রাজাকারদের কাছ থেকে দুই থেকে ১০ লাখ টাকা করে নিয়ে তাদের মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন ‘একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা’ সংগঠনের আহ্বায়ক আবীর আহাদ। এ কাজে হাজার হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হয়েছে বলেও তার অভিযোগ।
শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
আবীর আহাদ বলেন, ‘২০১৭ সালের জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) এক নির্দেশিকায় ভারতীয় ও লাল মুক্তিবার্তার মুক্তিযোদ্ধাদের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে যেকোনও ব্যক্তি মুক্তিযোদ্ধা হতে পারবেন- এমন একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের ফর্মুলা জুড়ে দেয়। ফলে যাচাই-বাছাই কমিটির বেশিরভাগ সভাপতি/সদস্যরা ও সুযোগ সন্ধানীরা পুরো যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়াকে একটি বাণিজ্যিক হাতিয়ার বানিয়ে ফেলে।’ টাকার বিনিময়ে রাজাকারদের মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে দেওয়ার নামে হাজার হাজার কোটি টাকার বাণিজ্যের অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা কোনও অবস্থাতেই দেড় লাখের বেশি হবে না। কিন্তু বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ১৫ হাজারের বেশি।’
সংগঠনটির অভিযোগ, মুক্তিযোদ্ধা বানানোর নামে যে বাণিজ্য চলছে, সে বাণিজ্যের ভাগ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডারসহ ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য ও পাতিনেতারা পেয়েছেন।
আবীর আহাদ আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা বীরত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও জাতীয় সংবিধানে সেই অবদানের কোনও স্বীকৃতিই নেই। আর ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের কারণে আমাদের মান-সম্মান ধুলায় লুণ্ঠিত।’
সরকারের কাছে ‘মুক্তিযুদ্ধ’ ও ‘মুক্তিযোদ্ধা’ শব্দ দু’টির সাংবিধানিক স্বীকৃতি দাবি করেছেন তিনি।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদার সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান ও মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিতাড়নের দাবিতে দেশব্যাপী একটি সর্বাত্মক আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে ‘একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা’ নামে এই সংগঠনটি আত্মপ্রকাশ করেছে। শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনটির ৭১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন