঢাকা-১৩ আসনে বিএনপির দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর মধ্যে চলছে প্রার্থীতার লড়াই। আসনটি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২, ৩৩ ও ৩৪ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। বিএনপির দুজন কেন্দ্রীয় নেতাই এই আসনটি চাচ্ছেন। ঢাকা-১৩ আসন থেকে ২০০৮ সালে নির্বাচন করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি এবারও এখান থেকে নির্বাচন করতে চাচ্ছেন। অন্যদিকে বিএনপি চেয়াপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালামও চাচ্ছেন এই আসন থেকে নির্বাচন করতে। এ জন্য তিনি নির্বাচনী জনসংযোগও করছেন।
এই আসনে আওয়ামী লীগেরও হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছেন। গত টানা দুইবারের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক এবারও এখানে নির্বাচন করবেন। তার বিপরীতে বিএনপির প্রার্থীতা নিয়ে এমন অন্তর্কোন্দল দলটিকে ভোগাবে বলে মনে করছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা বলছেন আগে একবার নির্বাচন করে এই আসনে ইতোমধ্যেই মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এলাকার মানুষদের কাছে পরিচিতি লাভ করেছেন। তাকে এই আসনে প্রার্থী করা হলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সাথে ভালো প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে। অন্যদিকে আব্দুস সালামের ভাবমূর্তি তেমন ভালো নয়। স্থানীয়দের সাথে তার সম্পৃক্ততাও কম।
মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের ঘনিষ্ট একজন জানান, বেগম খালেদা জিয়ার চাহিদা অনুযায়ীই তিনি ২০০৮ সালে এই আসনে নির্বাচন করেছেন। এবারও তিনি এই আসনেই নির্বাচন করবেন। দ্বন্দ্ব নিরসন না হলে তাকে ঢাকা-১৫ আসনে দেয়া হতে পারে এমন কথা শুনা যাচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল নিজেই ঢাকা-১৫ আসনে নির্বাচন করতে চান না। কারণ ঢাকা-১৩ তেই তার ভাল অবস্থা রয়েছে। পূর্বে একবার নির্বাচন করায় এখানকার স্থানীয়দের সাথেও তার ভালো সম্পৃক্ততা রয়েছে। এছাড়া ঢাকা-১৫ আসনে ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে জামায়াত সেক্রেটারি ডা. শফিকুর রহমানের নির্বাচন করার সম্ভাবনা অনেক বেশি বলেও জানান তিনি।
এদিকে চেয়াপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম ঢাকা-১৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী হওয়ার জন্য জোর তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু স্থানীয় নেতাকর্মীরা তাকে প্রার্থী হিসেবে অতটা পছন্দ করছেন না। বিগত আন্দোলন সংগ্রামেও তার সরব উপস্থিতি ছিলো না। এজন্য এই আসনে তারা পরিচ্ছন্ন ইমেজের মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকেই বিএনপির প্রার্থী হিসেবে চান।