অ্যানালাইসিস বিডি পাঠক মতামত
নিজের ব্যার্থতা ঢাকতেই প্রশ্নফাঁসের দায় শিক্ষকদের উপর চাপিয়ে মিথ্যাচার করছেন শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ। মিথ্যাটাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে একের পর এক শিক্ষার মৌলিক ধাপগুলি ধ্বংস করছেন। জাতীকে মেধাশূণ্য করার তৃতীয় পক্ষের পরিকল্পিত এই প্রক্রিয়ায় ক্রিড়নক হিসেবে কাজ করছে সরকার।
প্রশ্নফাঁস ও এ ব্যপারে শিক্ষকদের দোষারোপ করে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে পাঠকদের মতামত জানতে চাইলে অ্যানালাইসিস বিডির পাঠকরা এমন মতই প্রকাশ করেছেন।
প্রশ্নফাঁসের সাথে ছাত্রলীগ ও সরকারির দলের লোকদের জড়িত থাকার খবর পত্রিকায় হরহামেশাই দেখা গেলেও শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ সম্প্রতি এক বক্তব্যে বলেছেন ‘শিক্ষকেরাই আসল প্রশ্নফাঁসকারী’। অ্যানালাইসিস বিডির ফেসবুক পেজে এসম্পর্কে মতামত জানতে চাইলে পাঠকরা নানা ধরণের মন্তব্য করেন।
আবুল হোসেন নামে একজন পাঠক মন্তব্য করেন, ‘শিক্ষকেরা কোন স্বার্থে প্রশ্নপত্র ফাঁস করতে যাবেন! আসলে নিজেদের ব্যার্থতা লুকানোর জন্যই মিথ্যাচার করছেন মন্ত্রী নাহিদ। আমরা সকলেই দেখছি ওনারা মিথ্যাটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চাইছেন এবং একের পর এক শিক্ষার মৌলিক ধাপগুলি ধ্বংস করছেন। আজ ১৬ ডিসেম্বরকে ছাত্রছাত্রীরা বলছে কেউ স্বাধীনতা দিবস, কেউ বলছে শেখ মুজিব হত্যা দিবস, কেউ বলছে এই দিনে কি যেন ঘটে ছিলো তা বলতে পারিনা। এমন যদি হয় কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রছাত্রীদের বয়ান, তবে অনুমান করতে কারও কষ্ট হবার কথা নয় যে আমাদের শিক্ষা ব্যাবস্থা নোংরামি আর কুশিক্ষার অন্ধকারে নিমজ্জিত। কিছু অসাধু কুশিলবরা এসবের জন্য দায়ী, যারা মন্ত্রী এবং দলীয় ছত্রছায়ার অন্তরালে থেকে জাতির মেরুদণ্ড নষ্ট করে ফেলছে।’
মো. মাসুদুর রহমান বলেছেন, ‘সরিষা দিয়ে ভূত তাড়াব সরিষার মধ্যেই ভূত। মাননীয় মন্ত্রী মশাই শিক্ষকদের দোষ না দিয়ে আপনাদের দলীয় সোনার ছেলেদের সামলান। আর আপনাদের চরিত্রগুলো ঠিক করুন। সব সমস্যাই কমে আসবে।’
কিছু শিক্ষকও প্রশ্নফাঁসে জড়িত থাকতে পারেন এমন মন্তব্য করে মনির খান বলেছেন, ‘তবে আমার মতে প্রশ্নপত্র ফাঁসে কিছু কিছু শিক্ষক যেমন জড়িত থাকতে পারে, ঠিক তেমনি ছাত্রলীগের কিছু কিছু লোকও জড়িত থাকতে পারে, আবার যেসব প্রেসে ছাপা হয় অনেক সময় ঐ সমস্ত প্রেসের কিছু কর্মীও জড়িত থাকতে পারে, আবার অনেক সময় অনেক নামীদামী নামধারী ভালো মানুষও জড়িত থাকতে পারে, যা আল্লাহই ভালো জানেন।’
শামীমা আক্তার মন্তব্য করেছেন, ‘যদি শিক্ষরাই জড়িত থেকে থাকে, তাহলে তারা যেই হোক না কেনো তাদেরকে আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। কারণ, শিক্ষাই একটি জাতির মেরুদণ্ড।’
এদিকে প্রশ্নফাঁসকে তৃতীয় পক্ষ কর্তৃক জাতিকে মেধাশূণ্যের প্রয়াশ আখ্যা দিয়ে শাহীন কাদির বলেছেন, ‘জাতিকে মেধাশূন্য করার তৃতীয় পক্ষের পরিকল্পনার ক্রিড়নক হিসেবে কাজ করছে সরকার।’
মইনুল মঈন বলেছেন, ‘শিক্ষামন্ত্রী নাহিদের কথা ২০% ঠিক, কিছু আছেন মাষ্টার নামের কুলাংগার, আর ৮০% হলো সরকারি দলের চেলা-চামচা, এরাই জাতির সর্বনাশ করছে।’
শিক্ষাঙ্গণে রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে আশরাফ আলী বলেছেন, ‘শিক্ষাঙ্গণ থেকে রাজনীতি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এই ধারা চলতেই থাকবে। শিক্ষক সমাজ রাজনৈতিক ধারায় বিভক্ত । ছাত্র সমাজ রাজনৈতিক ধারায় বিভক্ত। আজকে ক্ষমতাশীন শিক্ষক ও ছাত্ররাই এই অপকর্মের সাথে জড়িত। আগামীতেও এই অপকর্মের সাথে রাজনৈতিক ধারার শিক্ষক ছাত্ররাই জড়িয়ে থাকবেনা এর কি নিশ্চয়তা আছে? অতএব বর্তমান ও আগামী নিয়ে ভাবতে হলে এখনই শিক্ষাঙ্গণে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হোক। তার সাথে সারা দেশবাসীকে এর সমর্থনে এগিয়ে আসতে হবে দেশের আগামী ভবিষ্যতকে বাঁচাতে।’
শিক্ষামন্ত্রীকে ব্যর্থ দাবি করে আলী হোসেন বলেছেন, ‘আসলে সব মিলিয়ে ব্যর্থতা মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের। প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত শিক্ষক, জড়িত ছাত্রলীগ, জড়িত শিক্ষা সচিব, জড়িত প্রেস যেখানে ছাপানো হয়, জড়িত অপিসের পিয়ন।’
মাহাদী হাসান বলেছেন, ‘শিক্ষামন্ত্রী ছাত্রলীগকে যমের মত ভয় পায় এ কারনে ছাত্রলীগের নাম বলতে পারেন নি। কিন্তু প্রশ্ন ফাঁসের সাথে ছাত্রলীগে জড়িত এটা ১০০% সত্য।’
অপরাধী যেই হোক তার উপযুক্ত শাস্তি চেয়েছেন পাঠক গিয়াস উদ্দিন শিকদার। অন্যদিকে শিক্ষামন্ত্রী পদত্যাগ করলেই সব লেঠা চুকে যাবে বলে মনে করেন ইসমাইল হোসেন। প্রশ্নফাঁস জাতীকে মেধাশূন্য করার এক অশুভ প্রক্রিয়া বলে মন্তব্য করেছেন মো. মাহফুজ। এছাড়া অনেক পাঠকই এরজন্য ছাত্রলীগ যুবলীগসহ সরাসরি সরকারকেই দায়ী করেছেন।
Discussion about this post