অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
মার্কিন সিবিএস টেলিভিশনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে রোববার সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বলেছেন, সৌদি আরবকে সব ধরনের উগ্রপন্থি(?) উপাদান থেকে মুক্ত করবেন তিনি।
কার্যত সৌদির সবচেয়ে ক্ষমতাবান ব্যক্তিটি বিশেষভাবে মিশরভিত্তিক রাজনৈতিক আন্দোলন মুসলিম ব্রাদারহুডের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘সৌদি আরবের স্কুলগুলোতে দীর্ঘ সময় ধরে মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রভাব ছিল। এখনও একেবারে শেষ হয়ে যায়নি। তবে খুব অল্প সময়ের সেটাকে পুরোপুরিভাবে মুছে ফেলবো।’
নিজের কথিত সংস্কার আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে দৃঢ়তা প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘লক্ষ্য পূরণে কাজ চালিয়ে যাবোই। একমাত্র মৃত্যু ছাড়া কোনো কিছুই আমাকে থামাতে পারবে না।’
সিবিএস’র উপস্থাপিকা নোরাহ ও’ডনেলকে দেয়া সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সাক্ষাৎকারটি হুবহু ভাষান্তর করেছে অ্যানালাইসিস বিডি। পাঠকদের জন্য তা নিচে তুলে ধরা হলো:
প্রশ্ন: অধিকাংশ আমেরিকানের মনে যখন সৌদি আরবের কথা আসে প্রথমেই তারা ভাবে ওসামা বিন লাদেনের কথা, ৯/১১ এবং সন্ত্রাসবাদের কথা। যা সে আমেরিকার মাটিতে নিয়ে এসেছিলো।
যুবরাজ বিন সালমান: হ্যাঁ, ওসামা বিন লাদেন ৯/১১ এ ১৫ সৌদি নাগরিককে নিয়োগ দিয়েছিলেন একটি পরিস্কার উদ্দেশ্য নিয়ে। সিআইএ’র কাগজপত্র এবং কংগ্রেসের তদন্ত অনুসারে ওসামা বিন লাদেন চেয়েছিলেন একটি বিভেদ তৈরি করতে, মধ্যপ্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে, সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে।
প্রশ্ন: ওসামা বিন লাদেন কেনো সৌদি আরব এবং পশ্চিমাদের মধ্যে ঘৃণা তৈরি করতে চেয়েছিলেন?
যুবরাজ বিন সালমান: একটি পরিবেশ তৈরির জন্য। যা তার অনুসারী সংগ্রহে সহায়ক। এবং তার উগ্র বার্তা ছড়িয়ে দেয়ার জন্য যে পশ্চিমা বিশ্ব আপনাকে ধ্বংস করার নকশা অঙ্কন করছে। প্রকৃতপক্ষে তিনি সফল হয়েছিলেন পাশ্চাত্যে বিভেদ তৈরি করতে।
প্রশ্ন: আপনি এখানে নিজ দেশে বিষয়গুলো পরিবর্তন করতে চাচ্ছেন।
যুবরাজ বিন সালমান: হ্যাঁ, প্রকৃতপক্ষে আমি বিশ্বাস করি আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল হয়েছি বিগত তিন বছরে।
প্রশ্ন: হোয়াইট হাউস প্রেসিডেন্টের প্রথম বৈদেশিক সফর সৌদি আরবে নির্ধারণ করেছিলো, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরে। এবং আপনি তার জন্যে লাল গালিচা সংবর্ধনার আয়োজন করেছিলেন। আপনার সাথে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সম্পর্ক কেমন?
যুবরাজ বিন সালমান: ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট। এবং সৌদি-আমেরিকান ঐতিহাসিক সম্পর্ক ৮০ বছর ধরে আছে। আসলে মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে পুরনো মিত্র যেকোনো দেশের আগেই।
প্রশ্ন: কয়েকটি বিষয়ের মধ্যে একটি বিষয়, মধ্যপ্রাচ্য শান্তি নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কথা বলেছেন। তার একজন জামাতা রয়েছেন, জ্যারেড কুশনার, তিনি দাপ্তরিক কাজের অংশ হিসেবে এটা নিয়ে কাজ করছেন। আমি জানি আপনি তার(কুশনার) সাথে মিলিত হয়েছিলেন। আপনি কি তার সাথে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি নিয়ে কথা বলেছেন?
যুবরাজ বিন সালমান: ঠিক, জ্যারেড হোয়াইট হাউজের মাধ্যমে এই দাপ্তরিক কাজে নিযুক্ত হয়েছেন। সৌদি হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে আমাদের মিত্র এবং এই প্রতিষ্ঠানের সকল প্রতিনিধির সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করা।
প্রশ্ন: প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জেরুজালেমে আমেরিকান দূতাবাস স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত এই শান্তি প্রক্রিয়াকে সহায়তা নাকি বিঘ্নিত করবে?
যুবরাজ বিন সালমান: আমরা ঐসব উদ্যোগে ফোকাস করার চেষ্টা করি যা সবার জন্য শান্তি প্রক্রিয়া ত্বরাণ্বিত করে। আমরা এমন কিছু ফোকাস করার চেষ্টা করি না যা উদ্বেগ তৈরি করে। সবসময় ইতিবাচক থাকা আমার স্বভাব। তাই আমি ঐসব বিষয়ে ফোকাস করার চেষ্টা করি যা ফিলিস্তিনের জনগনের এবং সকলের স্বার্থরক্ষায় সহায়তা করবে।
(আমরা যুবরাজ মুহাম্মদের সাথে প্রথম দেখা করি রিয়াদের রাজকীয় আদালতে। তিনি বৃষ্টির মধ্যে পৌঁছালেন, যা আরব সাম্রাজ্যে সৌভাগ্যের প্রতীক ধরা হয়। তাকে সাহসী ও স্বপ্নদর্শী বলা হয়। স্বদেশে সংস্কার এবং বেপরোয়াভাবে ক্ষমতাসীন হওয়ার জন্য তিনি মধ্যপ্রাচ্যে একটি সংঘাতময় পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন এবং নতুন শত্রু তৈরী করেছেন। সম্ভবত এ কারনে তিনি বিশ্বের সবচেয়ে সুরক্ষিত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন। কঠোর পরিশ্রম করছেন সবসময়। তিনি সিনেমা দেখে ইংরেজি শিখেছেন। একজন বাচ্চার মত করে তিনি গভীরভাবে সচেতন যে ৭০ ভাগ জনগোষ্ঠী তার মতই ৩৫ বছরের নীচে এবং অস্থির হয়ে উঠছে।)
প্রশ্ন: সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কি ছিলো?
যুবরাজ বিন সালমান: এখানে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আমি মনে করি আমাদের প্রথম বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে আমরা যা করছি তা জনগনকে বিশ্বাস করানো।
প্রশ্ন: একটি বহুল প্রচলিত ধারনা আছে সৌদি আরবে যে ধরনের ইসলাম চর্চা করা হয় তা কঠোর, নিয়ন্ত্রিত এবং অসহনশীল। এটার কি কোন সত্যতা আছে?
যুবরাজ বিন সালমান: ১৯৭৯ সালের পর থেকে এটা সত্য। আমরা এর ভুক্তভোগী বিশেষ করে আমার প্রজন্মকে সবচেয়ে বেশি এ বিষয়টির কারণে ভুগতে হয়েছে।
(যুবরাজ সৌদি আরবের বেশিরভাগ সমস্যার জন্য ১৯৭৯ সালকেই চিহ্নিত করছেন। যখন আয়াতুল্লাহ খোমেনি ইরানে ইসলামী বিপ্লব সাধন করেন। একই বছর,সৌদি আরবের ধর্মীয় কট্টরপন্থীরা কাবা শরিফ অবরোধ করে তাদের নিজস্ব ধর্মীয় চর্চা বজায় রাখার জন্য।)
প্রশ্ন: সৌদিরা দৈনন্দিন জীবন থেকে নারীদেরকে আলাদা করে ফেলতে শুরু করে। গত ৪০ বছরের সৌদি আরব যেমন ছিল। এটাই কি প্রকৃত সৌদি আরব?
যুবরাজ বিন সালমান: অবশ্যই না এটা প্রকৃত সৌদি আরব নয়। আমি আপনার দর্শকদেরকে স্মার্টফোন ব্যবহার করার অনুরোধ করবো। তারা ৬০ এবং ৭০ দশকের সৌদি আরব সম্পর্কে গুগলে সার্চ করে দেখতে পারেন। ওই সময়কার কিছু ছবি দেখলে সহজেই বুঝতে পারবেন প্রকৃত সৌদি আরব কেমন ছিলো।
প্রশ্ন: তাহলে ১৯৭৯ এর আগের সৌদি কেমন ছিল?
যুবরাজ বিন সালমান: তখন আমরা খুবই স্বাভাবিক জীবনযাপন করতাম। অন্যান্য উপসাগরীয় দেশেগুলোর মতোই নারীরা গাড়ি চালাতে পারত। দেশজুড়ে সিনেমা হল ছিল। নারীরা সবখানেই কাজ করত। ১৯৭৯ সালের আগ পর্যন্ত আমরা বিশ্বের অন্যান্য যে কোনো দেশের মতোই স্বাভাবিক মানুষ ছিলাম।
প্রশ্ন: নারীরা কি পুরুষদের সমান?
যুবরাজ বিন সালমান: অবশ্যই। আমরা সকলেই আদম সন্তান এবং কোনো পার্থক্য নেই।
প্রশ্ন: আপনি বলেছিলেন যে, আপনি সৌদি আরবকে পুনরায় সেই মডারেট ইসলামে ফিরিয়ে নিতে চান। এটা দিয়ে আসলে কী বুঝাতে চেয়েছেন?
যুবরাজ বিন সালমান: আমাদের এখানে উগ্রপন্থীরা আছে যারা নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশায় বাধা দেয়। তারা আসলে দুইজন নারী-পুরুষের নির্জনে মিলিত হওয়া এবং নারী-পুরুষরা কর্মক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করার বিষয় দুটিকে আলাদা করতে পারে না। (তাদের) এ রকম অনেক চিন্তা মহানবী (সাঃ) ও খলিফাদের সময়ের জীবনধারার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ওই জীবনাচরণই (ইসলামের) আসল উদাহরণ এবং সত্যিকারের মডেল।
(তিনি সৌদি আরবের ‘ধর্মীয় পুলিশ’এর ক্ষমতা কমিয়েছেন। এই পুলিশরা সাম্প্রতিক সময়েও নারীদের গ্রেফতার করার ক্ষমতা রাখত। জনপরিসরে মুখ ঢেকে না চললে এবং ভালোভাবে শুনুন তিনি যা বলছেন তা হচ্ছে, এটা শরীয়াহ’র অংশ না। শরিয়াহর আইন খুবই স্পষ্ট এবং শরীয়াহ আইনেই আছে যে, নারীরা পুরুষের মতোই শালীন কাপড় পরবে। এর মানে এটা নয়, শুধুই কালো রঙের আবায়া বা কালো হিজাব পরতে হবে। এটা নারীদের ওপর পুরোপুরি ছেড়ে দেয়া হয়েছে। কোন ধরনের শালীন ও সম্মানজনক কাপড় সে পরবে তার কথাগুলো খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এখন পর্যন্ত দেশের ধর্মীয় নেতারা চুপ করে আছেন এবং এই তরুণ যুবরাজের কাছে আনুগত্যের শপথ করেছেন। কল্যানরাষ্ট্র পূনর্গঠন করা একটি চ্যালেঞ্জ। অন্যটি হচ্ছে সৌদি আরবের তেলের প্রতি নির্ভরশীলতা। দুই ট্রিলিয়ন ডলার মূল্যমানের রাষ্ট্রীয় কোম্পানি আরামকো। সৌদি যুবরাজের পরিকল্পনার আওতায় এর কিছু অংশ বিক্রি করা হবে। নতুন উদ্যোগে বিনিয়োগ করার জন্য উদ্বেগ আছে যে,রাজ্যের গোপনীয় আর্থিক লেনদেন এবং ভীতিকর মানবাধিকার পরিস্থিতি বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করতে পারে।)
প্রশ্ন: আপনি স্বচ্ছতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, কিন্তু প্রতিবেদন আছে যে, অনেক মানুষ যারা আপনার সরকারের সমালোচনা করেছেন গত বছর গ্রেফতার হয়েছেন। এদের মধ্যে অর্থনীতিবিদ, আলেম এবং বুদ্ধিজীবী রয়েছেন। এটা কি আসলেই একটি মুক্ত সমাজ?
যুবরাজ বিন সালমান: আচ্ছা, আমরা চেষ্টা করবো যতটা সম্ভব প্রচার করতে এবং যত দ্রুত সম্ভব এই ব্যক্তিদের সম্পর্কে তথ্য পেতে। বিশ্বকে জানানোর জন্য যে, সৌদি সরকার কি করছে মৌলবাদ মোকাবিলা করার জন্য।
প্রশ্ন: কিন্তু এই দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে আপনি কি বলবেন?
যুবরাজ বিন সালমান: সৌদি আরব মানবাধিকারের অনেক মূলনীতিতে বিশ্বাস করে। আসলে আমরা মানবাধিকারের ধারণায় বিশ্বাস করি। কিন্তু পরিশেষে সৌদি আরবের মানবাধিকারের মানদণ্ড আমেরিকার মানদন্ডের মত নয়। আমি বলতে চাই না যে, আমাদের কোন সীমাবদ্ধতা নেই। আমাদের অবশ্যই সীমাবদ্ধতা আছে। কিন্তু আমরা স্বাভাবিকভাবে এই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
(কিন্তু যুবরাজ কঠোরতা অবলম্বনের জন্য অভিযুক্ত হয়েছেন। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হচ্ছে রিয়াদের রিটজ কার্লটনের ঘটনা। যা গত নভেম্বরে ঘটেছিলো। তিনি আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন বর্তমান এবং পূর্বের শতাধিক মন্ত্রী, মিডিয়া মোঘল, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এবং কমপক্ষে ১১ যুবরাজকে। এখানে একটি সভার জন্য যেখানে তাদেরকে রাষ্ট্র থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয় এবং অর্থ ফেরত দেয়া অথবা নিজেদেরকে নির্দোষ প্রমাণ করা পর্যন্ত আটক রাখা হয়।)
প্রশ্ন: কি ঘটেছিলো রিটজ কার্লটনে? কিভাবে রিটজ কার্লটন জেলে পরিণত হয়েছিলো?
যুবরাজ বিন সালমান: সৌদি আরবে যা আমরা করেছি তা খুবই প্রয়োজনীয় ছিলো। সকল পদক্ষেপ বর্তমান এবং প্রকাশিত আইন অনুসারে নেয়া হয়েছিলো।
(সৌদি আরব এখনো ক্ষমতা ভাগাভাগির একটি প্রাচীন ব্যবস্থা অনুসরণ করে আসছে। হাউস অব সৌদ এবং ওয়াহাবি ইসলামের মধ্যে। সৌদি আরবে সবচেয়ে কঠোর ও প্রভাবশালী ধর্মবিশ্বাস। কিন্তু যুবরাজ আমাদেরকে বলেছেন এটা তার ধর্ম নয়। কিন্তু মুসলিম গ্রুপগুলোর মধ্যে উগ্রবাদীরা যেমন মুসলিম ব্রাদারহুড সৌদি আরবের স্কুলসহ পুরো সমাজ ব্যবস্থার মধ্যে অনুপ্রবিষ্ট হয়েছে।)
প্রশ্ন: আপনি কি সৌদি আরবের পড়াশোনা এবং শিক্ষাব্যবস্থার দিকে নজর দিচ্ছেন?
যুবরাজ বিন সালমান: সৌদি স্কুলগুলো মুসলিম ব্রাদারহুডের বিভিন্ন উপকরণ দ্বারা প্রভাবিত। অবশ্যই অনেক বড় পরিসরে এমনকি এখনো অনেক উপকরণ রয়ে গেছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই এগুলো পুরোপুরি মুছে ফেলা হবে।
প্রশ্ন: আপনি বলছেন আপনি শিক্ষাব্যবস্থা থেকে উগ্রবাদ পুরোপুরি উৎপাটন করবেন?
যুবরাজ বিন সালমান: অবশ্যই। এই বিশ্বের কোন দেশই তার শিক্ষাব্যবস্থা কোন উগ্রপন্থী গ্রুপ দ্বারা প্রভাবিত হওয়া মেনে নিতে পারে না।
(যুবরাজ সৌদি আরবের অধিকাংশ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছেন যারা তরুণ, চঞ্চল এবং মুঠোফোনের মাধ্যমে সবকিছুর সাথে সংযুক্ত। তারা তাদের নতুন আইপ্যাড আসক্ত নেতার মাঝে তাদের মতই উদ্দীপনা লক্ষ্য করেন।)
প্রশ্ন: অধিকাংশ তরুণী, যাদের সাথে আমি মিলিত হয়েছি সবাই স্ন্যাপচ্যাটের মাধ্যমে আমাকে তাদের সাথে স্ন্যাপচ্যাটে অংশ নেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছিলেন। এটা পুরো সংস্কৃতিকে পরিবর্তন করে দিচ্ছে।
যুবরাজ বিন সালমান: আমি দাবি করতে পারি না যে, এই ক্ষেত্রে,আমি কোন ভূমিকা পালন করেছি। সৌদি নাগরিকরা সব সময়েই সোস্যাল মিডিয়া এবং প্রযুক্তিতে উন্মুক্ত ছিলো। (মাত্র ২২ শতাংশ মহিলা কর্মজীবী নিয়ে সৌদি যুবরাজের তীব্র উদ্বেগ রয়েছে। তিনি আরো বেশি মহিলাকে কাজের সাথে যুক্ত করতে উৎসাহিত করতে চান।) আমরা একটি উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছি যেটা নিকট ভবিষ্যতে চালু হবে। নতুন নীতিমালার জন্য যেখানে পুরুষ এবং মহিলার সমান পারিশ্রমিক নিশ্চিত করা হবে।
প্রশ্ন: আপনি সমান পারিশ্রমিকের কথা বলছেন। কিন্তু মহিলারা এখানে ড্রাইভিং পর্যন্ত করতে পারে না। এটা বিশ্বের সর্বশেষ জায়গা যেখানে মহিলাদের গাড়ি চালানোর অধিকার নেই।
যুবরাজ বিন সালমান: এটি এখন আর কোন সমস্যা নয়। ড্রাইভিং স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এবং দ্রুত চালু করা হবে। কয়েক মাসের মধ্যে মহিলারা সৌদি আরবে গাড়ি চালাবেন। আমরা অবশেষে যন্ত্রণাদায়ক অধ্যায় পেরিয়ে এসেছি।
প্রশ্ন: অবশ্যই অধিকাংশ লোক এই আইন সম্পর্কে শুনে থাকবেন যা মহিলাদেরকে জুনে গাড়ি চালনার অনুমোদন দিবে। কিন্তু এখানে অভিভাবকত্ব আইনও রয়েছে। মহিলাদেরকে ভ্রমণ করার জন্য তার পরিবারের কোন পুরুষের অনুমোদন লাগে। এটা তাই প্রত্যাবর্তন মনে হচ্ছে।
যুবরাজ বিন সালমান: আজ পর্যন্ত সৌদি মহিলারা তাদের সম্পূর্ণ অধিকার পাননি। ইসলামে তাদের অধিকার নির্ধারিত আছে যা তারা এখনো পায়নি। আমরা অনেক দূরে চলে এসেছি এবং আর অল্প কিছুদূর যাওয়া বাকি রয়েছে।
(বিন সালমানের উত্তরণ হবে একটি বংশানুক্রমিক ক্ষমতার পরিবর্তন তার দাদা আবদুল আজিজ আধুনিক সৌদি আরব প্রতিষ্ঠিত করেন। পরবর্তীতে তার ছয় সন্তান সিংহাসনের উত্তারাধিকারী হয়েছেন। বর্তমান বাদশাহ সালমানসহ বর্তমান যুবরাজ তার পিতার সাথে বড় হয়েছেন। তার থেকে শিখেছেন এবং সাহচার্য পেয়েছেন।)
প্রশ্ন: আপনি আপনার পিতার কাছ থেকে কি শিখেছেন?
যুবরাজ বিন সালমান: অনেক, অনেক কিছু। তিনি ইতিহাস খুব ভালোবাসেন। তিনি ইতিহাসের একজন আগ্রহী পাঠক। প্রতি সপ্তাহে তিনি আমাদের জন্য একটি বই নির্ধারিত করেন এবং সপ্তাহ শেষে তিনি আমাদেরকে বইয়ের বিষয়বস্তু সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। তিনি সবসময় বলেন, যদি তুমি হাজার বছরের ইতিহাস পড়ো, তোমার হাজার বছরের অভিজ্ঞতা সঞ্চিত হবে।
(মোহাম্মদ বিন সালমান জনগনের সাথে তাল মেলানোর চেষ্টা করছেন। যারা আমেরিকান তারকা সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হচ্ছেন যেমনটা তারা নবীর দেশে, ইসলামের জন্মভূমিতে রয়েছেন। আমেরিকান সমাজ যেভাবে ষাটের দশকে রুপান্তরিত হয়েছিলো। সৌদিরা তেমনি তাদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক বিপ্লবের মধ্যে রয়েছে। সৌদি সাম্রাজ্য, মধ্যপ্রাচ্য এবং ইসলামী বিশ্ব হয়তোবা কখনো একই রকম হবে না।)
প্রশ্ন: আপনি ৩২ বছর বয়সী এবং আপনি পরবর্তী ৫০ বছর দেশ শাসন করতে পারেন।
যুবরাজ বিন সালমান: শুধুমাত্র আল্লাহই জানেন, একজন কতদিন বাঁচবেন। একজন ৫০ বছর বাঁচবেন, কি বাঁচবেন না। কিন্তু যদি সবকিছু স্বাভাবিকভাবে চলে তাহলে এটাই প্রত্যাশিত।
প্রশ্ন: কিছু কি আপনাকে থামাতে পারে?
যুবরাজ বিন সালমান: শুধুই মৃত্যু।
ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন