রবিবার, নভেম্বর ১৬, ২০২৫
Analysis BD
No Result
View All Result
No Result
View All Result
Analysis BD
No Result
View All Result
Home Home Post

বিশ্বজিৎ হত্যায় অংশ নিয়েও ফাঁসি থেকে রেহাই পেলেন যারা

আগস্ট ৭, ২০১৭
in Home Post, বিশেষ অ্যানালাইসিস
Share on FacebookShare on Twitter

অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক

পুরান ঢাকার চাঞ্চল্যকর বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের মোট ২১ নেতাকর্মীকে দোষী সাব্যস্ত করে ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর আট আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও বাকিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল বিচারিক আদালত।

রোববার হাই কোর্টের রায়ে দুইজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে চারজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। দুই আদালত মিলিয়ে যাবজ্জীবন সাজা বহাল রয়েছে ১৫ জনের।  মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া ১৭ আসামির মধ্যে ১৩ জনকে পুলিশ পাঁচ বছরেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

পুুলিশের তদন্তে অবহেলা ও ডাক্তারের ভুল ময়নাতদন্তের মাধ্যমে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদেরকে এই হত্যাকাণ্ড থেকে রেহাই দেয়ার চেষ্টা আদালতে প্রমাণিত হয়েছে। এই প্রচেষ্টা থেকে এটাও স্পষ্ট যে, সরকার দলের অঙ্গসংগঠন হওয়ায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারেও পুলিশের ইচ্ছেকৃত অবহেলা ছিলো ও তাদের কয়েকজনকে বিদেশ পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করা হয়েছে।

প্রকাশ্য দিবালোকে এবং অসংখ্য টিভি ক্যামেরার সামনে নৃশংসভাবে বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী এই হত্যাকাণ্ডে অংশ নিলেও আদালত মাত্র দুইজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখায় বিস্মিত হয়েছে দেশবাসী। ক্ষোভ প্রকাশ ও বিচার না পাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্বজিতের পরিবারও। জানা যায়, বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার রায় প্রদানকারী দুইজন বিচারকের মধ্যে একজন বিচারপতি রুহুল কুদ্দুস নিজেই একটি খুনের মামলার প্রধান আসামি।  বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম দিকে তাকে রাজনৈতিক বিবেচনায় ঐ খুনের মামলা থেকে অন্যায়ভাবে অব্যাহতি দেয়া হয় এবং ব্যপক বিতর্ক ও বিরোধীতার মুখেও তাকে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। এর প্রতিদান হিসেবেই তিনি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ফাঁসি থেকে রেহাই দিয়েছেন বলে মনে করছেন অনেকে।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত দুইজনের মধ্যে একজন সুনামগঞ্জের মনতলার কেশবপুরে সুখেন চন্দ্র তালুকদারের ছেলে রাজন তালুকদার। তার বন্ধু ও ঘনিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজন ভারতের কলকাতায় পালিয়ে গিয়ে সেখানে একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছেন। মৃত্যুদণ্ডের আরেক আসামি মো. রফিকুল ইসলাম ওরফে শাকিল পটুয়াখালীর কালিকাপুরের ফায়ার সার্ভিস রোডের আনসার আলীর ছেলে। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তিনি কারাগারে আটক রয়েছেন।

হামলায় নেতৃত্বদানকারী মাহফুজুর রহমান নাহিদকে বিচারিক আদালত মৃত্যুদণ্ড দিলেও হাইকোর্ট তাকে মৃত্যুদণ্ড থেকে রেহাই দিয়ে যাবজ্জীবন দিয়েছে।  ভোলার দৌলতখানের আবদুর রহমানের ছেলে নাহিদ জগন্নাথের বাংলা বিভাগের ছাত্র। সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়ার পরও মৃত্যুদণ্ড থেকে রেহাই পাওয়া বাকী তিনজন হলেন- রংপুরের পীরগাছা উপজেলার সুল্লিপাড়ার মীর মো. নুরুল ইসলামের ছেলে পলাতক আসামি মীর মো. নূরে আলম ওরফে লিমন, যশোরের শার্শা উপজেলার পাঁচ কাইবা পূর্বপাড়া এলাকার আকরাম আলীর ছেলে এমদাদুল হক এমদাদ, এবং খুলনার পাইকগাছা উপজেলার জিএম লুৎফর রহমানের ছেলে জি এম রাশেদুজ্জামান শাওন।

২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের অবরোধের মধ্যে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কের কাছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের একটি মিছিল থেকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে বিশ্বজিৎকে হত্যা করা হয়।

এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে যারা সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন তারা হলেন- রাজন, শাকিল, ইউনুস, টিপু, কিবরিয়া, মোস্তফা, তমাল, আলাউদ্দিন, ইমরান, তাহসিন, নাহিদ, শাওন, লিমন, আল আমিন, সাইফুল, রফিকুল, এমদাদ, আজিজ, রফিকুল, রাশেদুজ্জামান।  এরা প্রত্যেকে জগন্নাত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।

এদের মধ্যে মাহফুজুর রহমান নাহিদ তার জবানবন্দিতে বলেছেন, বিস্ফোরণের পর একটি ছেলে দৌড়ে ভিক্টোরিয়া পার্কের উত্তর পাশের মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় ওঠেন। এ সময় মিছিল থেকে ‘ধর ধর’ চিৎকার দেন রাজন, শাকিল, ইউনুস, টিপু, কিবরিয়া, মোস্তফা, তমাল, আলাউদ্দিন, ইমরান ও তাহসিন। তাঁরা চাপাতি, রড ও ছুরি নিয়ে পেছন থেকে বিশ্বজিৎকে ধাওয়া করেন। দোতলায় ওঠার পর রাজন ক্রিচ (ছুরি) দিয়ে আঘাত করেন। এ সময় বিশ্বজিৎ বলেন, ‘আমাকে মাইরেন না, আমি অপরাধী না, আমার নাম বিশ্বজিৎ দাস।’ বিশ্বজিৎ বাঁচার জন্য দোতলায় ইনসেনটিভ ডেন্টাল কেয়ারে ঢোকার চেষ্টা করেন। এ সময় রফিকুল চাপাতি দিয়ে বিশ্বজিতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন।

রফিকুল তার জবানবন্দিতে বলেন, তিনি চাপাতি দিয়ে বিশ্বজিৎকে কোপ দেন। একপর্যায়ে বিশ্বজিৎ দোতলা থেকে সিঁড়ি বেয়ে নামার চেষ্টা করেন। তখন তিনি, কিবরিয়া ও আলাউদ্দিন লোহার রড ও লাঠি দিয়ে পেটান। বিশ্বজিৎ দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে নাহিদ, শাওন, লিমন, আল আমিন, সাইফুল, রফিকুল, এমদাদ, আজিজসহ আরও অনেকে মিলে রড ও লাঠি দিয়ে পেটান। বিশ্বজিৎ বাঁচার জন্য চিৎকার করলেও কেউ এগিয়ে আসেনি।

রাশেদুজ্জামান আদালতকে বলেন, ক্লিনিকের দোতলায় বিশ্বজিৎকে আঘাত করার সময় তিনি নিচে ছিলেন। তখন দেখতে পান রফিকুল চাপাতি দিয়ে বিশ্বজিতের শরীরে এলোপাতাড়ি কোপাচ্ছেন। এ সময় ইউনুস, টিপু, কিবরিয়া ও মোস্তফা রড দিয়ে বিশ্বজিৎকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। এ সময় তিনি (রাশেদুজ্জামান), আজিজ, লিমন, রফিক ও আল আমিন লাঠি ও রড নিয়ে নিচে দাঁড়িয়ে ছিলেন। বিশ্বজিৎ রক্তাক্ত অবস্থায় নিচে নামার সময় তিনি (রাশেদুজ্জামান) তাঁর হাত, পিঠসহ বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন।

রাশেদুজ্জামান তার জবানবন্দিতে বলেন, তাঁর পাশে থাকা আজিজ, সাইফুল ও এমদাদ লোহার রড দিয়ে বিশ্বজিৎকে মারধর করেন। তখন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দাঁড়িয়ে ছিলেন।

এসব জবানবন্দি থেকে সুস্পষ্টভাবেই দেখা যায়, দোষী সাব্যস্ত ২১ জনের প্রত্যেকে হত্যাকাণ্ডের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলো। কিন্তু বিচারিক আদালত মাত্র ৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিলেও হাইকোর্টের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্য থেকে ৬ জনকে রেহাই দিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় এবং অন্যদের মধ্য থেকে আরো দুইজনকে খালাস প্রদান করে।

যাবজ্জীবন পাওয়াদের মধ্যে ৪ জন বিদেশ আছে বলে জানা গেছে।  বাকিরা দেশেই কোথাও না কোথাও অবস্থান করলেও পুলিশ তাদেরকে খুঁজে পাচ্ছে না।  ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী হওয়ায় পুলিশ ইচ্ছে করেই তাদেরকে ধরছেনা বলেও মনে করছেন অনেকে।  এমন অবস্থায় বিশ্বজিতের বাবাও নিজের সন্তানের হত্যার বিচার না পাওয়া নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

 

সম্পর্কিত সংবাদ

Home Post

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫
Home Post

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫
Home Post

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

Discussion about this post

জনপ্রিয় সংবাদ

    সাম্প্রতিক সংবাদ

    রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

    সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫

    সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

    আগস্ট ১০, ২০২৫

    জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

    মে ৩১, ২০২৫

    মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

    মে ২১, ২০২৫

    ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

    মে ২১, ২০২৫

    © Analysis BD

    No Result
    View All Result

    © Analysis BD