জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণার পর সরকার অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেছে। এমনই মন্তব্য করেছেন এ জোটের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। সরকার ‘যেনতেন নির্বাচন’ যাতে না করতে পারে সে জন্য জনগণের পাশাপাশি গণমাধ্যমকেও ‘পাহারাদারের’ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন কামাল হোসেন।
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নতুন অফিসের কার্যক্রম উদ্বোধনের সময় এসব কথা বলেন কামাল হোসেন । তিনি বলেন, ‘আমরা অনুভব করছি সরকার একটা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেছে। ২০১৪ সালের মতো যেনতেন একটা নির্বাচন করে আরও পাঁচ বছর কাটিয়ে দিতে চায় তারা।’
কামাল হোসেন বলেন, ‘সরকার ভেবেছিল এবার আমরা অপ্রস্তুত, কেউ নির্বাচনের অংশ নেব না। যখন আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, তখন দেখলাম তাদের মধ্যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে।’
গণমাধ্যমের ভূমিকা তুলে ধরে কামাল হোসেন বলেন, কোথাও কোনো অনিয়ম দেখলে তা জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে। বিশেষ করে পুলিশের ভূমিকা খেয়াল রাখার জন্য বলেন। সাংবাদিকদেরও পাহারাদারে ভূমিকা পালন করার জন্য বলেন। সাংবাদিকেরা সতর্ক থাকলে অনিয়ম অন্যায় অনেকাংশে কমে যাবে বলে মনে করেন তিনি।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে কামাল হোসেন বলেন, স্বাধীন নিরপেক্ষ নির্বাচন হওয়ার জন্য ভোট পাহারা দিলে সরকারের অপচেষ্টা মোকাবিলা করে তা মানুষের প্রাপ্য অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায় করা যাবে। এতে ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটবে বলে উল্লেখ করেন।
ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক কামাল হোসেন বলেন, এই নির্বাচন সুষ্ঠু হলে দেশের প্রতি জনগণের মালিকানা ফেরত আসবে। বর্তমান গণতন্ত্রহীন অবস্থার ঘাটতি পূরণের জন্য এ নির্বাচন। তিনি বলেন, তাঁরা সবাই এ নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। ভোট দেওয়ার জন্য ভোরে বেলা চলে যেতে হবে, জায়গা ধরে রাখতে হবে। ভোট যেন এদিক-ওদিক না হয়, সে জন্য ভোট পাহারা দিতে হবে।
ইশতেহার প্রশ্নে কামাল হোসেন বলেন, ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে ইশতেহার ঘোষণা করা হবে। এবং ঐক্যফ্রন্টের একটাই ইশতেহার হবে।
এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কামাল হোসেনের পক্ষে একটি লিখিত বক্তব্য দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়, সরকার দলীয় প্রার্থীরা নির্বাচনী মাঠে দাপটের সঙ্গে আছে। কিন্তু জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা মাঠে যেতে পারছেন না। ছোটখাটো অজুহাতে ঐক্যফ্রন্টের ১৪১টি আসনের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে অভিযোগ করে বলা হয়, সরকারের প্রার্থীদের বড় বড় ঋণখেলাপিদের মনোনয়নপত্র বৈধ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিরোধী দলের ওপর পুলিশি হয়রানি, মামলা, গ্রেপ্তার চলছে বলেও জানানো হয়।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রয়োগের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার বিচ্যুতির দায়-দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনকে বহন করতে হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আ স ম আব্দুর রব, সুব্রত চৌধুরী, মোস্তফা মোহসীন মন্টু, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, বরকতউল্লা বুলু, আবদুস সালাম, রেজা কিবরিয়া, হাবিবুর রহমান তালুকদার প্রমুখ।
সূত্র: প্রথম আলো