অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
আজকের যুগে শিশুরা যখন নানারকম নাচগান ও অশ্লীলতা ভরপুর অ্যাপ-গ্যাজেটের সাথে বড় হচ্ছে তেমনি প্রেক্ষাপটে সুমাইয়া ফারুক চেয়েছেন মানুষের এই অপ্রতিরোধ্য গতিকে অন্যদিকে মোড় দিতে।
সুমাইয়া ফারুক ভারতের হায়দ্রাবাদের মেয়ে এবং একজন তরুণ উদ্যোক্তা যিনি taqva.com নামের ইসলামিক ভিডিওর সর্ববৃহৎ ভাণ্ডার গড়ে তুলেছেন।
বলা যায় ইন্টারনেটের ক্ষতিকর ও দেখার অনুপযুক্ত ভিডিওর বিপরীতে তিনিই প্রথম পরিচ্ছন্ন, ইসলামিক নৈতিকতাসম্পন্ন কন্টেন্ট উপস্থাপন শুরু করেন। যাতে আজকের বাচ্চারা এক সুন্দর নৈতিক পরিবেশে শুদ্ধ সংস্কৃতির সাথে বড় হওয়ার সুযোগ পায়।
বাচ্চাদের বিশেষত বেড়ে ওঠা শিশুদের একটা নিরাপদ অডিও ভিজুয়াল ভূবন সৃষ্টির প্রত্যয়ে নতুন এক যুগের সূচনা হিসেবে তিনি এই কাজটি শুরু করেন। এর মাধ্যমে তিনি যুবসমাজকেও নৈতিকতা ও বিশ্বাসের অবক্ষয় থেকে দূরে সরানোর একটা পথ বের করতে চেয়েছেন।
একবিংশ শতাব্দীতে এসে বাচ্চারা প্রতিনিয়ত ইন্টারনেটে ক্ষতিকর বিষয়ের মুখোমুখি হচ্ছে। এই জায়গা থেকে সুমাইয়া চেয়েছেন বাচ্চাদের সেই পরিবেশে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে যেসময় ইন্টারনেটের এই ভয়াবহ অবস্থা ছিলনা।
সুমাইয়ার ভাষায়, “আমি ছোটবেলায় দেখতাম আমার বাবা মা ইসলামি বিভিন্ন জিনিসের ক্যাসেট সিডি এসব ব্যবহার করতেন। আমরা আমাদের বন্ধুদের সাথে এই ক্যাসেট সিডিগুলো আদান প্রদান করতাম। একদিন বুঝতে পারলাম এইসব জিনিস এখন ইন্টারনেটেও পাওয়া যাচ্ছে। ইউটিউব, ভিমিও এইসব ওয়েবসাইটকে ধন্যবাদ যে তারা এই কন্টেন্টগুলোকে সহজেই মানুষের হাতের কাছে পাওয়ার ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে এই ওয়েবসাইটগুলো অনেকটা জঙ্গলের মত, যেখানে ভালো ফলমূলও পেতে পারেন আবার বিষাক্ত সাপ ও ভয়ঙ্কর জীবজন্তুর আক্রমনের শিকারও হতে পারেন। ইউটিউব বা এই ধরণের সাইটগুলোতে আপনি চাইলে ইসলামিক কন্টেন্টও দেখতে পারেন। আবার চাইলে নিষিদ্ধ(হারাম), চরিত্র ও নৈতিকতা বিধ্বংসী খারাপ কন্টেন্টেও আকৃষ্ট হতে পারেন।”
ইন্টারনেট আজকাল এক বৃহৎ জঙ্গলে পরিণত হয়েছে যেখানে বাচ্চারা নিমেষেই এমন কিছু শিখে ফেলতে পারে যা তাদের বয়সে দেখা কিংবা শেখার উপযুক্ত নয়, বলছিলেন সুমাইয়া ফারুক তিনি সম্প্রতি মনোবিজ্ঞানের উপর স্নাতকোত্তর এবং কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন।
তাকভা(তাকওয়া) ডটকম একটি ভিডিও সংগ্রহশালা যা বর্তমানে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের অসংখ্য স্বেচ্ছাসেবকের সহযোগিতায় নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হচ্ছে। taqva.com এ একই সাথে ইউটিউব এবং ভিমিওর ভালো কন্টেন্টগুলির সাথে সংযোগ স্থাপনের (লিংকআপ) ব্যবস্থা আছে।
প্রতিনিয়ত বেশকিছু মাপকাঠির ভিত্তিতে এই ভিডিওগুলির সত্যতা, মৌলিকতা ও গুণাগুণ যাচাই করা হচ্ছে। taqva.com এ আপনি কুরআন তেলাওয়াত, তাফসীর, হাদিস, ইসলামিক রিমাইন্ডার ভিডিও, নবীদের কাহিনী, আন্তধর্মীয় বিতর্ক, ইসলাম গ্রহণের গল্প, ইসলামিক কার্টুন ইত্যাদি পাবেন। বিশেষত, বাচ্চাদের জন্য রয়েছে শিশু বিভাগ যেখানে আপনি শিশুদের জন্য পাবেন অসংখ্য গঠণমূলক ভিডিও, কার্টুন ইত্যাদি।
বিভিন্ন বৃহৎ পরিসরের সোশ্যাল মিডিয়া গুলিতেও taqva.com, সুমাইয়া এবং তার টিমের সরব প্রচারণা রয়েছে। Facebook, Instagram, Twitter এবং Pinterest, এ “TaqvaOfficial” নামে পেজ রয়েছে। taqva.com এর বর্তমান ব্যবহারকারী ৫০,০০০ জন। এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে রয়েছে ২০,০০০ এর অধিক সক্রিয় ফলোয়ার।
এককথায় taqva.com হতে পারে ইসলামিক ভিডিও অনুসন্ধিৎসুদের জন্য এক সুনির্দিষ্ট এবং সুপরিচিত গন্তব্য। সুমাইয়ার ভাষায়, আমরা মনে করি ২০২০ সাল নাগাদ taqva.com সারাবিশ্বের মিলিয়ন মিলিয়ন মুসলিমের জন্য ইসলামিক ভিডিও’র এক বিশাল ভাণ্ডার হবে।