রাজধানীর রমনা পার্ক এলাকায় অনলাইন পোর্টাল সারাবাংলা ডটনেট এর বিশেষ প্রতিনিধি ও সিনিয়র সাংবাদিক আজমল হক হেলালের উপর অতর্কিত হামলা করেছে কয়েকজন দুর্বৃত্ত। তাদের মধ্যে একজন প্রধানমন্ত্রীর বেডরুমের পরিচ্ছন্নকর্মী বলে নিজেকে দাবি করেছে। এবং তখন সে গাঁজা সেবনরত ছিলো।
বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) বেলা সোয়া ১১টার দিকে রমনা পার্কের বকুলতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে হামলার শিকার সাংবাদিক আজমল হক তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে হামলার ব্যাপারে বিস্তারিত জানিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তার স্ট্যাটাসটি অ্যানালাইসিস বিডির পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-
“মাননীয় প্রধান মন্ত্রী আমি নিরাপত্তা চাই
মাননীয় প্রধান মন্ত্রী আমি একজন সংবাদ কর্মী। দীর্ঘ ৩৫ টি বছর আমি সংবাদ কর্মী হিসেবে বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় সুনামের সঙ্গে কাজ করে আসছি। একই সঙ্গে সাংবাদিক সমাজের দাবি আদায়ের জন্য সাহসের সঙ্গে দাবি আন্দোলনে শরিক হয়েছি। সাংবাদিকদের সুনামধন্য প্রতিষ্ঠান ডিআরইউতে একাধিকবার বিভিন্ন পদে সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত হয়েছি। ১/১১ এর সময় আপনার মুক্তির বিষয় নিয়ে তৎকালিন সময়ের সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনকে প্রশ্ন করে আমি বিপদে পড়েছি। ওই সময় আমাকে সে গ্রেফতার করার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। সহকর্মী মোতাহার হোসেন( বর্তমানে দৈনিক বর্তমানে চীফ রিপোর্টার) তার সহায়তায় বন্ধু সাখাওয়াৎ হোসেন বাদশাসহ সচিবালয়ে কর্মরত বন্ধুদের সহায়তায় আমি রক্ষা পেয়েছি। আমি আপনার মুক্তির জন্য স্বাক্ষর অভিযানে স্বাক্ষর দিয়েছি। আমাদের শ্রদ্ধাভাজন নেতা সাংবাদিক সমাজের অহংকার ইকবাল সোবাহন চৌধুরী, মণজুরুল আহসান বুলবুল, শফিকুর রহমান, আলতাফ মাহামুদের নেতৃত্বে রজপথে মিছিল করেছি। যতদিন বেঁচে থাকবো ততদিন রাজনৈতিক আদর্শ স্বাধীনতার মহানয়ক বাংলার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে বেঁচে থাকবো। যতই বিপদ আসুক বাধা আসুক জয়বাংলা শ্লোগান আমার মুখে থাকবে। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত জীবনী শতবার পড়েছি। আরো জানতে ইচ্ছা করে তার সম্পর্কে আমি আপনার কাছে সাহায্য চাই না। সংবাদ কর্মী হিসেবে বিদেশে ট্যুর চাই না। আমি আমার অধিকার নিয়ে নিরাপত্তার সঙ্গে বেঁচে থাকতে চাচ্ছি।
কেন নিরাপত্তা চাচ্ছি সে সর্ম্পকে প্রশ্ন জাগাটা স্বাভাবিক।
আজ ১২ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় রমনা পার্কে ব্যায়াম করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছি। রমনা পার্কে কেউ আমার উপর হামলা করবে তা কখনও ভাবিনি। কারন রমনায় কর্মরত আনসার বাহিনীর সদস্য, পূর্ত বিভাগে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারিসহ ওখানকার পরিচ্ছন্ন কর্মীরা পর্যন্ত আমাকে চিনেন। সকলকেই আমি বয়স অনুযায়ী সম্মান করি। তারা আমার কাছে আসেন যতদুর পারি সাহায্য করি। ক্ষতি করি না। তবে রমনা পার্কের অনিয়ম গাজাখোর ইয়াবা ব্যাবসা, ও গোপনে গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার বিষয় নিয়ে একাধিক তথ্যবহুল নিউজ করেছি।
আমার হবি ছবি তোলা । রমনা পার্কে গিয়ে পাখির ছবি তুলি। ফেসবুকে দেই। রমনার কাঠবিড়ালীও আমাকে ব্যক্তিগত ভাবে চিনে। ওরা আমাকে পছন্দ করে। ওরা আমার হাতে এসে খাবার খায়।
আজ সেই পরিচিত রুপসী রমনায় হঠাৎ করে আমি হামলার শিকার হয়েছি। কেন আমার উপর দা নিয়ে হামলা করলো এ জন্য আমি নিজেই হতভম্ব। যে ছেলেটি হামলা করেছে সে নাকি আপনার ঘরের পরিছন্ন কর্মী। পুলিশের সামনে সে বললো তিনি নাকি গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর বেডরুমে গিয়ে পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম করে থাকে । তার কাছে পিএমও লেখা আইডি কার্ড রয়েছে। এই ছেলেটি যখন এসব কথা দাম্ভিকতা নিয়ে পুলিশের সামনে বলছিল তখন তার মুখ থেকে গাজার গন্ধ বের হচ্ছিল। ওই সময় আমার সাংবাদিক বন্ধুরা উপস্থিত ছিলেন। তার দাম্ভিকতায় আমি আরো হতভম্ব হই। কারন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বাসস্থান গণভবনে একজন গাঁজাখোর চাকরি করে কিভাবে?
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই ছেলে নাকি বেইলি রোডের আওয়ামী লীগ ইউনিটের একজন নেতা। এই পরিচয় পেয়েও অমি বাকরুদ্ধ। এই ছেলেটির জন্য আমাকে বেইলি রোডের বাবুল মিয়া (বেইলি রোড ইউনিট আওয়ামী লীগের সভাপতি) ফোন পর্যন্ত করেছেন। এতে করে আমি আরও বাকরুদ্ধ হয়েছি।
আমি অন্যায় করিনা। মনের ভুলে অন্যায় করলে তাৎক্ষনিক অনুতপ্ত হই। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, ক্ষমা চাই যার সঙ্গে অন্যায় করেছি তার কাছে। তাই সাহস করে এই লেখাটি লিখলাম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমি নিরাপত্তা চাই। অন্যায় হলে ক্ষমা করবেন। অক্ষত থকতে চাই। আমার পেশা আমি সঠিকভাবে পালন করার নিশ্চয়তা চাই।”