অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে বিশিষ্ট নাগরিক, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদদের সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা। গত ২৯ জুলাই বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে তারা নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ ও নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগ ও নাগরিক সমাজের লোকদের দেয়া মতামত দেখে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলসহ সাধারণ মানুষও আশাবাদী হয়ে উঠেছিলেন।
কিন্তু, ১৭ ও ১৮ আগস্ট অনুষ্ঠিত সাংবাদিকদের সঙ্গে সংলাপের কথা বলে নির্বাচন কমিশন যা করেছে তাতে সবাই হতাশ হয়েছেন। দুই দফা সংলাপ শুধু প্রশ্নবিদ্ধই হয়নি, সংলাপের নামে নির্বাচন কমিশন সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে বলেও মনে করছেন বিশিষ্টজনেরা।
জানা গেছে, নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকসহ ৭১ জনকে সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কিন্তু দেখা গেছে, দুই দিনের সংলাপে হাতে গুনা দুয়েকজন সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিক ছাড়া সবাই ছিলেন সরকারপন্থী সাংবাদিক। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন সরকারপন্থী অংশের একাধিক নেতাকে রাখা হলেও বিএনপি-জামায়াতপন্থী অংশের মাত্র ১ জনকে রাখা হয়েছে। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শওকত মাহমুদকেও রাখা হয়নি।
বিশেষ করে বিএনপি-জামায়াতপন্থী হিসেবে পরিচিত দৈনিক আমার দেশ, দৈনিক নয়াদিগন্ত, দৈনিক সংগ্রাম ও জনপ্রিয় অনলাইন পত্রিকা শীর্ষ নিউজের সম্পাদককে সংলাপের দাওয়াত দেয়া হয়নি। এসব গণমাধ্যম থেকে জ্যেষ্ঠ কোনো সাংবাদিককেও রাখা হয়নি। যদিও সরকারপন্থী হওয়ার কারণে নাম সর্বস্ব অনেক গণমাধ্যমের সাংবাদিককেও সংলাপে দেখা গেছে।
নির্বচন কমিশনের এ ভুমিকা নিয়ে মিডিয়া পাড়াসহ সর্বস্তরে চলছে সমালোচনা। বিশিষ্টজনেরাও বলছেন, সংলাপেই যদি বিএনপি-জামায়াতপন্থী গণমাধ্যমের সম্পাদক ও সাংবাদিকদেরকে রাখা না হয় তাহলে নির্বাচন কতটুকু সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে? সরকারপন্থী সাংবাদিকরাতো সরকারের দাবিগুলোর পক্ষেই মতামত দেবেন। অনেকে সিইসি নুরুল হুদার উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। সংলাপকে সাজানো নাটকও বলছেন তারা।
এছাড়া নুরুল হুদা বৃহস্পতিবার বলেছেন, ‘সব দলকে নির্বাচনে আনার দায়িত্ব তাদের নয়’। তার এ বক্তব্য নিয়েও জনমনে নানান সন্দেহ-সংশয় দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, নুরুল হুদা ৫ জানুয়ারির মতো আরেকটি একদলীয় নির্বাচন করতে চাচ্ছেন। এজন্যই তিনি বলেছেন, সব দলকে নির্বাচনে আনার দায়িত্ব তাদের নয়।
Discussion about this post