তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান বলেছেন, ইরান, পাকিস্তান তথা মুসলিম বিশ্বকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল। তারা দেশগুলোতে অনধিকার চর্চা করছে। অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাচ্ছে। বিভিন্ন দেশের জনগণকে পরস্পরের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। এসব আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। ফ্রান্সে রাষ্ট্রীয় সফর শুরুর আগে শুক্রবার ইস্তাম্বুলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, তিউনিসিয়া, সুদান এবং শাদেও একই রকমের হস্তক্ষেপ দেখা গেছে। এই সবগুলোই মুসলিম রাষ্ট্র।
এর আগে সাম্প্রতিক বিক্ষোভের বাস্তবতায় ইরানের শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন এরদোয়ান। বুধবার ইরানি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনালাপে তিনি আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ না করতে বিক্ষোভকারীদের প্রতি রুহানির আহ্বানকে স্বাগত জানান।
তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু সাংবাদিকদের বলেছেন, ইসরায়েল ও আমেরিকার মদদেই ইরানে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটছে। এই অস্থিরতার পেছনে দুইজন ব্যক্তি রয়েছেন। তাদের একজন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। অন্যজন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তুরস্ক সবসময়ই এ ধরনের বহিরাগত হস্তক্ষেপের বিরোধী।
২০১৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর ইরানে এই বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় পুলিশ কর্মকর্তাসহ অন্তত ২৩ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন সহস্রাধিক মানুষ। বুধবার টুইটারে দেওয়া পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিক্ষোভকারীদের সময়মতো সমর্থন দেবে।
ট্রাম্প বলেন, ‘দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারের কাছ থেকে দেশ ফিরিয়ে নিতে চায় ইরানি জনগণ। যারা দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারের কাছ থেকে দেশকে ফিরিয়ে নিতে চান তাদের জন্য অনেক সম্মান। সময় হলেই আপনারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সহায়তা পাবেন।’
টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘ইরানের সরকার দেশের বাইরে সন্ত্রাসীদের অর্থের যোগান দিতে গিয়ে জাতীয় সম্পদের যে অপচয় করছে তারই প্রতিবাদে দেশটির জনগণ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করছে। ইরান সরকারের উচিত জনগণের অধিকার ও বিশ্বাসের প্রতি সম্মান দেখানো। বিশ্ববাসী ইরানের ঘটনাবলী গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।’
অন্যদিকে সন্ত্রাস দমনে ব্যর্থতার অভিযোগে পাকিস্তানে প্রায় সব সামরিক সহায়তা বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। ঘোষণায় বলা হয়েছে, হাক্কানি নেটওয়ার্ক ও আফগান তালেবানের বিরুদ্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়া পর্যন্ত দেশটিতে সব ধরনের সহায়তা স্থগিত থাকবে।
এর আগে পাকিস্তানকে দেওয়া সামরিক সহযোগিতার অংশ হিসেবে ২০১৬ সালের জন্য বরাদ্দকৃত সাড়ে ২২ কোটি (২২৫ মিলিয়ন) ডলার আটকে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল এনএসসি-এর মুখপাত্র বলেন, ‘২০১৬ অর্থবছরে পাকিস্তানকে ২৫৫ মিলিয়ন ডলার সামরিক সহযোগিতা দেওয়ার পরিকল্পনা আপাতত নেই যুক্তরাষ্ট্রের। প্রেসিডেন্ট (ট্রাম্প) স্পষ্ট করেই বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের কাছ থেকে দেশটির জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দৃঢ় পদক্ষেপ চায়।’
সূত্র: আরটি, এক্সপ্রেস ট্রিবিউন (ভাষান্তর: বাংলা ট্রিবিউন)