অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বর্তমানে দেশের স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল, ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন অপারেটর ভাড়া বাবদ প্রতিবছর বিদেশি কোম্পানিকে ১৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদান করতে হয়। এই টাকা বাঁচানোর কথা বলে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার দেশে নিজস্ব স্যাটেলাইট নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে। বাংলাদেশের এই নিজস্ব স্যাটেলাইটের নাম দেয়া হয়েছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১। কয়েক দফা পিছিয়ে আগামী এপ্রিল মাসে এটা উৎক্ষেপন করা হবে বলে জানিয়েছে বিটিআরসি।
সরকারের দাবি, এই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপন সফল হলে দেশের টাকা দেশেই থাকবে। আর বেঁচে যাওয়া বাকী তরঙ্গ বিভিন্ন দেশে ভাড়া দেয়া সম্ভব হবে। অর্থাৎ এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের অর্থ উপার্জন করবে বাংলাদেশ।
তবে, দিন যত যাচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার নামে ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে স্যাটেলাইট নির্মাণের সরকারের আসল উদ্দেশ্য ততই বেরিয়ে আসছে। ইতিমধ্যে তার কিছু বহিঃপ্রকাশও ঘটেছে।
জানা গেছে, এই স্যাটেলাইট নির্মাণ প্রকল্পটি একটি রাষ্ট্রীয় প্রকল্প। রাষ্ট্রীয় অর্থ বয়ে এটা নির্মাণ করা হচ্ছে। বিটিআরসির অধীনেই এর নিয়ন্ত্রণ থাকার কথা। কিন্তু, সরকার কৌশলে এই স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব সেই দরবেশ খ্যাত সালমান এফ রহমানের হাতেই দিয়েছে। যার মাধ্যমে সরকার ইতিপূর্বে শেয়ারবাজার থেকে এক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
বাংলাদেশের বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলো বিটিআরসির নিকট থেকে ফ্রিকোয়েন্সি নিতে হয়। এই স্যাটেলাইটের নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব সালমান এফ রহমানের কোম্পানি বেক্সিমকোকে দেয়ার কারণে টিভি চ্যানেলগুলোকে এখন থেকে বেক্সিমকো থেকে ফ্রিকোয়েন্সি নিতে হবে। তাই ফ্রিকোয়েন্সি বাবদ যত আয় হবে সবই যাবে বেক্সিমকোর কোষাগারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় এত বড় একটি প্রকল্প বেসরকারি কোম্পানিকে দেয়ার ক্ষেত্রেও কোনো নিয়মনীতি মানা হয়নি। কোনো টেন্ডার ছাড়াই সরকার বেক্সিমকোকে এটা দিয়েছে। এমনকি বিটিআরসির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদও স্বীকার করেছেন যে এটা কীভাবে বেক্সিমকোকে দিয়েছে তিনিও জানেন না।
অ্যানালাইসিস বিডির অনুসন্ধানে জানা গেছে, টেন্ডার ছাড়াই স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব বেক্সিমকোকে দেয়ার পেছনে যিনি পর্দার আড়াল থেকে কলকাঠি নেড়েছেন তিনি হলেন প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয়। মূলত জয়ের নির্দেশেই তথ্যমন্ত্রণালয় কোনো প্রকার টেন্ডার আহ্বান করা ছাড়াই বেক্সিমকোকে স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট নির্মাণ রাষ্ট্রীয় অর্থ লুটপাটের সরকারের আরেকটি মেগা প্রকল্প। সরকারের এই স্যাটেলাইট প্রকল্প একদিন রাষ্ট্রের জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে বলেও মনে করছেন তারা।