ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আওয়ামী লীগ সমর্থিত নীল দলের সভা চলাকালে প্রতিপক্ষকে ‘লাথি মেরে মাটিতে ফেলে নাক ফাটিয়ে দেওয়া’ শিক্ষকদের শাস্তি দাবি করেছেন সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকপন্থীরা।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী, অ্যাপলাইড ক্যামেস্ট্রি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. শাহ মোহাম্মদ মাসুম ও ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শীতেশ চন্দ্র বাছারের শাস্তি দাবি করে গতকাল শুক্রবার রাতে উপাচার্য ড. মো. আক্তারুজ্জামানকে আলটিমেটাম দিয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) সভা চলাকালে মারামারির ঘটনায় আহত হন নীল দলের সদস্য অধ্যাপক ড. আ ক ম জামাল উদ্দিন। গণমাধ্যমকে সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, আমি বিগত প্রশাসন ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ও বর্তমান প্রশাসনের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরছিলাম। আমার বক্তব্যের পরে বর্তমান প্রক্টর গোলাম রব্বানী বক্তব্য দিচ্ছিলেন। তিনি বিগত প্রশাসন ও আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিচ্ছিলেন।
আমি এর প্রতিবাদ করি। পরে তিনি তেড়ে আমার দিকে আসতে থাকেন। একপর্যায়ে মাসুম ও শীতেশ চন্দ্র বাছার এসে আমাকে লাথি মারেন, চেয়ার তুলে মারেন। এতে আমার নাক ফেটে রক্ত বের হয়। পরে শিক্ষকরা এসে আমাকে উদ্ধার করেন’, যোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষক।
যদিও প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী দাবি করেছেন, আমি বক্তব্য দেওয়ার সময় জামাল উদ্দিন উত্তেজিত হয়ে আমার গায়ে আগেই হাত তুলেন। পরে পরিস্থিতি অনেক ঘোলাটে হয়ে যায়। কিন্তু আমি সবাইকে শান্ত থাকার জন্য আহ্বান করছিলাম।
সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের দুই বারে ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হয় গত ২৪ আগস্ট। গত ৪ সেপ্টেম্বর ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক ড. মো. আক্তারুজ্জামানকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। এর পরই ১৯ অক্টোবর নিজ বিভাগে সহকর্মী অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানীকে প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ দেন উপাচার্য।
শিক্ষকের ওপর হামলার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাবির শিক্ষক ক্লাবে সভায় বসেন নীল দলের একাংশের শিক্ষকরা। তাঁরা সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের অনুসারী বলে পরিচিত। সেই সভা শেষ হয় রাত ১১টায়। তার পরই শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধিদল উপাচার্যের বাসভবনে গিয়ে এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও তিন শিক্ষকের শাস্তি দাবি করেন।
এ বিষয়ে নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুল আজিজ বলেন, আমাদের দাবির বিষয়ে উপাচার্যকে বলা হয়েছে। আশা করি, তিনি এর সুষ্ঠু বিচার করবেন। তা না করলে আগামী রোববার আমরা মানববন্ধন করব।
ভুক্তভোগী শিক্ষক জামাল উদ্দিনও একই কথা বলেন।
সার্বিক বিষয়ে জানতে শুক্রবার মধ্যরাতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানকে একাধিকবার মোবাইল ফোনে কল দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
সূত্র: শীর্ষনিউজ
Discussion about this post