বুধবার, নভেম্বর ৫, ২০২৫
Analysis BD
No Result
View All Result
No Result
View All Result
Analysis BD
No Result
View All Result
Home Home Post

গুম নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপে আছে সরকার

আগস্ট ২১, ২০২২
in Home Post, বিশেষ অ্যানালাইসিস
Share on FacebookShare on Twitter

বাংলাদেশে গুম, খুন ও ক্রসফায়ার নিয়ে বেশ চাপে রয়েছে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী সরকার। সম্প্রতি নেত্র নিউজে ‘আয়নাঘর’ নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের পর এই চাপ আরো বেড়েছে। গত সপ্তাহে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার মিচেল ব্যাচেলেটের সফরের সময় চারদিন ধরে বার বার সরকারের নেতাদের তার মুখ থেকে বিচার-বহির্ভূত হত্যা এবং বহু মানুষের লাপাত্তা হয়ে যাওয়ার অভিযোগ নতুন করে শুনতে হয়েছে। তাদেরকে সে সব অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে হয়েছে, খণ্ডন করতে হয়েছে।

মিজ ব্যাচেলেট ঢাকায় যেদিন নামেন সেদিনেই পরপর সরকারের তিনজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর – স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র এবং আইন – সাথে দেখা করে গুম, খুন এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের জেরে সাংবাদিক হয়রানি নিয়ে তার উদ্বেগের কথা তুলে ধরেন। বুধবার ফিরে যাওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করেও তিনি এসব বিষয় তোলেন। মিজ ব্যাচেলেট গুম খুন নিয়ে সাধারণ কথা বলেন নি। রীতিমত গবেষণা করে সুনির্দিষ্ট ৭৬ জনের তালিকা নিয়ে কথা বলেছে।

এই প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, মিজ ব্যাচেলেট তাদের কাছে একটি তালিকা দেন যেখানে ৭৬ জনের নাম ছিল যারা নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে আটক হওয়ার পর থেকে লাপাত্তা বলে অভিযোগ। মন্ত্রী বলেন, তিনি জাতিসংঘ কর্মকর্তাকে বলেছেন গুম এবং বিচার বহির্ভূত হত্যা নিয়ে অভিযোগ এলেই তদন্ত করেন। “গুম ও বিচার বহির্ভূত হত্যা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন। সুতরাং সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে অভিযোগ উঠলে সত্যতা খুঁজে দেখা। আমরা তা করেছি,” বলেন আইনমন্ত্রী।

কীভাবে তদন্ত করা হয়েছে তার একটি ব্যাখ্যা দেন মন্ত্রী -“তথাকথিত” এসব গুমের শিকার হয়েছেন যারা তাদের পরিবারের কাছে খোঁজ-খবর করতে পুলিশকে বলা হয়েছিল। তদন্তের নামে পুলিশ স্বজনদের হয়রানি করছে বলে “মানবাধিকার কর্মীরা চেঁচামেচি শুরু করলে” পরিবারগুলোকে পরে স্বপ্রণোদিত হয়ে লিখিতভাবে তাদের বক্তব্য বা তথ্য দেওয়ার সুযোগও দেওয়া হয়।

আনিসুল হক বলেন, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে মানুষজন নানা সমস্যা থেকে বাঁচতে নিজেরাই গা ঢাকা দিয়েছে এবং তাদের পরিবার গুমের অভিযোগ নিয়ে হাজির হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে তারা হয়তো কোনো মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী, পালিয়ে রয়েছে। আইনমন্ত্রীর এসব কথা ও সরকারের ব্যাখ্যায় যে জাতিসংঘ কর্মকর্তা সন্তুষ্ট হননি তা পরিষ্কার হয়ে যায় সংবাদ সম্মেলনে তার দেওয়া বক্তব্যে। তিনি গুম এবং বিচার বহির্ভূত হত্যার নিরপেক্ষ তদন্তের কথা বলে গেছেন। গুম সম্পর্কিত জাতিসংঘ সনদে বাংলাদেশকে সই করার আহ্বান জানিয়েছেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কয়েকটি ধারা বাতিল করতে তিনি আহ্বান জানিয়েছেন।

হংকং-ভিত্তিক এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশনের ২০০৯ সালে থেকে অর্থাৎ বর্তমান আওয়ামী লীগের সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এবছর জুন পর্যন্ত বাংলাদেশে ৬১৯ জন নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে আটকের পর লাপাত্তা হয়ে গেছেন। কমপক্ষে ২৬৫৮ জন মানুষকে বিচার বহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বছরের পর বছর ধরে বাংলাদেশে নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা গুম-খুন এবং হালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিকদের নির্যাতন নিয়ে ক্রমাগত উদ্বেগ প্রকাশ করে চলেছে। এসব ইস্যুতে ডজন ডজন রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।

বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিউইয়র্ক ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দক্ষিণ এশিয়া কার্যক্রমের প্রধান মিনাক্ষী গাঙ্গুলী বলেন, মানবাধিকার ইস্যুতে বাংলাদেশে সরকারের যে আচার-আচরণ তার নজির তারা অন্য কোথাও দেখেন না। “আমরা ৯০টি দেশে কাজ করি। কখনই বলি না কোথাও আদর্শ অবস্থা বিরাজ করছে। কিন্তু বাংলাদেশের সমস্যাটা একেবারেই আলাদা। এখানকার সরকার কখনই স্বীকারই করতে রাজী নয় যে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে”। জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধানের সামনেও সরকার সেই একই কথার পুনরাবৃত্তি করেছে।

“তার কাছেও মন্ত্রীরা বলেছেন মানুষ ইচ্ছা করে লুকিয়ে থেকে গুম হয়ে যাওয়ার কথা বলছে। অথচ সরকার খুব ভালো করে জানে পরিবারগুলো তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। চিঠি দিয়েছে, প্রেস কনফারেন্স করেছে, সমাবেশ করেছে। অথচ এখনও তারা বলছেন পাওনাদারের ভয়ে মানুষ লুকিয়ে রয়েছে। বউয়ের সাথে সম্পর্ক ভালো নয় বলে লুকিয়ে রয়েছে…। খুবই হতাশাব্যঞ্জক, যখন র‍্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা হয়েছে, তারপরও অপরাধীদের আড়াল করতে জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধানের সামনে এমন মিথ্যা তারা বলছেন!”

২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রচুর হৈচৈ হলে মানবাধিকার সংগঠনগুলো জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর অংশগ্রহণের নৈতিক ও আইনি অধিকার নিয়ে জোরালো প্রশ্ন তুলেছিল। ক্ষমতাধর দেশগুলো তাতে কান দেয়নি। তবে সুইডেনে নির্বাসিত বাংলাদেশের সাংবাদিক তাসনিম খলিল, যিনি বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে গবেষণাধর্মী একটি বই লিখেছেন, তিনি বলেন মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সাথে বাংলাদেশে সরকারের সম্পর্ক এখন এতটাই তিক্ত যে এসব সংস্থা এখন প্রতিকারের জন্য শক্তিধর দেশগুলোর সাথে দেন-দরবারের পথ নিয়েছে। তিনি বলেন গত ১০/১৫ বছরের বেশিরভাগ সময়, বিশেষ করে শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে মানবাধিকার সংস্থাগুলো চেষ্টা করছে সরকারের সাথে সরাসরি কথাবার্তা বলে বিভিন্ন অভিযোগের সুরাহা করার। তাদের কথাকে বারবার উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তারপর ২০১৮-তে মাদক নির্মূলের নামে কয়েকশ লোককে বিনা বিচারে হত্যা করা হয়। তখন এসব সংস্থা মনে করলে সরকার যখন কথা শুনছেই না তখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে যাওয়া ছাড়া তাদের উপায় নেই।

বুধবার বাংলাদেশ সফরে শেষে ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘ মানবাধিকার হাই কমিশনার মিচেল ব্যাচেলেট যেসব কথা বলেছেন তাতে স্পষ্ট ইঙ্গিত যে গুম এবং বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড তদন্তে সরকারের ব্যাখ্যায় তিনি সন্তুষ্ট হননি। এসব অভিযোগ তদন্তে নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন এ কাজে প্রয়োজন হলে তার অফিস বাংলাদেশকে সাহায্য করতে পারে। তিনি বলেছেন বাংলাদেশ যেহেতু জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে সবচেয়ে বেশি সৈন্য জোগান দেয়, ফলে ততে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের মানবাধিকার রেকর্ড খুঁটিয়ে দেখা প্রয়োজন। এসব কথা সরকারের জন্য নিঃসন্দেহে অস্বস্তিকর, কিন্তু র‍্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষাপটে মিচেল ব্যাচেলেটের এসব সুপারিশের সাড়া সরকার কিভাবে দেবে সেদিকেই এখন অনেকের দৃষ্টি থাকবে।

সম্পর্কিত সংবাদ

Home Post

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫
Home Post

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫
Home Post

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

Discussion about this post

জনপ্রিয় সংবাদ

  • রক্তাক্ত ২৮ অক্টোবর: ১৫ বছর পরেও বেপরওয়া খুনিরা, সুবিচার পায়নি শহীদ পরিবার

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • Trademark Web based poker Crazy Expensive diamonds Gambling enterprise Video slot Genuine Imitation Financial

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • ভাষা আন্দোলন ও এর ঘটনা প্রবাহ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • পাহাড়ে পরিকল্পিতভাবে বাঙালি উচ্ছেদ ও ডি ইসলামাইজেশন করা হচ্ছে

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • Tagesordnungspunkt Spielbank Maklercourtage Ohne Einzahlung 2024

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

সাম্প্রতিক সংবাদ

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

মে ২১, ২০২৫

ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

মে ২১, ২০২৫

© Analysis BD

No Result
View All Result

© Analysis BD