দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ছাড়া আর অন্য কোনো দল অংশ নেয় নাই বললেই চলে। বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে। জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের রায় বহাল রেখেছে। শুধুমাত্র বহির্বিশ্বকে দেখানোর জন্য আওয়ামী লীগ একটি সাজানো ও পাতানো নির্বাচনের আয়োজন করেছে।
ঘরোয়া ও গৃহপালিত বিরোধী দল জাতীয় পার্টিকে টাকা দিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করিয়েছে। কারন তা না হলে বিরোধী কোনো পার্টি দেখা যাচ্ছে না। দৈনিক সমকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী জাতীয় পার্টির অনেক প্রার্থী টাকা না পেয়ে নির্বাচন থেকে সরে যাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ ছলে বলে কলে কৌশলে দেশের হাজার কোটি টাকা লুটপাট ও পাচার করেছে। শুধুমাত্র ফরিদপুর জেলা শাখার ছাত্রলীগ সভাপতি ২ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে মর্মে স্বীকার করেছে। আর বাকি নেতাদের কথা না হয় না-ই বললাম।
এবারের নির্বাচনে কোনো দল যেহুতু অংশগ্রহণ করে নাই সেহুতু আওয়ামী লীগ নিজেদেরকে সিলেকটেড ঘোষণা করে নতুন করে সরকার গঠন করলেই পারত। কিন্তু আওয়ামী লীগ তা না করে একটি লোক দেখানো সাজানো নির্বাচন করে রাষ্ট্রের হাজার কোটি টাকা নষ্ট ও লোপাট করার এবং তা ভোগ করার জন্য মিলন মেলার আয়োজন করেছে। যা পুরো দেশের মানুষের সাথে একটি তামাশা মাত্র। একই সাথে জনগণের কষ্টের ট্যাক্স ও ভ্যাট তথা রাষ্ট্রীয় কোষাগারের টাকার সম্পূর্ন অপব্যাবহার ও অপচয়।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খরচ হবে দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি। বিশ্লেষকরা বলছেন এই খরচ দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচনের ইতিহাসে এবারই প্রথম প্রিজাইডিং-পোলিং অফিসারসহ নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের দু’দিনের সম্মানী ভাতা দেয়া হবে, যেটা আগে ছিল একদিন। এর ফলে আগের নির্বাচনের তুলনায় এবারে ব্যয় হচ্ছে দ্বিগুণেরও বেশি অর্থ।
শুধূমাত্র একজন ম্যাজিস্ট্রেটের জন্যই ব্যয় হবে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। ম্যাজিস্ট্রেট বা ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা সম্পন্ন কর্মকর্তারা নির্বাচনের আগে ও পরের দুই দিনের-সহ মোট পাঁচ দিনের জন্য দিনে জনপ্রতি নয় হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন। এছাড়া স্টাফ ভাতা হিসেবে তারা প্রতিজন প্রতি দিনের পাবেন আরো এক হাজার টাকা।
তাহলে আগের নির্বাচনগুলোতে খরচ কেমন ছিল?
নির্বাচন কমিশন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য মোট বরাদ্দ ছিল ৭০০ কোটি টাকার মতো। যদিও পরে তা কিছুটা বেড়েছিল।
এর আগে, দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছিল বিএনপিসহ কিছু রাজনৈতিক দল। ওই নির্বাচনের জন্য মোট খরচ হয়েছিল প্রায় ২৬৫ কোটি টাকা। আর ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের জন্য ব্যয় হয়েছিল প্রায় ১৬৫ কোটি টাকা।
শুধূমাত্র একটি ডামি নির্বাচনের আয়োজন করে রাষ্ট্রের হাজার কোটি টাকা লোপাট করার পায়তারা করছে আ.লীগ। জনগণের টাকা এসব। রাষ্ট্রের টাকা এসব। এসব টাকা আওয়ামী একতরফা নির্বাচনের জন্য ব্যায় হতে পারে না। দেশের জনগণকে এখনই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
Discussion about this post