অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট্রের কথিত দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপিকে বড় ধরণের কোনো কর্মসূচি পালন করতে দিচ্ছে না সরকার। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একাধিকবার জনসভার ঘোষণা দিলেও সরকার অনুমতি দেয়নি। এমনকি নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেও কোনো সমাবেশ করার অনুমতি দেয়নি সরকার।
সর্বশেষ আগামী ২৯ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করার অনুমতির জন্য মঙ্গলবার সরাসরি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে দেখা করেছেন বিএনপির কয়েকজন সিনিয়র নেতা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছ থেকেও জনসভা নিয়ে বিএনপি নেতারা কোনো আশার বাণী পাননি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিএনপি নেতাদেরকে বলে দিয়েছেন রাজধানীতে জনসভার অনুমতি দেয়ার এখতিয়ার পুলিশের। জনসভা নিয়ে গোয়েন্দা তথ্য থাকায় পুলিশ অনুমতি দেয়নি বলেও জানান তিনি। তবে, কী সেই গোয়েন্দা তথ্য সেটা পরিষ্কার করে বলেন নি।
সম্প্রতি বিভিন্ন দিবস ও প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ ও অন্যান্য সংগঠনগুলো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করেছে। আর আওয়ামী লীগ ইদানিং প্রতিসপ্তাহে একটি করে জনসভা করতেছে। বিএনপি তিন বার রাষ্ট্রপরিচালনা করেছে। এখনো জনসমর্থনের দিক দিয়ে দেশের প্রধান বিরোধীদল। কিন্তু বিএনপিকে সরকার সমাবেশ করার অনুমতি দিচ্ছে না।
কী কারণে বিএনপিকে সরকার রাজধানীতে জনসভা করার অনুমতি দিচ্ছে না সেটা না বললেও খোঁজ নিয়ে মূল কারণ জানা গেছে। সরকারের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আপাতত রাজধানীতে বিএনপিকে বড় ধরণের কোনো জমায়েতের সুযোগ না দেয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রটি কারণ হিসেবে বলেছে, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মাধ্যমে সরকার জানতে পেরেছে যে বিএনপির পিছনে অন্য একটি শক্তি কাজ করছে। জনসভার অনুমতি পেলে ঢাকার বাইরে থেকেও বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে ঢাকায় নিয়ে আসবে। দলের চেয়ারপারসনের মুক্তির দাবিতে তারা বড় ধরণের কিছু করতে পারে।
সরকার মনে করছে, বিএনপি জোটের প্রধান শরিক জামায়াতে ইসলামী খালেদা জিয়া ইস্যুতে নীরব থাকলেও তারাও সুযোগের অপেক্ষা করছে। বিএনপি জনসভার অনুমতি পেলে জামায়াতও সেদিন তাদের সব নেতাকর্মীদেরকে মাঠে নামিয়ে দেবে। তখন পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
সূত্রটি আরও জানায়, বিএনপির জনসভা নিয়ে সরকারের আরেকটি আশঙ্কার কারণ হলো গত ৮ ফেব্রুয়ারির শোডাউন। রায়ের আগে এত ধরপাকড়, পুলিশের তল্লাশির পরও হঠাৎ করে খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে এত লোক কোথা থেকে এসেছিল? সেই হিসাব সরকার এখনো মিলাতে পারছে না। গোয়েন্দা রিপোর্টে সরকার জানতে পেরেছে, অতীতে বিএনপির মিছিল সমাবেশে আসেনি এমন লোকও রায়ের দিন খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে ছিল।
সরকারের উচ্চমহল মনে করছে, এসব লোকদেরকে সংগঠিত করার পেছনে অন্যকোনো শক্তির হাত আছে। এখন রাজধানীতে বিএনপিকে জনসভার অনুমতি দিলে সেই শক্তিটা আবারও পেছন থেকে ইন্ধন যোগাবে। জনসভার আড়ালে বড় ধরণের কোনো ঘটনা ঘটে যেতে পারে।