হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে প্রিন্স মানসুর বিন মাকরিন নিহতের ২৪ ঘণ্টার মাথায় সৌদি আরবের আরও একজন প্রিন্স নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আবদুল আজিজ বিন ফাহাদ নামের এ প্রিন্স পবিত্র আল আকসা মসজিদ ও ফিলিস্তিনিদের স্বাধীকারের পক্ষে সোচ্চার ছিলেন। সিয়াসাত ডেইলি এবং ইন্ডিয়া টুডে’র প্রতিবেদনে তার মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে। নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে টুইটারে এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে।
সিয়াসাত ডেইলি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রিন্স মানসুর বিন মাকরিন নিহতের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রাজপরিবারের কনিষ্ঠতম এ প্রিন্স নিহত হন।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এফবিআই)-এর সাবেক স্পেশাল এজেন্ট আল এইচ সৌফান তার নিহতের খবর নিশ্চিত করেছেন। টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘আবদুলআজিজ-এর মৃত্যু সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া হওয়া গেছে। তার বয়স ছিল ৪৪ বছর। এর আগে সাবেক যুবরাজের পুত্র প্রিন্স মানসুর বিন মাকরিন’কে মৃত ঘোষণা করা হয়।’
এ টুইটে অবশ্য প্রিন্স আবদুলআজিজ বিন ফাহাদের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে’র খবরে বলা হয়েছে, খবর পাওয়া যাচ্ছে প্রিন্স আবদুলআজিজ বিন ফাহাদ’কে গ্রেফতারের সময় সংঘটিত বন্দুকযুদ্ধে তিনি নিহত হয়েছেন।
এর আগে একইদিন ৬ নভেম্বর সোমবার হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে সৌদি আরবের দক্ষিণাঞ্চলের আসির প্রদেশের ডেপুটি গভর্নর প্রিন্স মানসুর বিন মাকরিন তার কয়েকজন সহকর্মীসহ নিহত হন। তবে দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।
রয়টার্স জানিয়েছে, সরকারি কাজে সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে আসির প্রদেশের ইয়েমেন সীমান্ত দিয়ে যাচ্ছিল হেলিকপ্টারটি। পরে হঠাৎ সেটি বিধ্বস্ত হয়।
সম্প্রতি সৌদি যুবরাজ সালমান বিন আব্দুল্লাহর নেতৃত্বে গঠিত দুর্নীতি দমন কমিশনের অভিযানে দেশটির ১১জন রাজপুত্র প্রিন্স, চারজন বর্তমান মন্ত্রী এবং প্রায় ডজন খানেক সাবেক মন্ত্রী গ্রেফতার হওয়ার ঘটনায় দেশটিতে আলোড়ন তৈরি হয়েছে। এর মধ্যেই দুই প্রিন্স নিহত হলেন।
সৌদি রাজতন্ত্রে অবশ্য অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব নতুন নয়। তবে রাজপরিবারের সেই অভ্যন্তরীণ সংকট ইতোপূর্বে এমন জোরালোভাবে সামনে আসেনি। ভিন্নমত সত্ত্বেও দীর্ঘ সময় ধরে রাজপরিবার একক কণ্ঠস্বরকেই ঐতিহ্য হিসেবে অনুসরণ করে আসছে। তবে এবার তা ভেঙে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে সামনে এসেছে। সর্বশেষ নিহত প্রিন্স আবদুলআজিজ বিন ফাহাদ পবিত্র আল আকসা মসজিদ ও ফিলিস্তিনিদের স্বাধীকারের পক্ষে সোচ্চার ছিলেন।
চলতি বছরের জুলাইয়ে এক টুইটে প্রিন্স আবদুলআজিজ বিন ফাহাদ লিখেছেন, ‘সামর্থ্য অনুযায়ী প্রত্যেক মুসলিম ফিলিস্তিনে এবং পবিত্র আল আকসা মসজিদে আমাদের ভাইদের সমর্থন করতে বাধ্য। হে মুহাম্মাদের জাতি, তাদের দেখিয়ে দাও তোমরা কারা। আল আকসাকে অবহেলা করাটা হবে অসম্মানজনক। সৃষ্টিকর্তা আমাদের কাছে এর জবাব চাইবেন।’
অন্য এক টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘হে মুহাম্মাদের জাতি, আমাদের তৃতীয় কিবলা দখলদারদের হাতে বন্দি। আমাদের মধ্যে কী কোনও প্রজ্ঞাবান ব্যক্তি নেই? আসুন লড়াই করি। আমাদের বিজয়ী হয়ে এই পবিত্র ঘরের সংরক্ষণ করতে হবে। আর সে লড়াইয়ে ব্যর্থ হলেও আমাদের রব আমাদের ক্ষমা করবেন।’
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে, দ্য দুরান।
Discussion about this post