অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
জনগণের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত র্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীকে বিগত ১২ বছর ধরে অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য ব্যবহার করে আসছেন শেখ হাসিনা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো এখন হাসিনার দলীয় বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। জনগণের জান—মালের নিরাপত্তা না দিয়ে তারা এখন শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার কাজে সব সময় ব্যস্ত থাকে। আর শেখ হাসিনাও ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরকে যা যা দেয়া দরকার সবই দিয়ে যাচ্ছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আর প্রশাসনকে দিয়ে শেখ হাসিনা অবৈধ ক্ষমতার দেয়ালটা এতই শক্ত করেছেন যে যাতে কেউ আঘাত করতে না পারে। কিন্তু দু:খের বিষয় হল—শেখ হাসিনার এই শিষা ঢালা প্রাচীরেও ফাটল ধরে গেছে। হাসিনার অবৈধ ক্ষমতার প্রাচীর এখন যেকোনো সময় ধরে পড়তে পারে। এ নিয়ে শেখ হাসিনা এখন চরম দুশ্চিন্তায় আছেন। ক্ষমতা হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে তিনি এখন আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক র্যাব ও সংস্থাটির ৭ কর্মকর্তার উপর নিষেধাজ্ঞা হল শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরানোর প্রাথমিক পদক্ষেপ। যুক্তরাষ্ট্র পর্যায় ক্রমে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরো পদক্ষেপ নিবে। প্রথম পদক্ষেপের পর শেখ হাসিনার অবৈধ মন্ত্রীরা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এক সুরে সমালোচনা করে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র শেখ মুজিবের খুনীদের আশ্রয় দিয়েছে বলেও অভিযোগ করছে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। তবে যুক্তরাষ্ট্র কৌশলে বড় ধরণের জবাব দিয়েছে শেখ হাসিনাকে।
অভিজিতের খুনীদের ধরিয়ে দিতে যুক্তরাষ্ট্র ৫০ হাজার ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে। হাসিনা উচ্চবাচ্য করলে এখন যুক্তরাষ্ট্রও বলবে—আমার দেশের নাগরিকের খুনীদের ফিরিয়ে দাও। যুক্তরাষ্ট্রের এই পুরস্কার ঘোষণাকে শেখ হাসিনাকে চাপে ফেলার দ্বিতীয় পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন রাজনীতিক বিশ্লেষকরা।
এরপর—যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পর সুশীল সমাজের লোকজনও সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া শুরু করেছেন। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আকবর আলী খান রোববার একটি সেমিনারে খোলামেলা অনেক কথা বলেছেন। তিনি সরাসরি বলেছেন—ভারতের কাছে বাংলাদেশের চিরকৃতজ্ঞ হয়ে থাকার দরকার নাই। এছাড়া সরকারের দুর্নীতি—দু:শাসন নিয়েও তিনি কথা বলেছেন। জানা গেছে, বিএনপিকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে যারা সেনা শাসন এনেছিল সেই সুশীল সমাজ এখন আবার তৎপর হচ্ছে। তারা সবাই আমেরিকাপন্থী।
এছাড়া, বিএনপিও এখন চীন থেকে মুখ ফিরিয়ে আমেরিকার সাথে নতুন করে সম্পর্ক তৈরি করছে। তারপর ভিপি নুরসহ অন্যান্য কয়েকটি রাজনৈতিক দলেরও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভাল সম্পর্ক রয়েছে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পর থেকেই সার্বিক বিষয়ে খোজ খবর রাখছেন শেখ হাসিনা। গণমাধ্যমে না আসলেও আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের সাথে এ নিয়ে শেখ হাসিনা একাধিক বৈঠক করেছেন। সিনিয়র নেতারাও শেখ হাসিনাকে তাদেরকে উদ্বেগের বিষয় জানিয়েছেন। আর একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে শেখ হাসিনা জানতে পেরেছেন=যুক্তরাষ্ট্রের চুড়ান্ত টার্গেট হল শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়া। এ নিয়ে এখন শেখ হাসিনা চরম অস্বস্তিতে দিক কাটাচ্ছেন।
Discussion about this post