ভারতের সশস্ত্র বাহিনী কেবল নিজস্ব ভূখণ্ডের অখণ্ডতা ও ভারতের সার্বভৌমত্বই রক্ষা করবে না, নিকট প্রতিবেশী ও এর বাইরে কৌশলগত এলাকাগুলোতেও নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়া, সামরিক বাহিনী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট হওয়ার পাশাপাশি কূটনৈতিক মিশনগুলোতেও উপস্থিতি বাড়াবে।
গত ১৮ এপ্রিল ভারত সরকারের এক নথিতে প্রকাশিত দেশটির ‘প্রতিরক্ষা ডকট্রিনে’ এসব কথা বলা হয়েছে। ডকট্রিনে আরো বলা হয়, যুদ্ধে ভারত প্রথম পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবে না এবং দেশটির পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার কঠোরভাবে বেসামরিক নিয়ন্ত্রণে থাকবে। অর্থাৎ, পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার করা বা না করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত থাকবে প্রধানমন্ত্রীর হাতে।
নথিতে বলা হয়েছে, ‘পরমাণু সি২ (কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণ)-এর জন্য সুনির্দিষ্ট বিষয়গুলো হলো; বিশ্বাসযোগ্যভাবে সুরক্ষা করা; প্রথম ব্যবহার না করা; বেসামরিক কর্তৃত্ব; প্রতিশোধ গ্রহণের বিকল্প ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন স্থানে অস্ত্র কাঠামো গড়ে তোলা।’
‘জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বোর্ডের (এনএসএবি) প্রণীত ভারতের পরমাণু ডকট্রিনের বৃহত্তর কাঠামো পরমাণু যুদ্ধে আমাদের বিশ্বাসযোগ্যতা নিশ্চিত করার সি২ কাঠামো জোরদার করেছে। কাঠামোতে জোর দেওয়া হয়েছে, পরমাণু অস্ত্রগুলো সর্বোচ্চ রাজনৈতিক পর্যায়ে নিয়ন্ত্রিত ও ব্যবহার করা হবে।’
“যুদ্ধে ভারত প্রথম পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবে না এবং দেশটির পরমাণু অস্ত্রভান্ডার থাকবে কঠোর বেসামরিক নিয়ন্ত্রণে অর্থাৎ পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার কিংবা না ব্যবহারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত থাকবে প্রধানমন্ত্রীর হাতে”
‘প্রয়োজনীয় নমনীয়তা ও সাড়ার আলোকে কার্যকর ও টেকসই সি২ থাকবে। সার্বিক সি২ কাঠামো বেসামরিক ও সামরিক নেতাদের মধ্যে কার্যকর মতবিনিময়ের মাধ্যমে সর্বোচ্চ সংযত অবস্থা নিশ্চিত করা হবে।
‘সব ক্ষেত্রেই বিকল্প চেইন অব কমান্ড থাকবে।’
প্রচলিত যুদ্ধ ডকট্রিন
নতুন প্রতিরক্ষা ডকট্রিনের মূল অংশটি প্রচলিত যুদ্ধে প্রয়োগের জন্য দুটি মৌলিক ধারণা প্রদান করা হয়েছে :
প্রথমত, নতুন বিশ্বব্যবস্থায় বৃহত্তর ভূমিকা পালনে আকাক্সক্ষী জাতি হিসেবে বৈশ্বিক ঘটনাবলী থেকে আলাদা থাকতে পারে না ভারত। তাকে তার ভৌগোলিক অবস্থান ও বহুমুখী জাতীয় শক্তির ব্যবহার করে বিশ্বকে প্রভাবিত করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
দ্বিতীয়ত, ভারতের আকার এবং ‘ভারত মহাসাগরের মাথা ও হৃদয়ে’ এর কৌশলগত অবস্থান ভারতকে আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিপুল সুবিধা দিয়েছে।
অন্য কথায় বলা যায়, ভারতের সশস্ত্র বাহিনী কেবল তার ভূখন্ডগত অখন্ডতা এবং ভারতের সার্বভৌমত্বই রক্ষা করবে না, নিকট প্রতিবেশী এবং এর বাইরের কৌশলগত সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতেও নিরাপত্তাগত দায়িত্ব পালন করবে।
সহযোগিতার এই আহ্বান এবং লক্ষ্যের আন্তঃকার্যকম, পরিষেবা, পদ্ধতি, কমান্ড কাঠামো এবং লজিস্টিক সুবিধা কেবল ভারতের তিন বাহিনীর জন্যই নয়, বরং ভারত এবং অন্যান্য দেশের সামরিক বাহিনীগুলোর জন্যও।
“ভারতের সশস্ত্র বাহিনী কেবল তার ভূখন্ডগত অখন্ডতা এবং ভারতের সার্বভৌমত্বই রক্ষা করবে না, নিকট প্রতিবেশী এবং এর বাইরের কৌশলগত সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতেও নিরাপত্তাগত দায়িত্ব পালন করবে। ……. ফলে ভারতের সামরিক বাহিনীকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট হতে হবে এবং ভারতের কূটনৈতিক মিশনগুলোতে সামরিক বাহিনীর উপস্থিতি অবশ্যই বাড়বে।”
ফলে ভারতের সামরিক বাহিনীকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট হতে হবে এবং ভারতের কূটনৈতিক মিশনগুলোতে সামরিক বাহিনীর উপস্থিতি অবশ্যই বাড়বে। নথিতে এমনটাই বলা হয়েছে।
বহুমাত্রিক হুমকি
ভূখন্ডের জন্য সঙ্ঘাত ও যুদ্ধ বিশ্বজুড়ে কমে এলেও ভারতীয় উপমহাদেশে এ ধরনের সঙ্ঘাত অস্তিত্বশীল এবং সেটা রয়েছে বেশ তাৎপর্যপূর্ণভাবেই। পাকিস্তান ও চীনের সাথে ভূখন্ডগত বিরোধ রয়েছে এবং তা নিয়ে যুদ্ধও হয়েছে। ফলে ভারতের ভূখন্ডগত অখন্ডতা সুরক্ষার বিপুল প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
ভারতের উত্তর, পশ্চিম ও পূর্ব সীমান্ত এবং কাশ্মিরের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) এবং প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখাজুড়ে (এলএসি) কৌশলগত স্বার্থ সুরক্ষা করা প্রয়োজন।
ভারতের নিরাপত্তা পরিবেশও বেশ কিছু বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক ইস্যু ও চ্যালেঞ্জে প্রভাব ফেলেছে। এগুলো ‘ভূ-রাজনৈতিক ভারসাম্যের পুনঃব্যবস্থা’ প্রকাশ করে বলে নথিতে বলা হয়েছে। এ দিয়ে দৃশ্যত ভারত পরিবেষ্টিত হয়ে সার্বভৌমত্ব হারানোর শঙ্কা থেকে ভারতের দক্ষিণ এশিয়ান প্রতিবেশীদের চীনের কাছাকাছি হওয়ার দিকেই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
চীনের ব্যাপারে নথিতে পরোক্ষ উল্লেখ রয়েছে। এতে হুমকি হিসেবে ‘উদীয়মান শক্তিগুলোর ক্রমবর্ধমান দৃঢ়তার’ কথা বলা হয়েছে। বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতি আটলান্টিক মহাসাগর থেকে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরে পরিবর্তন হওয়ার প্রেক্ষাপটে ভারত মহাসাগর অঞ্চলে (আইওআর) ‘বহিঃশক্তির’ (পড়–ন) উপস্থিতি এবং ভূমিকা নিয়ে ভারত যে উদ্বিগ্ন সেকথাও বলা হয়েছে।
হুমকির মধ্যে আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতার উল্লেখ ছিল। এ দিয়ে দৃশ্যত নেপাল ও মালদ্বীপের উত্তপ্ত পরিস্থিতির কথা বলা হয়েছে। তারপর ‘চরমপন্থার বিস্তারের’ (পাকিস্তান ও বাংলাদেশ) বিপদের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
অর্থাৎ ভারতের সম্প্রসারিত ও নিকট প্রতিবেশীদের অংশবিশেষে অস্থিতিশীলতা ও উত্তপ্ততা পরিস্থিতির সুরাহার কথাও বলা হয়েছে।
আশু হুমকি
অবশ্য ভারতের আসন্ন হুমকিটি আসতে পারে পাকিস্তান ও চীনের সাথে তার বিতর্কিত স্থল সীমানা বিরোধকে কেন্দ্র করে। ফলে ভারতের কাছে প্রধান কৌশলগত চ্যালেঞ্জ হিসেবে ভূখন্ডগত অখন্ডতা রক্ষা বহাল রয়েছে।
প্রাকৃতিক সম্পদের জন্য তীব্র প্রতিযোগিতাও সঙ্ঘাতের আশঙ্কা সৃষ্টি করছে। এ দিয়ে দৃশ্যত পাকিস্তান ও বাংলাদেশের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। কারণ দেশ দুটির সাথে ভারতের পানিবণ্টন নিয়ে সমস্যা রয়েছে।
তাছাড়া সীমান্তের ওপারে রাষ্ট্রীয় এবং রাষ্ট্র-বহির্ভূত সন্ত্রাসী কার্যক্রমও হুমকি সৃষ্টি করছে। কাশ্মিরে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর কার্যক্রম পাকিস্তানের সাথে উত্তেজনা সৃষ্টি করছে। এ ধরনের গ্রুপের অস্তিত্ব ভারতেও রয়েছে। এ ধরনের সঙ্ঘাত হয়তো এই অঞ্চলের বাইরের রাষ্ট্র বা গ্রুপগুলোতেও এতে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানাতে পারে বলে নথিকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়েছে।
অপ্রচলিত নিরাপত্তা হুমকির চ্যালেঞ্জও মোকাবিলা করতে হবে ভারতকে। কাশ্মিরে পাকিস্তানের ছায়াযুদ্ধ এবং ‘জাতিগত সঙ্ঘাতের’ কথা এখানে বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ করা হয়নি।
অন্যান্য অপ্রচলিত হুমকির মধ্যে রয়েছে অবৈধ আর্থিক প্রবাহ; ছোট অস্ত্র হস্তান্তর; মাদক/মানব পাচার; জলবায়ু পরিবর্তন; পরিবেশগত বিপর্যয় এবং বাইরের লোকদের জাতীয় সম্পদ দখল।
বিদেশে ভারতীয়দের সুরক্ষা
বিদেশে অবস্থানরত ভারতীয় এবং তাদের সম্পত্তি রক্ষা নিয়ে উদ্বেগ এবং তা রক্ষায় ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর দায়দায়িত্বের কথাও বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে উত্তপ্ত স্থান হিসেবে মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার কথা বলা হয়েছে। এসব অঞ্চলে লাখ লাখ ভারতীয় বাস করে। পাকিস্তানের সাথে ভারতের সঙ্ঘাত ওইসব স্থানে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
অভ্যন্তরীণ হুমকি
ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী অভ্যন্তরীণ হুমকি নিয়েও উদ্বিগ্ন। কাশ্মিরে ‘ছায়াযুদ্ধ’ চলছে, কয়েকটি রাজ্যে রয়েছে বিদ্রোহ। এছাড়া আছে সঙ্ঘবদ্ধ অপরাধ। নথিতে এসব কথা বলা হয়েছে।
বাম ধারার চরমপন্থা এখনো গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিরাজ করছে। এটা ভারতের জাতীয় সম্পদ ধ্বংস করছে। এটা আক্রান্ত অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও প্রভাব ফেলছে।
দুর্বল আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি কিংবা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে লোকজনের অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করাটাও আরেকটি চ্যালেঞ্জের সৃষ্টি করছে।
ইসলামি মৌলবাদ
কাশ্মিরে পাকিস্তানের ‘ছায়াযুদ্ধ’ মৌলবাদী ইসলামি ও চরমপন্থী মতাদর্শের পূর্বমুখী বিস্তারের আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে। এর আলামত দেখা যাচ্ছে ভারতের তরুণদের মধ্যে মতাদর্শগত চরমপন্থায়।
নথিতে বলা হয়েছে, এটা প্রশমনের জন্য প্রয়োজন বুদ্ধিবৃত্তিক নেটওয়ার্ক জোরদারের মাধ্যমে বহুমুখী পন্থা অবলম্বন। উচ্চমাত্রার প্রযুক্তিগত সহজ সুযোগ হামলার শঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে, একে নানা মাত্রিকতা দিয়েছে।
সামাজিক মিডিয়া
কয়েকটি রাজ্যে ভারতীয় যুবকদের চরমপন্থার দিকে ঝোঁক সৃষ্টি হয়েছে সামাজিক মিডিয়ার প্লাটফর্মের মাধ্যমে। এটা হলো জাতীয় নিরাপত্তার সর্বশেষ চ্যালেঞ্জ।
ডিজিটাল পরিবেশের ব্যবস্থাপনা হওয়া উচিত ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা হিসাবের উচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়।
রাজনৈতিক-সামরিক সম্পর্ক
রাজনৈতিক-সামরিক সম্পর্কের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে ডকট্রিনে বলা হয়েছে, এই দুইয়ের মধ্যে ‘প্রতীকী’ সম্পর্ক এবং সামরিক বাহিনীর ওপর সংসদীয় নিয়ন্ত্রণ ভারতীয় সংবিধানে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
‘‘জোরালো ও দৃঢ় রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ এবং শক্তিশালী সেনাবাহিনীই জাতীয় স্বার্থ সর্বোত্তমভাবে রক্ষা করতে পারে। তবে জাতীয় নিরাপত্তা সমস্যা নিরসনের জন্য এমন এক প্রাতিষ্ঠানিক ও কাঠামোগত ব্যবস্থা থাকতে হবে যা দুই সত্তার মধ্যে অবাধে যোগাযোগের সুবিধা করে দেবে, যার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ও সময়োচিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সম্ভব হবে”
নথিতে বলা হয়েছে, ‘জোরালো ও দৃঢ় রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ এবং শক্তিশালী সেনাবাহিনীই জাতীয় স্বার্থ সর্বোত্তমভাবে রক্ষা করতে পারে। তবে জাতীয় নিরাপত্তা সমস্যা নিরসনের জন্য এমন এক প্রাতিষ্ঠানিক ও কাঠামোগত ব্যবস্থা থাকতে হবে যা দুই সত্তার মধ্যে অবাধে যোগাযোগের সুবিধা করে দেবে, যার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ও সময়োচিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সম্ভব হবে। এই সম্পর্ক সৃষ্টির কাজটি করতে পারে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
শক্তি প্রদর্শন ও প্রতিরোধ
ইতিহাসজুড়ে কৌশলবিদেরা শান্তিপূর্ণ পন্থায় যুদ্ধ প্রতিরোধ এবং বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টা করে গেছেন। এ কারণেই ‘নিরাময়ের চেয়ে প্রতিরোধই ভালো’ এবং ‘যুদ্ধ হলো শেষ ব্যবস্থা’ তত্ত্বের সৃষ্টি হয়েছে। এতে আসলে সঙ্ঘাতের মূল কারণ অনুসন্ধানের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।
এসব ছাড়াও শক্তি প্রদর্শন এবং পারস্পরিক আস্থা সৃষ্টির মাধ্যমেও আমরা যুদ্ধ প্রতিরোধ করতে পারি। যুদ্ধে নিয়োজিত হতে পারে এমন দেশগুলো সাধারণত একে অন্যের শক্তি বিবেচনা করে যুদ্ধ থেকে বিরত থাকে। ফলে যুদ্ধ করার শক্তি একটি ভালো প্রতিষেধক। শক্তি প্রদর্শনের নীতির লক্ষ্য হলো রাজনৈতিক লাভের তুলনায় সম্ভাব্য ক্ষতিটা পরিমাপ করার কৌশল।
নথিতে বলা হয়েছে, ‘বিশ্বাসযোগ্য সামর্থ্য বিকাশের ফলে সংশ্লিষ্ট জাতিকে কূটনৈতিক সুবিধা দেয়। এটা দেশগুলোর মধ্যে ইচ্ছার পরীক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।’
কঠোর কূটনীতিও শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে শান্তি বজায় রাখার একটি বিকল্প। কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং অন্যান্য সহায়ক শক্তির সমর্থনে সামরিক শক্তি প্রয়োগের হুমকি হয়তো যুদ্ধমান দেশকে শর্ত মেনে নিতে বাধ্য করে, পরিণামে যুদ্ধ প্রতিরোধ হতে পারে।
হাইব্রিড যুদ্ধ
বর্তমানের যুদ্ধ ‘হাইব্রিড’। কারণ এতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, মনস্তাত্ত্বিক ও মিডিয়া যুদ্ধ, সাইবার যুদ্ধ, অর্থনৈতিক যুদ্ধ ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত থাকে।
বর্তমানের ‘পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধ’ যুদ্ধ এবং রাজনীতি, যোদ্ধা এবং বেসামরিক লোকজনের মধ্যকার ব্যবধানটিকে অস্পষ্ট করে ফেলেছে। সোজা কথায় বলা যায়, এটা এমন এক যুদ্ধ যেখানে প্রধাান অংশগ্রহণকারী কোনো রাষ্ট্র নয়, বরং সহিংস অ-রাষ্ট্রীয় সত্তা বা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় থাকা অরাষ্ট্রীয় সত্তাগুলো।
প্রযুক্তি
নথিতে বলা হয়েছে, যুদ্ধের বিবর্তনে প্রযুক্তি একটি প্রধান চালিকা। বর্তমানের উপগ্রহ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থার সাথে নিখুঁতভাবে গোলাবারুদ নিক্ষেপ সঙ্ঘাতের অবয়বগত অনুষঙ্গ বদলে দিয়েছে। ভবিষ্যত যুদ্ধের বৈশিষ্ট্য হবে সম্ভবত দ্ব্যর্থবোধক, অনিশ্চিত, সংক্ষিপ্ত, দ্রুত, ভয়ঙ্কর, তীব্র, নিখুঁত, অ-রৈখিক, অনিয়ন্ত্রিত, অ-অনুমেয়, হাইব্রিড।
আধুনিক যুদ্ধের বৈশ্বিক ও বহুমাত্রিক প্রকৃতির কারণে ভারতের রাজনৈতিক লক্ষ্যগুলো অর্জনের জন্য প্রয়োজন অন্যান্য জাতি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সহযোগিতা।
নথিতে বলা হয়েছে, ‘এই পর্যায়ে সাফল্য লাভের জন্য দরকার দূরদর্শিতা, ধৈর্য, সহিষ্ণুতা, দৃঢ়তা এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে খাপ খাওয়ানোর সামর্থ্য।’
সূত্র: সাউথ এশিয়ান মনিটর
Discussion about this post