প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিক্ষার্থীদের কল্যাণেই পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা চালু করা হয়েছে। এই পরীক্ষা নিয়ে আদালতের ভূমিকার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘জরুরি মামলা শুনানির সময় নেই। এই সমস্ত খুচরা জিনিস নিয়ে সময় কাটানো কেন?’
গতকাল মঙ্গলবার সংসদ অধিবেশনে অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ আদালতে রিটের পরিপ্রেক্ষিতে রুলের জবাব না দিয়ে পিইসি পরীক্ষা নেওয়ার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁর বক্তব্যের পর শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ পিইসি পরীক্ষা নেওয়ার কারণ ও যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করে বক্তব্য দেন। শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের পরই এ বিষয়ে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ফিরোজ রশীদের উদ্দেশে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, ‘পরীক্ষাটা নিয়ে মাননীয় সংসদ সদস্যের আপত্তি কিসে তা বুঝতে পারছি না। জানি না উনি কীভাবে পড়াশোনা করে উঠে আসছেন। পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষাটা আমি চালু করেছি। সংসদ সদস্য প্রশ্ন তুললেন—কেন পরীক্ষা হবে? এটা শুনে আমি খুব অবাক হয়ে গেলাম। এই পরীক্ষার জন্য ছেলেমেয়েরা কী পড়াশোনায় মনোযোগী হচ্ছে না? এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হার বাড়ছে না?’
এ সময় আদালত ও রিটের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, লাখ লাখ মামলা পড়ে আছে কোর্টে। তার কোনো খবর নেই। কিন্তু বাচ্চারা পরীক্ষা দেবে কি দেবে না, তা নিয়ে একটা মামলা-রিট করে বসে থাকে। আর এটা নিয়েই কোর্ট সময় কাটায়। অথচ অনেক জরুরি মামলা, সন্ত্রাসী-জেএমবির গ্রেপ্তার মামলা এবং অনেকের ফাঁসির শুনানি বাকি। সেগুলোর শুনানির সময় নেই। প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন, ‘এই সমস্ত খুচরা জিনিস নিয়ে সময় কাটানো কেন?’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, হয়তো দেখা যাবে কেন বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে তা নিয়ে কেউ একটা রিট করে বসে থাকবে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে কিছু লোক যেন অনবরত রিট করে, আর এটার ওপর আলোচনা হয়। বাচ্চাদের পড়াশোনা নিয়ে রিটে কোর্ট কী রায় দেবে জানি না। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ করার রায় যদি দেয় তাহলে এর চেয়ে দুঃখের আর কিছু থাকবে না।
প্রধানমন্ত্রী এই পরীক্ষা চালুর প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, আগে বৃত্তি পরীক্ষার জন্য পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির বাছাই করা শিক্ষার্থীদের আলাদা যত্ন নেওয়া হতো। এতে অন্য ছেলেমেয়েদের দিকে তেমন একটা নজর দেওয়া হতো না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষাভীতি কাটিয়ে তোলে। এসএসসি পরীক্ষা দিতে গিয়ে অনেক সময় ভয়ভীতি কাজ করে। আত্মবিশ্বাসের অভাব হয়। এই পরীক্ষা চালুর ফলে এসএসসি পরীক্ষার সময় ওই ভয়ভীতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে থাকে না। সার্টিফিকেট পেলে শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস বাড়ে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সূত্র: প্রথম আলো
Discussion about this post