অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
চারদিনের ভারত সফর শেষে আজ সোমবার দেশে ফিরছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাত ৮টায় ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে তার পৌঁছার কথা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে বাংলাদেশের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক অঙ্গনসহ বিভিন্ন মহলে চুলছেঁড়া বিশ্লেষণ শুরু হয়ে গেছে।
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার এ সফরকে ফলপ্রসু এবং দুই দেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছার দাবি করা হলেও অর্জন শূন্য দেখছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকে সই করেছেন তাতে বাংলাদেশের কোনো স্বার্থ রক্ষা হয়নি। সবগুলোই ভারতের স্বার্থকে সংরক্ষণ করবে। প্রধানমন্ত্রীর ঝুলিতে এখন হিন্দি ভাষায় অনূদিত বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী ছাড়া আর কিছু নাই।
গত ৭ এপ্রিল চারদিনের সফরে ভারত যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিমানবন্দরে নরেন্দ্র মোদি এসে শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান। সরকারপন্থী মিডিয়া এটাকে প্রটোকল ভেঙ্গে মোদি নিজে এসে শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানিয়েছেন বলে ব্যাপকভাবে প্রচার করে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও এনিয়ে খুব গর্ববোধ করছেন। এটাকেই তারা দেশের জন্য বড় প্রাপ্তি বলে মনে করছেন।
গতকাল রোববার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে এক সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গর্বের সঙ্গে বলেছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সমস্ত প্রটোকল ভেঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন করেছেন। এতে আমাদের শির আরও উঁচু হয়েছে। এছাড়া রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রধানমন্ত্রীর থাকার জায়গা করায় এটাকেও বাংলাদেশের জন্য সম্মানজনক বলে দাবি করছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
এরপর ওই দিন বিকেলে শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। এসময় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক হিন্দু ভাষায় অনূবাদ করা শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটি প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন সুষমা। এছাড়া শেখ হাসিনার সফরের কর্মসূচিগুলোতে অধিকাংশ সময় নরেন্দ্র মোদি, প্রণব মুখার্জি, মমতা ও সোনিয়া গান্ধিসহ ভারতের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা শুধু শেখ মুজিবুর রহমান আর শেখ হাসিনার প্রশংসা করেছেন।
আওয়ামী লীগ এসবকে অর্জন মনে করলেও রাজনীতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব হল ভারতের অতি তোষামোদি। প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারকের জন্যই মূলত নরেন্দ্র মোদি এসব করেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, তিস্তা চুক্তি যেহেতু হয়নি তাই বলা যায় প্রধানমন্ত্রীর সফরের অর্জন একেবারেই শূন্য। ভারতের হিন্দু ভাষায় অনূবাদ করা শেখ মুজিবের আত্মজীবনী ছাড়া শেখ হাসিনার ঝুলিতে আর কিছু নেই। সবকিছু দিয়ে তিনি খালি হাতেই দেশে ফিরছেন।
এদিকে শেখ হাসিনার ভারত থেকে দেশে ফেরার পর তাকে গণসংবর্ধনা দেয়ার বিশাল আয়োজন করা হয়েছিলো আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে। কিন্তু হঠাৎ করে শেখ হাসিনার নির্দেশে এই সংবর্ধনার অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়। ভারত সফরে অর্জনের মত এমন কিছু নেই, যা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আনন্দের সাথে বলা যেতো। অনেকের মতে এ কারনেই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বাতিল করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
Discussion about this post