দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের পাশাপাশি বহুদলীয় গনতন্ত্রে বিশ্বাসীদের নিয়ে বৃহত্তর রাজনেতিক প্লাটফরম গঠনের আহবান জানিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। তিনি বলেছেন, দেশের মানুষ অপরাজনীতি চায় না। তারা বিনা ভোটের সরকারও চায় না। তবে বর্তমান নির্বাচন কমিশন দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কিছুই করতে পারবে না, এরা হুকুমে চলে।
জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী একথা বলেন।
বদরুদ্দোজা চৌধুরী আরো বলেন, জনগণ আর তপ্ত কড়াই থেকে আবার আগুনে পুড়ে মরতে চায় না। তারা একটি বিকল্প রাজনীতি চায়। তবে সেটা তৃতীয় ধারা বা দ্বিতীয় ধারা নয়। তারা চায় একটি প্রধান রাজনৈতিক ধারায়। জনগণকে ওই ধারায় সম্পৃক্ত করে একটি প্রধান ধারা তৈরিতে তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহবান জানান।
জেএসডির ৪৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এ আলোচনা সভায় বদরুদ্দোজা চৌধুরী আরো বলেন, সবাই পরিবর্তন চায়। বিশ্বেই এখন পরিবর্তনের হাওয়া। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ বিনাভোটে নির্বাচন চায় না। তারা চায় নিজেদের ভোট নিজেরাই দিতে চায়। সেভাবেই তারা পরিবর্তন চায়। আর দেশের নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে তিনি নির্বাচন কমিশনকে আহবান জানান।
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম বলেন, এ সংসদ অবৈধ। এ সরকারও অবৈধ। এ সংসদ জনগণের সম্মতি ছাড়া হয়েছে। কারণ এতে ১৫৩ জন সংসদ সদস্য হয়েছেন জনগণের ভোট ছাড়া। তাই এ সরকার আগামীতে ইতিহাসের পাতায় অবৈধ্য সরকার বলে চিহ্নিত হবে।
নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, দেশের মানুষ অতিষ্ট। ঠিক স্বাধীনতার পরে জাসদ গঠনের যে অবস্থা বিরাজ করছিল এখন তেমনই রাজনৈতিক পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে।
গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, এ সরকার বিচার বিভাগকে ভুলুণ্ঠিত করেছে। তারা একে একে সব প্রতিষ্ঠান ধবংস করে দিচ্ছে। জনগণ অশুভ রাজনৈতিক দল থেকে মুক্তি চায়।
জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, ৫ জানুয়ারিরর মত আরেকটি নির্বাচন করে ক্ষমতায় থাকতে চাইলে তার পরিণতি ভয়াবহ হবে। সরকার এটা সামাল দিতেও পারবে না।
তিনি বলেন, জাতীয় ও রোহিঙ্গা সংকট সমাধান এবং জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সরকার অক্ষম হয়ে পড়েছে। দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজন স্বাধীন দেশের উপযোগী রাজনীতি, রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনা ও সংবিধানের আমূল সংস্কার নিশ্চিত করা। প্রয়োজন পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষ গঠন করে সেখান থেকে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের মাধ্যমে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা। এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য দুই জোটের বাইরের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক-প্রগতিশীল দল ও সমাজ শক্তিকে নিয়ে তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে হবে।
আলোচনায় জেএসডি সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, জেএসডি নেতা সিনিয়র যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আতাউল করিম ফারুক, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মো: সিরাজ মিয়া, সহসভাপতি তানিয়া রব, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল উদ্দিন পাটওয়ারী, মোশারফ হোসেন প্রমুখ।
সূত্র: নয়াদিগন্ত
Discussion about this post