অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে অস্তিত্বহীন নামসর্বস্ব ৫৮টি দলকে সঙ্গে আজ সম্মিলিত জাতীয় জোটের ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক স্বৈরশাসক ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এ জোট গঠনের মধ্যদিয়ে এরশাদ ৮৮’র লোক দেখানো নির্বাচনে তার নিজের পাতানো কৌশলে নিজেই ফেঁসে গেলেন এবং এর মাধ্যমে অতীত অপকর্মের পরিণাম এখন ভোগ করছেন বলে মনে করছেন রাজনীতিক বিশ্লেষকরা।
জানা গেছে, বিচারপতি আব্দুর সাত্তারের মাথায় বন্দুকের নল ঠেকিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিল তৎকালীন সেনাপ্রধান এরশাদ। ৮৬ সালের এরশাদের পাতানো নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-জামায়াত সহ কয়েকটি দল অংশ নিয়েছিল। ৮৮ সালের নির্বাচন নিয়ে চরম বেকায়দায় পড়ে যায় এরশাদ। কারণ, এরশাদের পাতানো নির্বাচনে তখন আওয়ীামী লীগ, বিএনপি, জামায়াতসহ বড় দলগুলোর একটিও অংশ নেয়নি। লোক দেখানোর জন্যও তখন নির্বাচনে কয়েকটি দলের অংশগ্রহণের দরকার ছিল। একটি বিরোধী পক্ষ না থাকলেও নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয় না।
ওই সময় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের আ স ম রবকে বেছে নিলেন এরশাদ। আ স ম রব তখন সরকারি হালুয়া-রুটি খেয়ে ৬০টিরও অধিক দল নিয়ে সম্মিলিত বিরোধী দল নামে একটি জোট গঠন করেন। ৮৮ সালের ৩ মার্চ অনুষ্ঠিত পাতানো সংসদ নির্বাচনে এরশাদের জাতীয় পার্টি পায় ২৫১ আসন আর আ স ম রবের সম্মিলিত বিরোধী দল পায় ১৯ টি আসন। এভাবেই এরশাদ ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য রবের নেতৃত্বে বিরোধীদল গঠন করিয়েছিলেন। অবেশেষ আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতের গণআন্দোলনের মুখে এরশাদকে ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছে।
দীর্ঘ ৩০ বছর পর এসে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের চাপে পড়ে আ স ম রবের মতোই একটি জোট গঠন করলেন এরশাদ। রাষ্ট্র ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার জন্য আ স ম রবকে দিয়ে এরশাদ যে কাজটি করেছিলেন, আজ আওয়ামী লীগও এরশাদকে দিয়ে সেই কাজটিই করছে। অর্থাৎ আ স ম রবকে এরশাদ যে পথ দেখিয়েছিলেন আজ তিনি নিজেই সেই পথে হাঁটছেন।
রাজনীতিক বিশ্লেষক ও সচেতন মানুষ মনে করছেন, বন্দুকের নল ঠেকিয়ে ক্ষমতা দখল করে এরশাদ যে অপরাধ করেছিল আজ সেই পাপের পরিণাম ভোগ করছে। সামনে এরশাদের জন্য আরও কঠিন দিন আসতেছে।
Discussion about this post