অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
পরিবেশবিদ, বিশিষ্টজন, রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষের মতামতকে উপেক্ষা করেই সরকার বাগেরহাটের রামপালে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা দিয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারতের কোম্পানি ভেল’কে।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি বা বিআইএফপিসিএল নির্মাণকাজের জন্য নির্বাচিত ভারত হেভি ইলেক্ট্রিক্যালস বা ‘ভেল’ কে ‘নোটিশ টু প্রসিড’ অর্থাৎ কাজ শুরু করার লিখিত নির্দেশ দিয়েছে। এখন থেকে ৪১ মাসের মধ্যে রামপালের মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্টের প্রথম ইউনিটটির নির্মাণ কাজ শেষ করতে হবে ‘ভেল’কে। দ্বিতীয় ইউনিটের জন্য আরও ছ’মাস সময় দেওয়া হয়েছে নির্মাণকারী সংস্থাটিকে।
রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের এই লিখিত নির্দেশকে সুন্দরবন ধ্বংসে সরকারের চূড়ান্ত পদক্ষেপ বলেই মনে করছেন বিশিষ্টজনেরা।
দীর্ঘদিন ধরেই রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বন্ধের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে পরিবেশবাদী সংগঠন, জাতীয় স্বার্থ রক্ষা সংগঠনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন সমূহ। এমনকি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের দাবিতে সম্প্রতি অর্ধবেলা হরতালও পালন করেছে বিভিন্ন সংগঠন।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ও রাজনীতিকরা মনে করছেন, রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ হলে বিশ্বের অন্যতম ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনের মারাত্মক ক্ষতি হবে। পরিবেশ দুষণের কারণে রয়েল বেঙ্গল টাইগারসহ অন্যান্য পশুরাও সুন্দরবন ছেড়ে চলে আসতে বাধ্য হবে। নষ্ট হবে সুন্দরবনের সৌন্দর্য। হয়তো বা একদিন ইতিহাসের পাতা থেকে এই সুন্দরবন হারিয়েও যেতে পারে।
তাদের মতে, ভারত আমাদের প্রতিবেশী দেশ হলেও তারা আমাদের কোনো উন্নয়ন-অগ্রগতিকে ভাল চোখে দেখে না। ফারাক্কা বাঁধ দিয়ে ভারত দেশের উত্তরাঞ্চলকে মরুভূমিতে পরিণত করেছে। সিলেট অঞ্চলকে ধ্বংস করতে সেখানে টিপাইমুখ বাঁধ তৈরির চেষ্টা করছে। এখন তারা আমাদের সৌন্দর্যের লীলাভূমি ও বিশ্বের অন্যতম ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনকে ধ্বংসের টার্গেট করেছে। আর বর্তমান ভারতের মদদপুষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার নিজেদের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে জনমতকে উপেক্ষা করেই রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ কাজ শুরু করেছে।
বিশিষ্টজনেরা বলছেন, এ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বাংলাদেশের ক্ষতি ছাড়া কোনে লাভ হবে না। এখানে ১০ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে ভারতের এক্সিম ব্যাংক। নির্মাণ উপকরণও আনা হবে ভারত থেকে। নির্মাণ কাজের দায়িত্বও পেয়েছে ভারতের কোম্পানি। বিদ্যুৎ উৎপাদনের লাভও যাবে ভারতের ঘরেই। মাঝ দিয়ে পরিবেশ দুষণে নষ্ট হবে বাংলাদেশের সুন্দরবন।
Discussion about this post