অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট্রের কথিত দুর্নীতি মামলায় ৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে ছলচাতুরি আর প্রতারণার সব সীমাই অতিক্রম করছে সরকার। এ মামলায় প্রথম থেকেই সীমাহীন প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছিল সরকার। ভুয়া সাক্ষী ও তদন্ত কর্মকর্তার তৈরি ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে মামলাটি পরিচালনা করেছিল সরকার। তিন বারের একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী নিজের স্বামীর নামে করা এতিমখানার ফান্ড থেকে মাত্র ২ কোটি টাকা আত্মসাত করেছে এটা বাংলাদেশের কোনো মানুষ বিশ্বাস করে না। আর টাকাগুলোও খরচ করা হয়নি। অন্য একটি একাউন্টে জমা রাখা হয়েছে।
এরপরও বিশেষ আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামান নীতি-নৈতিকতাকে বিসর্জন দিয়ে একটি ফরমায়েশি রায় দিয়ে সরকারের হুকুম তামিল করেছেন। তারপরও দেশবাসীর প্রত্যাশা ছিল খালেদা জিয়া একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় আদালত তাকে জামিন দিবেন। কিন্তু জামিন দেয়াতো দূরের কথা আজ পর্যন্ত তার জামিন শুনানিই শেষ করেনি আদালত।
এখানে লক্ষণীয় বিষয় হলো, দেশের সর্বোচ্চ আদালতও খালেদা জিয়াকে নিয়ে সরকারের মতো ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়েছে। খালেদা জিয়ার জামিন আদেশ নিয়ে হাইকোর্ট, চেম্বার আদালত ও প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের কর্মকাণ্ডে দেশের মানুষ চরমভাবে ক্ষুব্ধ হয়েছে। আদালতের প্রতি মানুষের সর্বশেষ যে আস্থাটা ছিল সেটারও পরিসমাপ্তি ঘটেছে।
সর্বশেষ কারাবন্দি খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে নতুন নাটক শুরু করেছে সরকার। জিয়া ট্যারিটেবল মামলায় বুধবার খালেদা জিয়াকে বকশিবাজারের বিশেষ আদালতে হাজির করার কথা ছিল। বকশিবাজার ও পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিল। খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে বিশেষ আদালতে আনার জন্য কারাকর্তৃপক্ষের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন ছিল।
কিন্তু হঠাৎ করেই আদালতকে জানানো হলো যে শারীরিক অসুস্থতার কারণে খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করা সম্ভব হচ্ছে না। আদালত প্রাঙ্গণে এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর পরই বিএনপিপন্থী আইনজীবী বিএনপি নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠে, কারাগারে খালেদা জিয়া যদি এমনই অসুস্থ থাকেন তাহলে এটা আগে জানানো হয়নি কেন? কারাকর্তৃপক্ষের এ সংবাদের সত্যতা নিয়ে জনমনে দেখা দিয়েছে সন্দেহ-সংশয়।
তারপর বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করার জন্য অনুমতি নিয়েছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কিন্তু সাক্ষাতের পূর্ব মুহূর্তে হঠাৎ করেই জানানো হলো যে খালেদা জিয়া অসুস্থ, ডাক্তারের পর্যবেক্ষণে আছেন। এ অবস্থায় তার সঙ্গে দেখা করা যাবে না। তাই খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুল সাক্ষাৎ করতে পারেন নি।
কিন্তু, রাতে আবার কারা চিকিৎসক ডা. মাহমুদুল হাসান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, খালেদা জিয়া সুস্থ ও স্বাভাবিক আছেন। তার বড় ধরণের কোনো সমস্যা নেই।
কারা চিকিৎসকের এই বক্তব্যের পর এখন এনিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ প্রচণ্ড ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন যে, খালেদা জিয়াকে নিয়ে শেখ হাসিনা এত ছলচাতুরি করছেন কেন?