জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, ‘যারা ক্ষমতায় থাকে, তারা আদালতের কাঁধে বন্দুক রেখে বিরোধীদের সাজা দিতে চায়। কিন্তু কিছু সৎ বিচারপতি রয়েছেন, যাঁরা রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে ন্যায়বিচার করেন।’
আজ বৃহস্পতিবার পঞ্চম দিনের মতো মামলাটির যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় খন্দকার মাহবুব বিচারকদের উদ্দেশে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘এ মামলা ইতিহাসের পাতায় লিপিবদ্ধ হবে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হলে যুগে যুগে মানুষ বিচারককে মনে রাখবে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা না হলে ইতিহাসের পাতায় মানুষ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করবে। জনগণই এর বিচার করবে।’
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ আদালতে পৌঁছান খালেদা জিয়া। এর পর বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামানের সামনে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী।
আইনজীবী আরো বলেন, ‘সরাসরি কোনো নথিপত্র ছাড়াই খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। স্বাক্ষরবিহীন ঘষামাজা ছায়ানথি দিয়ে কাউকে সাজা দেওয়া যায় না। যদি বিন্দুমাত্র সন্দেহ থাকে, তাহলে আসামিপক্ষ এর সুবিধা পেয়ে থাকে। যদি ছায়ানথি দিয়ে সাজা দেওয়া হয়, তাহলে সমস্ত দণ্ডবিধি, আইন পরিবর্তন হয়ে যাবে।’
যুক্তিতর্কে খন্দকার মাহবুব হোসেন আরো বলেন, ‘খালেদা জিয়া তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী এবং প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী। সুনির্দিষ্ট কোনো নথিপত্র ছাড়া হালকাভাবে মামলা দায়ের করে তাঁর সুনাম ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে।’ এই মামলা রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও কালিমাযুক্ত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিচারকের উদ্দেশে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আল্লাহতায়ালা বিচারকদের ক্ষমতা দিয়েছেন আল্লাহকে হাজির রেখে বিচার করবেন, এটাই প্রত্যাশা করি।’ তিনি জানান, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান, তাঁর স্ত্রী ও ছেলের নামে এই ট্রাস্ট হয়েছিল। সেই ট্রাস্টেই টাকা জমা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়া সেই টাকা উত্তোলন এবং ব্যয় করেননি; বরং ট্রাস্টের চার কোটি টাকা এখন লাভে পরিণত হয়েছে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় অপর একটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া বাকি আসামিরা হলেন মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
সূত্র: এনটিভি অনলাইন