দুর্নীতির দায়ে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরোনো কারাগারে বন্দী রয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আজ রোববার তাঁর আইনজীবীরা কারাগারে গিয়ে দেখা করে এসেছেন। সন্ধ্যায় আইনজীবীরা কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা কথা বলেছেন।
আইনজীবীরা বলছেন, খালেদা জিয়া তাঁদের কাছে জানতে চেয়েছেন কেন তাঁর জামিন হচ্ছে না। সরাসরি এ প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তাঁরা সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেছেন যে দেশে আইনের শাসন থাকলে তাঁকে (খালেদা জিয়া) কেউ আটকে রাখতে পারবে না। তবে তাঁরা খালেদা জিয়াকে জামিন বিলম্বের কারণ হিসেবে বলেছেন, এই মামলার পেছনে রাজনীতির বিষয়টিও আছে। সরকার এটা রাজনৈতিকভাবেও নিয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ম্যাডামকে বলেছি, যেভাবে আপনার জামিন আটকে গেছে, তা পাক-ভারত উপমহাদেশে নজিরবিহীন। আমরা বিএনপির চেয়ারপারসনকে আশ্বস্ত করেছি যে স্বৈরশাসকেরা মামলা দিয়ে আপনাকে আটকে রাখতে পারবে না।’
খালেদা জিয়ার সঙ্গে কী কথা হলো জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ম্যাডাম জানতে চান কেন তাঁর জামিন আটকে গেল? ম্যাডাম বলছিলেন, পাঁচ বছর সাজার মামলায় ছোট আইনজীবী দাঁড়ালেও অনেকেই সহজে জামিন পেয়ে যান। অথচ বড় বড় আইনজীবী তাঁর পক্ষে দাঁড়িয়েও জামিন কেন করাতে পারছেন না।’
এবারও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের জয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন খালেদা জিয়া। এ ব্যাপারে তাঁর আইনজীবীদের কাছে খালেদা জিয়া আশা পোষণ করেন, ‘সামনের জাতীয় নির্বাচনেও বিএনপি এমন সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে।’
মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘ম্যাডাম বলেছেন, সামনের নির্বাচনে বিএনপি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের মতো বিজয় লাভ করবে।’
জাতীয় নির্বাচন অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘খালেদা জিয়ার জামিনসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনার বাইরে অন্য কোনো বিষয়ে মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।’
তবে আইনজীবী মাহবুব হোসেন বলেছেন, শিগগিরই বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে কারাগারে দেখা করবেন। তখন এ বিষয়ে আলাপ হতে পারে।
আরেক আইনজীবী সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদিন বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা ভালো আছে।
খালেদার সঙ্গে দেখা করে আসা অপর তিন আইনজীবী হলেন, সাবেক স্পিকার জমিরউদ্দিন সরকার, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, আবদুর রেজাক খান।
সূত্র: প্রথম আলো