বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ৬, ২০২৫
Analysis BD
No Result
View All Result
No Result
View All Result
Analysis BD
No Result
View All Result
Home Home Post

আ.লীগের নীতিনির্ধারকদের ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠে মালেক চক্র

সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২০
in Home Post, slide, বিশেষ অ্যানালাইসিস
Share on FacebookShare on Twitter

১৯৮৬ সালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাড়িচালকের চাকরি পাকাপোক্ত করে মালেক ক্রমেই হয়ে ওঠেন ‘মালেক সাহেব’। ধীরে ধীরে কবজায় নেন গাড়িচালকদের নিয়ন্ত্রণ, নিয়োগ-বদলি ও পদোন্নতির মতো কাজগুলো। গড়ে তোলেন গাড়ির তৈল চুরিরে সিন্ডিকেট থেকে শুরু করে অবৈধ অস্ত্র, জাল নোটের ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী চক্র।  তবে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কেউ তাঁকে এসব কাজে বাধা দেননি। এমনকি অধিদপ্তরের গাড়িচালকদের নাম ধরে ডাকার রেওয়াজ থাকলেও আবদুল মালেককে সবাই মালেক সাহেব বলে সম্বোধন করেন।

এখন প্রশ্ন হলো একজন ড্রাইভার কিভাবে এই ক্ষমতাবনে গেলেন? কার ছত্রছায়ায় গড়ে তুলেছেন এসব চক্র?

র‍্যাব-১ গত রোববার আবদুল মালেককে রাজধানীর তুরাগ থানার দক্ষিণ কামারপাড়ার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে। তাঁর বেশুমার সম্পদের তথ্যও ক্রমে বেরিয়ে আসতে থাকে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, আদতে মালেক একা নন, অধিদপ্তরে প্রভাব বিস্তারকারী একটি চক্রের তিনি একজন সদস্যমাত্র।

এই চক্রকে সহযোগিতা দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের এক নেতা। জানাযায়, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে যোগ দেন তিনি। গাড়িচালক আবদুল মালেক নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের ওই ব্যক্তির অনুসারী স্বাস্থ্যের তৎকালীন মহাপরিচালক শাহ মুনীর হোসেনের গাড়ি চালাতেন। এরপর যাঁরা মহাপরিচালক পদে এসেছেন, আবদুল মালেক তাঁদের গাড়ি না চালালেও ‘ড্রাইভারস অ্যাসোসিয়েশন’ গঠন করে তাঁর সভাপতি হয়ে বসেন। তাঁর কথামতো ওঠবস করতে শুরু করেন অধিদপ্তরের সব গাড়িচালক।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আবদুল মালেক যে চক্রের সদস্য, সেই চক্রের বাকি সদস্যরা মহাপরিচালক, পরিচালকসহ (প্রশাসন) শীর্ষ পদধারীদের অধীনে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন। এখনো তাঁরা বহাল। অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) পদে সদ্য যোগ দিয়েছেন শেখ মো. হাসান ইমাম। তিনি বলেন, বিধি অনুযায়ী আবদুল মালেককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পত্রপত্রিকায় তাঁর সঙ্গে যাঁদের সম্পৃক্ততার কথা বলা হয়েছে, তাঁদের ব্যাপারেও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। বর্তমান প্রশাসন দুর্নীতিগ্রস্তদের ব্যাপারে শূন্য সহনশীল (জিরো টলারেন্স)।

র‍্যাব জানতে পেরেছে, গাড়িচালক মালেক যে চক্রের সদস্য, সেটির অনেক সদস্য এখনো চাকরিতে বহাল আছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, চক্রের সদস্যদের একজন চিকিৎসা কর্মকর্তা বাদে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতির নথিপত্র ঠিকঠাক করেন। এর বাইরেও তিনি অর্গানোগ্রাম তৈরি, পদ সৃষ্টি ও স্থায়ীকরণের বিষয়টি দেখভাল করেন। আরেকজন স্টেনোগ্রাফারের পদে ছিলেন। নাম না প্রকাশ করার শর্তে একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, একজন কর্মচারীকে স্টেনোগ্রাফারের পদ থেকে পদোন্নতি দিয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা করা হয়। কিছুদিন পর তিনি আবারও মহাপরিচালকের ব্যক্তিগত সহকারীর পদে চলে আসেন। আবদুল মালেকের একজন আত্মীয়ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত আছেন বলে জানা গেছে।

তাঁদের প্রত্যেকেই অফিস সহকারী পদে চাকরি শুরু করে পদোন্নতি পেয়ে অধিদপ্তরেই রয়ে গেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়া কেউ বদলি হন না। চিকিৎসক বাদে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন, তাঁদের কর্মক্ষেত্র হলো অধিদপ্তর, মাঠপর্যায়ের হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ। এক কার্যালয় থেকে অন্য কার্যালয়ে বদলি করা যাবে না এমন কোনো আইন নেই। তবে রেওয়াজ হলো, অধিদপ্তরে যাঁরা কর্মরত আছেন, তাঁদের অধিদপ্তরেরই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বদলি করা হয়। মালেক চক্রের সব সদস্যের চাকরির শুরু অধিদপ্তরে, শেষও এখানে।

সাততলা বাড়ির তৃতীয় তলায় পরিবার নিয়ে থাকেন আবদুল মালেক। নিজের ঘরের সামনে লাগিয়েছেন কারুকার্যসম্পন্ন দরজা। গতকাল দুপুরে তুরাগের বামনারটেক এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন পদে নিজের পরিবারেরই সাতজন

শুধু অঢেল সম্পদ অর্জন নয়, মালেকের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন পদে নিজের পরিবারেরই সাতজনকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তাদের মধ্যে একজন মালেকের ভাই আব্দুল খালেক। তিনি অধিদপ্তরে অফিস সহকারী হিসেবে চাকরি করছেন।

তাঁর আপন ভাই আবদুল খালেক অধিদপ্তরের ডেসপাচ শাখা ও ভাগনে সোহেল শিকারী প্রশাসন বিভাগের উপপরিচালকের গাড়ি চালান। তবে তাঁর মেয়ে নওরীন সুলতানা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অফিস সহকারী হিসেবে যোগ দিলেও প্রেষণে মতিঝিলের আরবান ডিসপেনসারিতে এবং ভাইপো আবদুল হাকিম অফিস সহকারী হিসেবে প্রেষণে কমিউনিটি ক্লিনিকে আছেন। ভায়রা মাহবুব কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোলে।

অধিদপ্তরের ক্যান্টিন থেকে ড্রাইভার তার নিয়ন্ত্রণে

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পুরোনো কার্যালয় মহাখালী কাঁচাবাজারসংলগ্ন জায়গায়। এখানেই বসেন পরিবহন কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন খান। তাঁর কার্যালয়ে ঢোকার আগে পথের দুই পাশে ৪২টি গাড়ি দেখা গেল গতকাল। এর বাইরেও অগণিত গাড়ি ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। এসব গাড়ির চালকদের নেতা হলেন আবদুল মালেক।

অধিদপ্তরের আওতায় গাড়ির সংখ্যা কত, চালকই বা কত? জানতে চাইলে আলাউদ্দীন খান বলেন, রাজস্ব খাতে মোট গাড়ি আছে ১৭টি। সব কটিই বেশ পুরোনো। এর মধ্যে ১৩টি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া। গাড়িচালক আছেন ৪৮ জন। উন্নয়ন খাতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ১৪টি কর্মসূচি আছে। সেখানে গাড়ির সংখ্যা কত, তাৎক্ষণিকভাবে তা তিনি বলতে পারেননি। এগুলো দেখাশোনার ভারও তাঁর নয়। কর্মসূচি ব্যবস্থাপকেরা এসব গাড়ির দায়িত্বে আছেন। তবে ১৪টি কর্মসূচির একটি অসংক্রামক ব্যাধিবিষয়ক। শুধু এই কর্মসূচিতেই গাড়ির সংখ্যা ৪৬।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাড়ি কে কোনটা চালাবে, তা নিয়ন্ত্রণ করতেন মালেক। গাড়ির তেল, গাড়ির যন্ত্রপাতি কেনা এবং গাড়ি মেরামতের বিষয়গুলোও হতো তাঁর সিদ্ধান্তমতো। কখনো কেউ আপত্তি তুললেই তিনি (মালেক) তাঁকে আর গাড়িচালক দিতেন না। গতকাল একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, গাড়ি বরাদ্দ পাওয়ার পর চালকের জন্য তিনি পরিবহন পুলে যোগাযোগ করেন। পরিবহন পুল থেকে মালেকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়। মালেক ওই কর্মকর্তাকে বলেছিলেন, পরিবহন পুল থেকে কোনো চালক দেওয়া হবে না। এমন কথা বলেই তিনি ফোন সংযোগ কেটে দেন। এছাড়া প্রতিটি গাড়ি থেকে তৈল বিক্রি করে ড্রাইভারদের থেকে ভাগ নিতেন মালেক।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পুরোনো কার্যালয়ের ক্যানটিন চালান মালেকের মেয়েজামাই। গতকাল ক্যানটিন বন্ধ পাওয়া যায়। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, শাহ মুনীর হোসেনের পর মহাপরিচালক হন খন্দকার সিফায়েৎউল্লাহ। তিনি আবদুল মালেকসহ কয়েকজনকে দুই বছরের জন্য ক্যানটিন পরিচালনার অনুমতি দিয়েছিলেন। এরপর থেকে ক্যানটিন তাঁরাই চালাচ্ছিলেন। এ জন্য সরকারি বিধি অনুযায়ী দরপত্র ডাকার কথা এবং সরকারি কোষাগারে ক্যানটিন পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্তদের টাকা দেওয়ার কথা। এ নিয়ে অধিদপ্তরের প্রশাসন বিভাগের সাবেক পরিচালক বেলাল হোসেন তৎকালীন মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদের কাছে একটি প্রতিবেদনও জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

তথ্য সূত্র: প্রথম আলো ও যুগান্তর।

 

সম্পর্কিত সংবাদ

Home Post

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫
Home Post

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫
Home Post

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

জনপ্রিয় সংবাদ

  • রক্তাক্ত ২৮ অক্টোবর: ১৫ বছর পরেও বেপরওয়া খুনিরা, সুবিচার পায়নি শহীদ পরিবার

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • ভাষা আন্দোলন ও এর ঘটনা প্রবাহ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • Trademark Web based poker Crazy Expensive diamonds Gambling enterprise Video slot Genuine Imitation Financial

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • পাহাড়ে পরিকল্পিতভাবে বাঙালি উচ্ছেদ ও ডি ইসলামাইজেশন করা হচ্ছে

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • Tagesordnungspunkt Spielbank Maklercourtage Ohne Einzahlung 2024

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

সাম্প্রতিক সংবাদ

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

মে ২১, ২০২৫

ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

মে ২১, ২০২৫

© Analysis BD

No Result
View All Result

© Analysis BD