৯০ সালে যার বিরুদ্ধে ছাত্র গণ-অভ্যুত্থান হয়েছিল, সেই স্বৈরাচার এরশাদও এত খারাপ ছিলেন না। তাদের ন্যূনতম নিয়ম-সৌজন্য বোধ ছিল যে তারা কোনো জনসমাবেশের ওপর গুলি চালাবে না। বর্তমান সরকার কত মায়ের, স্ত্রীর বুক খালি করেছে এবং সন্তানকে এতিম করেছে, তার হিসাব করা যাবে না।
আজ বুধবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ মন্তব্য করেন। ৬ ডিসেম্বর গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে ’৯০র ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র-ঐক্য আলোচনা সভার আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপির সৈনিকেরা এখন কারাগারে কারারুদ্ধ। এখন এমন কোনো জেলা-উপজেলা নেই, যেখানে বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে মামলা নেই। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তাঁকে হেনস্তা করা হচ্ছে ও ভয় দেখানো হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘কাকে ভয় দেখাচ্ছেন? খালেদা জিয়াকে? তিনি নয় বছর কোনো আপস করেননি, আপস করলে তিনি আজ প্রধানমন্ত্রী থাকতেন। তিনি আপনাদের (সরকার) সঙ্গে গত আট বছর নীতির প্রশ্নে, গণতন্ত্রের প্রশ্নে আপস করেননি।’
ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার যতই অত্যাচার করবে, যতই নির্যাতন করবে, স্বাধীনতাকামী মানুষ ততই বিএনপির হাত শক্তিশালী করবে। সরকার এত ভয় পায় কেন? নির্বাচন দিতে চায় না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। তিনি বলেন, সরকার জেনে গেছে যে তাদের পায়ের নিচে মাটি নেই। জনগণের সমর্থন নেই। নিরপেক্ষভাবে ভোট হলে সরকারের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।
নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, কোনো হাংকি-পাংকি চলবে না
তরুণদের প্রশংসা করে ফখরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের সামনে বিরাট সংকট। এত বড় সংকট আর কখনো এসেছে বলে মনে হয় না। দেশের অস্তিত্ব, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও মানুষের জীবনের নিরাপত্তা বিপন্ন। এ ক্ষেত্রে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে, একজোটে অপশাসন-দুঃশাসনকে পরাজিত করতে না পারলে বিএনপির কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। তিনি বলেন, ‘এ দেশের মানুষ নির্বাচন চায়। কিন্তু নির্বাচন হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। সেই নির্বাচন হবে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে। এখানে অন্য কোনো হাংকি-পাংকি করে লাভ হবে না, হলে এ দেশের মানুষ তা গ্রহণ করবে না। বাইরেও তা গ্রহণযোগ্য হবে না।’
অনুষ্ঠানের সভাপতি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান বলেন, দেশে গণতন্ত্র আজ অবরুদ্ধ। মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত। কথা বলার অধিকার নেই। খালেদা জিয়াকে নির্বাচনের বাইরে রাখার জন্য আজ ষড়যন্ত্র হচ্ছে, চক্রান্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা, মিথ্যা অভিযোগে শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা করবে! আমরা বলতে চাই, আজকের এই দিনে আরেকটি শপথ নিতে চাই—খালেদা জিয়াকে যদি কারাগারে নেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে বাংলাদেশে এমন কারাগার থাকবে না।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান, নরসিংদী জেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
সূত্র: প্রথম আলো
Discussion about this post