বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত বলেছেন, তীব্র শীতের প্রকোপে হতদরিদ্র মানুষের কষ্টের সীমা নেই। আর্থিক দুরবস্থার কারণে অনেকেই শীতের গরম কাপড় কিনতে পারছে না। প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্র না থাকায় তারা চরম মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাই মানবিক কারণে শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
তিনি সোমবার সকালে ঠাকুরগাঁওয়ের স্থানীয় এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবির ঠাকুরগাঁও শহর শাখার উদ্যোগে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ঠাকুরগাঁও শহর সভাপতি রাজিউর রহমান রাজুর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জোবাইয়ের আল মাসুমের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত জেলা সভাপতি সাইফুল ইসলাম, শহর সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ আলমসহ জেলা ও শহরের নেতৃবৃন্দ।
এরপর তিনি বিকেলে দিনাজপুর শহর শাখার উদ্যোগে আয়োজিত স্থানীয় এক মিলনায়তনে অসহায় দরিদ্র শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন। দিনাজপুর শহর সভাপতি সোহেল রানার সভাপতিত্বে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম, শহর সেক্রেটারি তোফায়েল আহমেদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালামসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
শিবির সভাপতি বলেন, শীতার্ত মানুষের মানুষের কষ্ট ও দূর্ভোগ কাছ থেকে না দেখলে বুঝার উপায় নেই। প্রতিবছরই জনসংখ্যার একটি বিশাল অংশ শীতে নিদারুণ কষ্ট ভোগ করে। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কষ্ট যেখানে লাঘব হয়নি সেখানে তীব্র শীত কষ্টে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। তাদের পক্ষে একদিকে শীতবস্ত্র কিনে শীত নিবারণ করা যেমন দুরূহ অন্যদিকে শীতজনিত নানা রোগে মানুষ আক্রান্ত হয়ে সিমাহীন কষ্ট ভোগ করছে। শীতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার গ্রামীণ ভূমিহীন কৃষক, ক্ষেত মজুর এবং নিম্নআয়ের মানুষ।
তিনি আরো বলেন, প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্র না থাকায় তারা চরম মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। দেশে বিত্তবান লোকের সংখ্যা নেহায়েত কম না হলেও সেভাবে সাহায্য পায় না শীতার্ত মানুষগুলো। প্রত্যেক মানুষেরই পারস্পারিক মানবতাবোধ থাকা প্রয়োজন। একজন মানুষ বিপদে পড়লে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে অসহায় হলে তাকে যথাসাধ্য সাহায্য করা সমাজের বিত্তবানদের মানবিক দায়িত্ব। সবার উচিত সমগ্র সৃষ্টির প্রতি দয়া-মায়া, অকৃত্রিম ভালোবাসা, সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও সহানুভূতি বজায় রাখা। দুঃখ পীড়িত অভাবি শীতার্ত মানুষের প্রতি সরকার, সমাজের সামর্থ্যবান ও বিত্তশালীদের সাহায্য ও সহানুভূতির হাত প্রসারিত করলে শীতার্ত মানুষের কষ্ট অনেকখানি লাঘব হবে।
তিনি বলেন, নিঃস্বার্থভাবে বিপদগ্রস্ত মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসা মহৎ ও পুণ্যময় কাজ। তাই মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে অভাবী মানুষের শীতবস্ত্রের অভাব মোচনে সকল শ্রেণি পেশার লোকদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। ছাত্রশিবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই একদিকে যেমন সামর্থ্য অনুযায়ী শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আসছে তেমনি শ্রেণির মানুষকে পাশে দাঁড়ানোর জন্য উদ্বুদ্ধ করে আসছে। ইতোমধ্যেই প্রতিটি নেতাকর্মীকে শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। আমরা আশা করব, ছাত্রশিবিরের পাশপাশি সমাজের সামর্থ্যবান সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ শীতার্তদের পাশে দাঁড়াবে। আমাদের এমন কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।
সূত্র: প্রেস বিজ্ঞপ্তি