অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের কথিত দুর্নীতির মামলায় কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আপিল বিভাগে বহালের পর কুমিল্লার দুইটি মামলায়ও তাকে ৬ মাসের জামিন দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। কিন্তু সরকার পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে চেম্বার আদালত মঙ্গলবার সেই জামিন আবার স্থগিত করেছেন। এ বিষয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য আবার বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেছেন আদালত।
কথিত দুর্নীতির মামলায় দেশের একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জামিন নিয়ে এমন নাটক মনে হয় দেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে এটাই প্রথম। শেয়ারবাজার ও ব্যাংক লুটকারী, খুনি, বড় বড় সন্ত্রাসীরা অহরহ জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু, শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে সরকার একজন বয়স্ক ও অসুস্থ সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে জামিন না দিয়ে তাকে হয়রানি করছে।
এতদিন বিএনপি নেতারা যে অভিযোগ করে আসছেন যে আদালত নয়, প্রধানমন্ত্রী চাইলে খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন। তাদের এই অভিযোগই সত্য প্রমাণিত হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সিদ্ধান্তে অটল। তার অধীনেই আগামী নির্বাচনে খালেদা জিয়াকে অংশ নিতে হবে। অন্যথায় তাকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে চলে যেতে হবে, তা না হলে নির্বাচনের আগ পর্যন্ত তাকে কারাগারেই থাকতে হবে। এখানে মামলাগুলো শুধুই ইস্যু। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারিকৃত মামলাগুলোর জামিন আবেদন শুনানি করতে করতে সরকার আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পার করবে।
কুমিল্লার যে দুইটি মামলায় জামিন স্থগিত করা হয়েছে সেটা আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির পর আদেশ দিতে দিতে রমজান মাস চলে যাবে। আপিল বিভাগ জামিন বহাল রাখলেও আবার জামিন নিতে হবে নড়াইলে করা মানহানির মামলায়।
এরপর কুমিল্লার আরও দুইটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি আছে। সেটি থেকেও জামিন নিতে হবে। এর সঙ্গে রাজধানীর একটি মামলাও আছে।
জানা গেছে, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের লোকজন কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছে। নির্বাচনের বিষয়ে খালেদা জিয়াকে তারা কোনোভাবেই সমঝোতায় আনতে পারছে না। সমঝোতায় না আসায় সরকারের ইশারাতেই আদালত জামিন দিয়ে আবার তা স্থগিত করছে।
আর খালেদা জিয়া যদি সরকারের প্রস্তাব মেনে নেন তাহলে অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি সব মামলায় জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন। অন্যথায়, নির্বাচনের আগ পর্যন্ত তাকে কারাগারেই বসবাস করতে হবে।