সিঙ্গাপুরে প্রথমবারের মতো একজন মুসলিম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন। তিনি মালয় সম্প্রদায়ের ৬২ বছর বয়স্ক হালিমা ইয়াকুব। যিনি দেশটির পার্লামেন্টের স্পিকার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। সোমবার দেশটির নির্বাচন বিভাগ Elections Department (ELD) তাকে প্রেসিডেন্ট পদে একমাত্র যোগ্য ব্যক্তি হিসেবে ঘোষণা করে।
এরফলে সিঙ্গাপুরে গত ৪৭ বছরের বেশি সময়ের পর তিনিই মালয় সম্প্রদায় থেকে প্রথমবারের মতো শীর্ষ পদে অধিষ্ঠিত হতে যাচ্ছেন। ইএলডি জানায়, রাষ্ট্রপতি পদে যেসব প্রার্থী অংশ নিয়েছিলেন তাদের মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য হালিমা ইয়াকুবই একমাত্র মনোনীত হয়েছেন। অবশ্য বাতিল হওয়া অন্যান্য প্রার্থীদের নাম জানায়নি নির্বাচন বিভাগ।
আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। তবে নির্বাচনে আর কোনো যোগ্য প্রার্থী না থাকায় হালিমা ইয়াকুবের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা নেয়াটা এখন শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র।
নির্বাচনী প্রতিযোগিতায় একমাত্র হালিমাকেই যোগ্য বলে মনে করেছে প্রেসিডেন্সিয়াল ইলেকশনস কমিটি। তিনি তিন বছরের বেশি সময় দেশটির পার্লামেন্টের স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
নির্বাচিত হলে হালিমা হবেন সিঙ্গাপুরের অষ্টম এবং প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। যিনি বাণিজ্য সমৃদ্ধ দেশটির সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হবেন।
সাবেক প্রেসিডেন্ট টনি তান’এর ৬ বছরের মেয়াদ গত ৩১ আগস্ট শেষ হয়ে যায়। এরপর দেশটির রাষ্ট্রপতি কাউন্সিলের উপদেষ্টা জে ওয়াই পিল্লাই গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন।
কুইন স্ট্রিটে ১৯৫৪ সালের ২৩ আগস্ট হালিমা’র জন্ম। পরিবারের ৫ সন্তানের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ হালিমার বাবা ১৯৬২ সালে যখন মারা যান, তখন তার বয়স মাত্র ৮ বছর। নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে শৈশব কৈশোর অতিবাহিত করা হালিমা ১৯৭০ সালে তানজং ক্যানটং গার্লস স্কুলে এবং পরে সিঙ্গাপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি লাভ করেন।
এরপর ১৯৭৮ সালে ন্যাশনাল ট্রেডস ইউনিয়ন কংগ্রেসে (এনটিইউসি) একজন আইন কর্মকর্তা হিসেবে তিনি যোগদান করেন। প্রায় ৩০ বছরের বেশি সময় দায়িত্ব পালনের পর তাকে ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।
তার বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু ও ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আলহাবসিকে ১৯৮০ সালে তিনি বিয়ে করেন। তাদের সংসারে ৫ ছেলেমেয়ে রয়েছে। ২০০১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী গোহ চোক টংয়ের অনুরোধে হালিমা রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। এরপর ৪টি সাধারণ নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করেন।
২০১১ সালে তিনি সামাজিক উন্নয়ন, যুব ও খেলাধুলা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হন। এর দু’বছর বাদে তিনি দেশটির সংসদে প্রথম নারী স্পিকার নিযুক্ত হন।
সূত্র: পরিবর্তন ডটকম
Discussion about this post