অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
কোনো প্রকার সহিংস কর্মকাণ্ড ছাড়া ‘শান্তিপূর্ণ ভোট ডাকাতির’ মাধ্যমে গত ১৫ মে অনুষ্ঠিত হয়েছে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন। খুলনা সিটির এই নির্বাচনকে ভোট ডাকাতির এক নতুন মডেল হিসেবে দেখছেন বিশিষ্টজনসহ সচেতন মানুষ। কারণ, এর আগে বাংলাদেশে এমন শান্তিপূর্ণভাবে কোনো নির্বাচনে ভোট ডাকাতির ঘটনা ঘটেনি।
তফসিল ঘোষণার পর থেকেই সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে আসছিল বিএনপি। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির সিনিয়র নেতারা ও তাদের দলীয় মেয়রপ্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে ভোটের দিন সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা বিএনপির এসব দাবিকে পাত্তাই দেননি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খুলনা এবং গাজীপুর সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ খুলনাকে টার্গেট করেছিল। গাজীপুরে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং বিএনপি-জামায়াতের অবস্থান শক্ত থাকায় তারা খুলনাকে বেছে নিয়েছিল। তাদের টার্গেট ছিল এমন কোনো সহিংস কর্মকাণ্ড ঘটাবে না যা মিডিয়ার চোখে পড়ে। এজন্য তারা ১০০ কেন্দ্রকে টার্গেট করে আগ থেকে ধানের শীষের এজেন্টদেরকে হুমকি দিয়ে আসছিল যাতে তারা কেন্দ্রে না আসে। মামলা-হামলা ও গুম হয়ে যাওয়ার ভয়ে বিএনপির এজেন্টরা কেন্দ্রে আসেনি। যার কারণে আ.লীগ প্রার্থী খালেক ৬৪ হাজার ভোট বেশি পেয়েছেন।
খুলনার এই শান্তিপূর্ণ ভোট ডাকাতির চেয়েও মানুষের মধ্যে বেশি আতঙ্ক সৃষ্টি করছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দেয়া বক্তব্য। ওই দিন সন্ধ্যায় ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির জন্য ভবিষ্যতে আরও বড় ধরণের পরাজয় অপেক্ষা করছে।
কাদেরের বক্তব্য ইতিমধ্যে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এনিয়ে রাজনীতিক ও বিশিষ্টজনদের মধ্যে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষন।
অনেকেই বলছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যে আরও বড় ধরণের ভোট ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে ওবায়দুল কাদের মূলত সেটারই ইঙ্গিত দিয়েছেন। কাদেরের এই বক্তব্যের অর্থই হলো আগামী নির্বাচনে খুলনার চেয়েও আরও বেশি ‘শান্তিপূর্ণ ভোট ডাকাতির’ ঘটনা তারা ঘটাবে।
বিশিষ্টজনদের মতে, বর্তমান নুরুল হুদা কমিশনের অধীনে আগামী নির্বাচনে অংশ নেয়া বিএনপির জন্য মোটেও উচিত হবে না। আর সেনাবাহিনী মোতায়েন ছাড়া কোনো নির্বাচন বাংলাদেশে সুষ্ঠু হবে না। এজন্য বিএনপিকে সেনা মোতায়েনের পক্ষে ও নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিতে সোচ্চার হতে হবে।