অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রচলিত একটি প্রবাদ আছে যে, ‘গণতন্ত্র আর আওয়ামী লীগ একসঙ্গে চলতে পারে না।’ অর্থাৎ যেখানে গণতন্ত্র আছে সেখানে আওয়ামী লীগ থাকতে পারে না। আর যেখানে আওয়ামী লীগ আছে সেখানে গণতন্ত্র থাকতে পারে না।
মজার ব্যাপার হলো, প্রবাদটি আওয়ামী লীগ বিরোধী লোকদের বানানো হলেও নিজেদের কর্মকা-ের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ বার বার প্রমাণ করছে যে প্রচলিত এই প্রবাদ বাক্যটি আসলেই যথার্থ।
একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এখানে সকল স্তরের প্রতিনিধি নির্বাচিত হবে জনগণের ভোট বা মতামতের ভিত্তিতে। জনগণ স্বাধীনভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে যাকে বেছে নিবে তিনিই হবেন জনপ্রতিনিধি। নির্বাচনে ভোটাধিকারের প্রয়োগের মাধ্যমে জনগণই তাদের পছন্দের প্রতিনিধিকে বেছে নিবে।
কিন্তু লক্ষণীয় বিষয় হলো, দেশের বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শাসনামলে দেশ থেকে স্বাধীনভাবে জনপ্রতিনিধি বাছাইয়ের গণতান্ত্রিক সেই প্রক্রিয়াটি একেবারেই বিদায় নিয়েছে। বলা যায়, নির্বাচনে স্বাধীনভাবে ভোট প্রদানের অধিকার হরণ করে আওয়ামী লীগ দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে একেবারে ধ্বংস করে দিয়েছে। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে শেখ হাসিনা ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে।
বর্তমান সরকারের আমলে দেশে যে কয়টি নির্বাচন হয়েছে সবগুলোই নামমাত্র। আর সর্বশেষ জনগণের ভোট ডাকাতির নজির স্থাপন করেছে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে।
ঢাকা থেকে নির্বাচন কভার করতে যাওয়া সাংবাদিকরা বলছেন, অধিকাংশ কেন্দ্রেই তারা বিএনপির কোনো এজেন্ট দেখতে পায়নি। এসব কেন্দ্রে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা প্রিজাইডিং অফিসারদের কাছ থেকে ব্যালট নিয়ে নিজেদের মতো করে নৌকায় সিল মেরেছে।
আর যেসব কেন্দ্রে ভোটাররা গিয়েছিল ভোট দিতে তাদেরকেও মেয়র পদের ব্যালট দেয়া হয়নি। তাদেরকে বলা হয়েছে যে, মেয়র পদে ভোট দিতে হবে না। এটা আগেই দেয়া হয়ে গেছে।
বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে ৪০০ কেন্দ্র দখল করে নৌকায় সিল মারা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এমন ২০০ কেন্দ্র দখল করে নৌকায় সিল মেরেছে যেখানে ধানের শীষ কমপক্ষে ২ লাখ ভোট পাওয়ার কথা। এসব আওয়ামী লীগ পূর্বপরিকল্পিতভাবেই করেছে।
যদিও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নির্লজ্জের মতো বলছেন যে, কোনো কেন্দ্র থেকে বিএনপির এজেন্টদেরকে বের করে দেয়া হয়নি।
তবে, রাজনীতিক বিশ্লেষক ও সচেতন মানুষ বলছেন, গাজীপুরে বিএনপি হারেনি। হেরেছে মূলত গণতন্ত্র। আর জিতেছে বাকশাল। কারণ, গণতন্ত্র জিতলে বাকশাল জিততে পারতো না।