বুধবার, অক্টোবর ২৯, ২০২৫
Analysis BD
No Result
View All Result
No Result
View All Result
Analysis BD
No Result
View All Result
Home Home Post

কোটা আন্দোলন: কারাগারে ৭ নেতা, বাকিরা পালিয়ে

আগস্ট ১২, ২০১৮
in Home Post, বিশেষ অ্যানালাইসিস
Share on FacebookShare on Twitter
  • কোটা আন্দোলনের বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগের মারধরে আহত হন
  • আহতরা গোপনে চিকিৎসা নিয়ে ‘পলাতক’ জীবন যাপন করছেন
  • সর্বশেষ গত সোমবার আরেক যুগ্ম আহ্বায়ককে গ্রেপ্তার করা হয়
  • আন্দোলনকারীরা গ্রেপ্তার ও গুম আতঙ্কে আছেন

ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের নির্মম হাতুড়িপেটায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তরিকুল ইসলামের পায়ের হাড় ভেঙে গিয়েছিল। আঘাত পেয়েছিলেন মেরুদণ্ড ও মাথায়। মাথার আঘাতটা ভালো হয়েছে, কিন্তু মেরুদণ্ডের ব্যথা রয়ে গেছে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা পায়ের।

শুধু তরিকুল ইসলামই নন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মারধরে আহত হয়েছিলেন। গত ৩০ জুন থেকে পরের এক সপ্তাহ ধরে চলা হামলায় ১২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে সরকারি হাসপাতালে তাঁদের ভালো করে চিকিৎসা করা হয়নি। পরে গোপনে চিকিৎসা নিয়ে একধরনের ‘পলাতক’ জীবন যাপন করছেন। পুলিশের হাতে আটক হয়েছিলেন ১১ জন আন্দোলনকারী। একাধিক মামলায় এখনো কারাগারে আছেন সাতজন শিক্ষার্থী। সব মিলিয়ে চাকরির জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে স্বাভাবিক জীবন থেকেই দূরে থাকতে হচ্ছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের।

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরতদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা যারা হলে থাকতাম, তাদের কেউ এখন হলে থাকতে পারছি না। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যারাই এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম, সবাই গুম এবং গ্রেপ্তার আতঙ্কে আছি। নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্তদেরও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, এতে এই আতঙ্ক বাড়ছে। তারপরও কোটা সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত আমরা নতুন কর্মসূচিতে যাব, গ্রেপ্তারকৃতদেরও নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।’

সুস্থ হননি আহতেরা

গত ২ জুলাই কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পতাকা মিছিল করছিলেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। মিছিলের একপর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হামলা করেন। এ সময় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী তরিকুলকে বেধড়ক পেটানো হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনি প্রথমে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। একপর্যায়ে ঢাকায়ও আনা হয়েছিল তরিকুলকে। কিছুদিন চিকিৎসা শেষে তিনি গাইবান্ধায় গ্রামের বাড়ি ফিরে যান।

তরিকুল সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক। গত বৃহস্পতিবার তাঁর সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয় প্রথম আলোর। তিনি বলেন, ‘এখন আগের চেয়ে একটু ভালো আছি। নিয়মিত ড্রেসিং করাতে হচ্ছে।’ আন্দোলন সম্পর্কিত বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি।

তরিকুলের এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর পায়ে রড ঢুকিয়ে হাড় জোড়া লাগানো হয়েছে। কিন্তু সেখানে সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল। তাই আরেকটি অপারেশন করে ঊরুর অংশ থেকে চামড়া নিয়ে সেখানে লাগানো হয়। সেখানে প্রায় প্রতিদিনই ড্রেসিং করতে হয়। চিকিৎসক বলে দিয়েছেন, তিন মাসের মধ্যে তিনি পা ফেলতে পারবেন না। তিনি আরও জানান, ঢাকায় কঠোর গোপনীয়তায় তাঁকে চিকিৎসা করানো হয়েছে। পুরোপুরি সুস্থ না হলেও তাঁকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাঁর শিক্ষক ও কয়েকজন বন্ধু চিকিৎসার খরচ দিচ্ছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের সামনে ৩০ জুন সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হককে এলোপাতাড়ি মারধর করা হয়। গত বুধবার তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি চিকিৎসা নিয়েছেন। মারের চোটে বাঁ পাশের কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, ডান কাঁধের জোড়া সরে গেছে। সারা শরীরে এখনো মারের ব্যথা। ঠিকমতো হাত নাড়াতে পারেন না। একটানা বেশিক্ষণ হাঁটতে বা বসে থাকতে পারেন না।

দুশ্চিন্তা স্বাভাবিক জীবন নিয়ে

একাধিক আন্দোলনকারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম শঙ্কায় রয়েছেন। সরকারি চাকরি পেতে যাঁরা আন্দোলনে নেমেছিলেন, সেই চাকরি পাওয়া তো দূরের কথা, এখন মামলা-হামলা এড়িয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা নিয়েই দুশ্চিন্তা তাঁদের।

আহত এক শিক্ষার্থী বলেন, তিনি ঢাকার গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। কিন্তু ভয়ে তিন দিনের বেশি হাসপাতালে থাকতে পারেননি। হাতে-পায়ে-পিঠে আঘাত নিয়েই হাসপাতাল ছেড়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনকারীদের ছাত্রলীগ দিয়ে মারধর করার পরে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানো হলো। সবাই সবকিছু দেখল। এখনো মাথার ওপরে মামলার খাঁড়া। কী জানি কপালে কী আছে!’

স্নাতকোত্তর পরীক্ষা দেওয়া আহত আরেক ছাত্র বলেন, ‘যে সরকারি চাকরি পাওয়ার জন্য আন্দোলন করলাম, সে চাকরি যে আর জীবনে পাব না, তা নিশ্চিত। এখন আমরা স্বাভাবিকভাবে বাকি জীবনটা কাটাতে চাই। কিন্তু এখনো ক্যাম্পাসে যেতে পারি না। ফেসবুকেও নিষ্ক্রিয় হয়ে রয়েছি। আপনারা লেখেন, সরকার যেন আমাদের আর কিছু না করে।’

কারাগারে সাত শিক্ষার্থী

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সাত শিক্ষার্থী এখন কারাগারে আছেন। তাঁরা হলেন রাশেদ খান, ফারুক হোসেন, এ পি এম সুহেল, তরিকুল ইসলাম, মশিউর রহমান, জসিম উদ্দিন ও রাতুল সরকার।

পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ জুলাই প্রথম ছয়জনের জামিন আবেদন নাকচ করা হয়। আর সর্বশেষ গত সোমবার রাতে রাতুল সরকার নামের আরেকজন শিক্ষার্থীকে গাজীপুর থেকে আটক করা হয়। তাঁকেও এক দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়। এই সাতজনের প্রত্যেকেই সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক।

আন্দোলন চলাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় উপাচার্যের বাসা ভাঙচুর, পুলিশকে মারধর, কর্তব্যকাজে বাধা, ওয়াকিটকি ছিনতাই এবং তথ্যপ্রযুক্তি আইনে পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের করা চারটি মামলায় কারাগারে থাকা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছিল।

গ্রেপ্তার ছাত্র রাশেদের মা সালেহা খাতুন ছেলের মুক্তির দাবি নিয়ে এখনো রাজধানীতে ঘুরছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে রাশেদের মুক্তি চেয়ে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা খুব গরিব। রাশেদকে পড়ালেখা করাতে পুরো পরিবারকেই অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। রাশেদের যখন চাকরি করে পরিবারের হাল ধরার কথা ছিল, তখন তাঁর এই পরিণতিতে পুরো পরিবারের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে।

এই মামলাগুলো আদালতে লড়ছেন আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, রাশেদ খানসহ সাতজনের জামিন আবেদন নাকচ হওয়ায় ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের ওই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিনের জন্য আবেদন করা হয়েছে। সেটি শুনানির অপেক্ষায়।

অবশ্য পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন জোরদার হওয়ার পর কোটা আন্দোলন নিয়ে পুলিশের তৎপরতা থেমে গেছে। তা ছাড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ ছাত্রকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ আপাতত আর কোনো ছাত্রকে গ্রেপ্তারের চিন্তাভাবনা করছে না। তবে কোটা আন্দোলন যাতে আর বাড়তে না পারে, সেই ব্যবস্থা কী করে পাকাপোক্ত করা যায় তার পথ খুঁজছে পুলিশ। এ কারণে কোটা আন্দোলনের ঘটনায় দায়ের করা মামলাগুলোর তদন্তের আর কোনো অগ্রগতি হয়নি।

জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন প্রথম আলোকে বলেন, মামলাগুলো যেভাবে ছিল সেভাবেই আছে। চলমান বিষয় নিয়ে পুলিশ ব্যস্ত হয়ে পড়েছে বলে তিনি জানান।

মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল এ বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, যারা কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করল, তাদের অনেকের নাম-পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হলো না। আর নিরস্ত্র আন্দোলনকারীদের নানা অজুহাতে গ্রেপ্তার ও হয়রানি করা হচ্ছে। এতে অন্যদের মধ্যেও ভীতি সঞ্চার হচ্ছে। রাষ্ট্রের দায়িত্ব তার নাগরিকের নিরাপত্তা বিধান করা। নাগরিকদের মনে ভীতি সঞ্চার করে কার্যকলাপ চালানো উচিত কি না, সেটা সরকারের ভাবা উচিত। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য এটি ভালো লক্ষণ নয়।

সূত্র: প্রথম আলো

সম্পর্কিত সংবাদ

Home Post

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫
Home Post

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫
Home Post

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

জনপ্রিয় সংবাদ

  • রক্তাক্ত ২৮ অক্টোবর: ১৫ বছর পরেও বেপরওয়া খুনিরা, সুবিচার পায়নি শহীদ পরিবার

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • পাহাড়ে পরিকল্পিতভাবে বাঙালি উচ্ছেদ ও ডি ইসলামাইজেশন করা হচ্ছে

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • Trademark Web based poker Crazy Expensive diamonds Gambling enterprise Video slot Genuine Imitation Financial

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • অসুরের মুখে দাঁড়ি-টুপি : মুসলিম বিদ্বেষে সীমা ছাড়াল ভারত

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • ভাষা আন্দোলন ও এর ঘটনা প্রবাহ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

সাম্প্রতিক সংবাদ

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

মে ২১, ২০২৫

ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

মে ২১, ২০২৫

© Analysis BD

No Result
View All Result

© Analysis BD