অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়ে বিএনপিকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া অনুমতিও দেয়া হয়েছে ২৬টি শর্ত যোগ করে। এসব শর্তের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ২টি হল-দুপুর ১২ টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ওই স্থানে বিএনপি সমাবেশ করতে হবে। ১২টার আগে নেতাকর্মীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ করতে পারবে না এবং বিকেল ৪টার মধ্যেই সমাবেশ শেষ করতে হবে। তারপর, উদ্যানের বাউন্ডারির বাইরে কোনো লোক থাকতে পারবে না। এমনকি মিছিল নিয়েও সমাবেশে আসা যাবে না। বাউন্ডারির বাইরে মাইক ব্যবহার করা যাবে না। এসব শর্ত থেকেই অনেকটা স্পষ্ট যে সরকার আসলে কি করতে চাচ্ছে।
আগামী ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার জন্য বিএনপি অনুমিত চেয়েছিল। কিন্তু সরকার অনুমিত দিয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। বিএনপি প্রথম থেকেই বলে আসছে যে, আমরা নয়াপল্টনেই সমাবেশ করবো। কিন্তু সরকার নয়াপল্টনে বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দিচ্ছে না। সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন যুক্তি দেখানো হচ্ছে যে, নয়াপল্টনে লোকের জায়গা হবে না, আগত নেতাকর্মীদের কষ্ট হবে। বিএনপি যাতে সুন্দরভাবে সমাবেশ করতে পারে সেইজন্য সরকার তাদের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বরাদ্দ দিয়েছে। এমনকি বিএনপির সমাবেশের কারণে ছাত্রলীগের সম্মেলন দুইদিন এগিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা।
এখন প্রশ্ন হল-হঠাৎ করেই শেখ হাসিনা বিএনপির প্রতি এত দরদী হয়ে উঠলেন কেন? কিছু দিন আগেও বলেছেন-হেফাজতের মতো বিএনপির একই পরিনতি হবে। তার আসল মতলব কি?
জানা গেছে, বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে মানুষের ভিড় দেখে সরকার আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। সরকারের আশঙ্কা ঢাকার সমাবেশেও বড় জমায়েত হবে। তারা যদি সমাবেশের অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে নয়াপল্টনে সরকার চাইলেও কিছু করতে পারবে না। আর নয়াপল্টন হল বিএনপির বাড়ির আঙ্গিনা। এখানে বিএনপির শক্তি বেশি। কোনো সমস্যা হলেও বিএনপি মোকাবেলা করতে পারবে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সরকার পরিকল্পিতভাবেই বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢোকানোর চেষ্টা করছে। কারণ, ওই এলাকায় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের প্রভাব বেশি। পাশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। কিছু হলেই ছাত্রলীগের ছেলেরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে চারদিক থেকে হামলে পড়তে পারবে। বিএনপি চাইলেও ওই এলাকায় বেশি নড়াচড়া করতে পারবে না। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও পুলিশলীগ মিলে যা খুশি তাই করতে পারবে। ওই যে শেখ হাসিনা বলেছেন, হেফাজতের মতো উচিত শিক্ষা দেবেন। তিনি সেটাই করবেন।
এদিকে রাজনীতিক বিশ্লেষকরাও মনে করছেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কোনোভাবেই বিএনপির সমাবেশ করা ঠিক হবে না। বিএনপি নেতারা যদি সরকারের ফাদে পড়ে সেখানে যায় তাহলে তাদেরকে চরম মাশুল দিতে হবে।
Discussion about this post