অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার আলোচিত রায়কে ঘিরে দেশজুড়ে আরোপ করা হয়েছে সরকারি অবরোধ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার নাম করে পুরো দেশেই যানবাহন চলাচলের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে সরকার।
সরকারের বাড়াবাড়িতে সাধারণ জনগণের মাঝে বিরাজ করছে ভয় আর আতঙ্ক। সবার মনে একটাই প্রশ্ন কাল আসলে কি হতে চলেছে দেশে?
এদিকে কাল ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে পাঠাও ও মুভসহ বিভিন্ন রাইড সার্বিসসমূহ সরকারি নির্দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হচ্ছে। পাঠাও ও মুভ তাদের গ্রাহকদেরকে নটিফিকেশনের মাধ্যমে সাময়িক বন্ধের এই তথ্য জানিয়েছে।
পাঠাও রাইড সার্ভিস তাদের গ্রাহকদের পাঠানো নটিফিকেশনটি অ্যানালাইসিস বিডির পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো:
‘প্রিয় গ্রাহক, আমরা দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে পাঠাও রাইডস সার্ভিস ৮ ফেব্রুয়ারি সকাল ৬টা থেকে সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে। পাঠাও ফুড ঢাকার কিছু নির্দিষ্ট স্থানে চালু থাকবে। সবসময় আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। আমাদের সার্ভিস পুনরায় চালু হওয়ার সাথে সাথে আপনাকে অবহিত করা হবে।’
এদিকে সরকারি নির্দেশে পাঠাওসহ রাইডসমূহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এসব সার্ভিসের নিয়মিত গ্রাহকগণ পড়েছেন বিড়ম্বনায়। যানজটকে পাশ কাটিয়ে ঠিক সময়ে অফিসে যাওয়ার জন্য অনেকেই পাঠাওয়ের মত রাইডসমূহকে তাদের নিয়মিত বাহন করে নিয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে এগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা পড়েছেন বিপাকে।
অন্যদিকে যারা এসব রাইডের মাধ্যমে উপার্জন করেন তারাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে অনেকেই এসব রাইডকে বেছে নিয়েছেন। এখন অনির্দিষ্ট কালের জন্য রাইডগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনিশ্চয়তায় পড়েছে তাদের একমাত্র উপার্জনের মাধ্যম।
দেশজুড়ে বিশেষ করে রাজধানীমুখী যানবাহনসমূহে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক ব্যাপক তল্লাশি করা হচ্ছে। এমন অহেতুক তল্লাশির কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। তারা মনে করছেন সরকার জনগণকে কথিত নিরাপত্তা দিতে গিয়ে উল্টো দেশজুড়ে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে। এককথায় দেশজুড়ে সরকারি অবরোধ আরোপ করা হয়েছে।
এদিকে খালেদার রায়কে ঘিরে সরকারপন্থি পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকেও উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান করা হয়েছে। সরকারের ইন্ধনে তারা সরাসরি দুটি রাজনৈতিক দলের নাম নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক ন্যাক্কারজনক বক্তব্য প্রদান করেছে। লাঠি হাতে প্রতিরোধের কথা বলে সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক তৈরি করেছেন।
বিরোধী দলীয় নেত্রীর রায়কে ঘিরে প্রশাসনসহ দেশের সকল সেক্টরকে এভাবে দলীয় স্বার্থে ব্যবহারের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিশিষ্টজনরা। তারা বলছেন, জনগনের উপর বিন্দুমাত্র আস্থা নেই বলেই জনগণের রাজপথে নামা রুখতে সরকার এমন ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। এর মাধ্যমে সরকার আবারও নিজেদের স্বৈরাচারি মনোভাবেরই পরিচয় দিয়েছে।
এদিকে সরকারের এমন দমন পীড়ন সত্ত্বেও রায়ের দিন দেশজুড়ে বিভিন্ন স্পটে ব্যাপক জনসমাগমের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। নেতাকর্মীরা গ্রেফতার এড়াতে বাসা বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছেন না। পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতারে বাড়ি বাড়ি গেলেও তাদের না পেয়ে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। বিএনপির নির্বাহী কমিটির সভায় রুদ্ধদ্বার বৈঠকে তৃণমূলের নেতাদেরকে আন্দোলনের বিভিন্ন কৌশল বাতলে দেয়া হয়েছে। পুলিশের এমন দমন পীড়ন মাথায় রেখেই তারা দলের চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে নেতীবাচক রায়ের প্রতিবাদের ধরন ঠিক করেছে বলে জানা গেছে।