অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
সরকারের বেআইনি কর্মকাণ্ডের আছর গিয়ে পড়েছে এবার মহান জাতীয় সংসদে। বিধি-বিধান লঙ্ঘন করেই এখন চালাচ্ছে একতরফা সংসদের কার্যক্রম। নির্বাচনে যেমন ভোট লাগেনি ঠিক তেমনি সংসদ অধিবেশন শুরু করতেও এখন আর কোরামের প্রয়োজন হয় না। এমনি এক নজিরবিহীন ঘটনা বৃহস্পতিবার ঘটেছে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নজিরবিহীন নির্বাচন ছিল ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা সংসদ নির্বাচন। যে নির্বাচনে ১৫৩ জন সংসদ সদস্য বিনাভোটে নির্বাচিত হয়ে সংসদে এসেছে। একতরফা সংসদ নির্বাচন নিয়ে সমালোচনা-বিতর্ক এখনও অব্যাহত আছে।
একদলীয় নির্বাচনের পর সরকার গঠন করে সংসদ তারা একদলীয়ভাবেই পরিচালিত করে আসছে। জাতীয় পার্টি কাগজে-কলমে বিরোধীদল থাকলেও কার্যত তারাও সরকারি দলের অন্তর্ভূক্ত। এমনকি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদও তার দলকে বিরোধীদল মনে করেন না। আর একদলীয় এ সংসদে দেশ, জনগণ, মানুষের মৌলিক অধিকার, শিক্ষা, মানবাধিকার, নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তাসহ জনগণের কল্যাণমূলক কোনো বিষয়ে কখনো আলোচনা হয় না। অধিবেশনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রের শত শত কোটি টাকা খরচ করে শুধু বিএনপি-জামায়াতকে গালিগালাজ করে থাকে।
একদলীয় সরকারের একদলীয় সংসদ বৃহস্পতিবার আরেক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। সংবিধান অনুযায়ী, ন্যূনতম ৬০ জন সদস্য উপস্থিত না থাকলে সংসদের কোরাম হয় না। কোরাম না থাকলে বৈঠক স্থগিত বা মুলতবি করতে হয়। জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালি বিধিতে বলা আছে, কোরাম-সংকটের জন্য অধিবেশনে স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কোরাম হওয়ার জন্য তিনি পাঁচ মিনিট ধরে ঘণ্টা বাজানোর নির্দেশ দেবেন। এর মধ্যে কোরাম না হলে স্পিকার অধিবেশন মুলতবি রাখবেন।
কিন্তু, বৃহস্পতিবার সংবিধান লঙ্ঘন করে ৬০ জনের কমসংখ্যক সদস্য নিয়েও অধিবেশন চলেছে। পরে মান-ইজ্জত বাঁচাতে ডেপুটি স্পীকার ফজলে রাব্বি মিয়া একজনের বক্তব্য না শুনেই সংসদের বৈঠক মুলতবি ঘোষণা করেন।
এনিয়ে এখন আবার নতুন বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। আইনজ্ঞরা বলছেন, কোরাম ছাড়া অধিবেশন শুরু করা মানে সংবিধান লঙ্ঘন করা। যে সংসদ রাষ্ট্রের সংবিধানকে সমুন্নত রাখে সেই সংসদে সংবিধান লঙ্ঘনের ঘটনা নজিরবিহীন। তারা বলছেন, এ সরকারের পক্ষে সবই সম্ভব। বেআইনি সরকার সব কিছুই এখন চালাচ্ছে বেআইনিভাবে।