অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
খুলনা সিটিতে একটি ‘চমৎকার, সুষ্ঠু ও সুন্দর’ নির্বাচন উপহার দিয়েছে নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। নুরুল হুদা প্রধান নির্বাচন কমিশনার হলেও খুলনাতে ‘চমৎকার’ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পেছনে নেপথ্যে থেকে মূল ভুমিকা পালন করেছেন অন্যজন। আর তিনি হলেন নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন। তিনি সরকারি আমলা হলেও প্রশাসনে একজন ক্ষমতাসীন আওয়ামীগের ঘরের লোক হিসেবে পরিচিত।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হেলালুদ্দীন ইতিপূর্বে প্রশাসনের যেসব স্তরে দায়িত্ব পালন করে আসছেন, সবখানেই তিনি আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করেছেন। দলের প্রতি পরিপূর্ণ আনুগত্য থাকার কারণেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তাকে নির্বাচন কমিশন সচিবের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি পদে বসিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে নির্বাচন কমিশন চালাচ্ছেন সচিব হেলালুদ্দীন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদাসহ অন্যান্য কমিশনাররা তার কাছে কোনঠাসা হয়ে আছেন। নির্বাচন সংক্রান্ত যেকোনো বৈঠকে হেলালুদ্দীনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হিসেবে গণ্য হয়। ইতিমধ্যে এর বাস্তব প্রমাণও পাওয়া গেছে।
দেখা গেছে, অন্যান্য সময় নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার বা অন্য কমিশনাররা জানাতেন। গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। কিন্তু, খুলনা সিটি নির্বাচনে গুরুত্বপূণ বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেছেন হেলালুদ্দীন। নির্বাচনের আগে বিএনপির পক্ষ থেকে করা অভিযোগগুলোকে তিনি কোনো পাত্তাই দেননি। আর নির্বাচনের পরেতো এক আজগুবি কথা বললেন যে, খুলনার নির্বাচন ‘অত্যন্ত চমৎকার, সুন্দর ও সুষ্ঠু’ হয়েছে। অথচ খুলনার শান্তিপূর্ণ ভোট ডাকাতি নিয়ে দেশি-বিদেশি মিডিয়াগুলোর সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশের পর এনিয়ে সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়ে যায়। কিন্তু প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদা আজ পর্যন্ত এনিয়ে কোনো কথা বলেননি।
সর্বশেষ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকার বিশেষ বরাদ্দে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীনকে সাড়ে ৭ কাঠা আয়তনের একটি প্লট দিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হেলালুদ্দীনের এই প্লট পাওয়ার বিষয়টি প্রকাশিত হওয়ার পর এনিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়েছে।
রাজনীতিক বিশ্লেষকসহ সচেতন মানুষ মনে করছেন, হেলালুদ্দীন নির্বাচন কমিশনের সচিব হওয়ার পরই খুলনায় ‘চমৎকার’ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীকে বিজয়ী করেছেন। তাই এর প্রতিদান হিসেবে সরকার তাকে সাড়ে ৭ কাঠার প্লট উপহার দিয়েছে। সামনে জাতীয় নির্বাচন। হয়তো হেলালুদ্দীনের ভাগ্যে আরও বড় কিছুও জুটতে পারে।