বুধবার, নভেম্বর ৫, ২০২৫
Analysis BD
No Result
View All Result
No Result
View All Result
Analysis BD
No Result
View All Result
Home Home Post

ভারতের নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে এনার্জি খাত

সেপ্টেম্বর ৬, ২০২২
in Home Post, বিশেষ অ্যানালাইসিস
Share on FacebookShare on Twitter

২০১৬ সালে ভারতের সাথে ‘মৈত্রী সুপার থারমাল বিদ্যুৎ প্রকল্পে’ মূল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে হেভি ইলেকট্রিক্যালস লিমিটেড (বিএইচইএল) নামে ভারতীয় একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সই হয়েছে। বিআইএফপিসিএলের পক্ষ থেকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক উজ্জ্বল কান্তি ভট্টাচার্য এবং বিএইচইএলের পক্ষ থেকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রেম পাল যাদব চুক্তিতে সই করেন। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালিকানায় ভারত মূল অংশীদার।

২০১৫ সালে আদানি গ্রুপের সাথে বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি করে হাসিনা সরকার। ভারতের আদানি গ্রুপের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনতে বাংলাদেশকে ২৫ বছরে ৭০ হাজার কোটি টাকা বাড়তি ব্যয় করতে হবে। দেশীয় উৎপাদকদের চেয়ে আদানির বিদ্যুতের দাম বেশি, এ কারণেই বাড়তি খরচ হবে বাংলাদেশের। ভারতের বৃহৎ ওই শিল্পগোষ্ঠীর কাছ থেকে ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেনার জন্য চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। জ্বালানিবিষয়ক আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা ইনস্টিটিউট অব এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিসের (আইফা) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদানির কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত এ বিদ্যুতের প্রতি ইউনিটের দর পড়বে ৮ টাকা ৭১ পয়সা।

অন্যদিকে দেশীয় প্রতিষ্ঠান থেকে বিদ্যুতের দর পড়বে ইউনিটপ্রতি ৬ টাকা ৫২ পয়সা। বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের যৌথ উদ্যোগে স্থাপিত রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ইউনিটপ্রতি ৭ টাকা ৭১ পয়সা দরে বিদ্যুৎ কেনা হবে। আর ভারতের কর্ণাটকে সম্প্রতি নির্মিত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৪ টাকা ৮০ পয়সা খরচ পড়ছে। দেশীয় কোম্পানির বিদ্যুতের দর ও আদানির বিদ্যুতের দর তুলনা করলে বাড়তি ৭০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের হিসাব পাওয়া যায়।

এনার্জি খাত তথা বিদ্যুৎ খাতের ওপর কোনো দেশের নিজস্ব নিয়ন্ত্রণ না থাকা মানে হলো সে দেশের স্বাধীনতা বলে কিছু থাকলো না। বাংলাদেশ যদি এনার্জির জন্য ভারতের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে তবে বাংলাদেশের কোনো সরকারেরই স্বাধীনভাবে দেশ পরিচালনার সুযোগ থাকবে না। কারণ এনার্জি ছাড়া এক ঘন্টা চলাও সম্ভব না। আর এটা এমন বিষয় নয় যে, সংরক্ষণ করে ব্যবহার করা যায়।

আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করা হচ্ছে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ঝাড়খন্ডের গোড্ডা জেলায়। বাংলাদেশে বিদ্যুৎ আনতে ২৪৫ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করতে হবে। এর ৯৫ কিলোমিটার ভারতের অংশে, বাকিটা বাংলাদেশে। ভারতের অংশে যে লাইন নির্মিত হবে, তার ব্যয়ও বিদ্যুতের দামের মধ্যে ধরা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে আইফার প্রতিবেদনে। এতে আরও বলা হয়, আদানি শুরুতে মাত্র ১৬ কিলোমিটার দূরে তাদের খনি থেকে কয়লা এনে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু ২০১৬ সালের মে মাসে তারা একটি হালনাগাদ প্রস্তাব দেয়, যেখানে আমদানি করা কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা বলা হয়।

বাংলাদেশের হাসিনা সরকারের সীমাহীন দুর্নীতির ফলে রিজার্ভে ব্যাপক ঘাটতি দেখা দেয়। পর্যাপ্ত তেল ক্রয়সহ আমদানি সংকটে পড়ে বাংলাদেশ। আর এর প্রাথমিক ধাক্কা পড়ে এনার্জি খাতে। হাসিনা সরকার তার দৃশ্যমান উন্নয়ন দেখাতে গিয়ে প্রচুর কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ প্রকল্প চালু করে। যা ছিল ব্যয়বহুল ও তেলনির্ভর। রিজার্ভ সংকটের কারণে পর্যাপ্ত তেলের যোগান দিতে ব্যর্থ হয় হাসিনা সরকার।

দ্রুত এনার্জি সংকট থেকে রক্ষা পেতে শেখ হাসিনা ভারত সফরে গিয়েই আদানির সাথে প্রথম দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করে। সেখানে আদানির কাছ থেকে পূর্বের চুক্তিকৃত ১৬০০ মেগাওয়াটসহ আরো এনার্জি আমদানির ব্যাপারে তারা আলাপ করে। আদানির বিদ্যুতের দাম বেশি হওয়া সত্ত্বেও দেশের স্বার্থ বিকিয়ে ভারত সরকারকে খুশি করার জন্যই হাসিনা এনার্জি খাতকে ভারতের হাতে তুলে দিচ্ছে।

বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে চীন ও ভারতের প্রতিযোগিতা সবার জানা। আর সেই প্রভাব বিস্তারকে পুঁজি করে বাংলাদেশের সুযোগ ছিল এগিয়ে যাওয়ার। কিন্তু জনগণের সমর্থনহীন, মিডনাইট নির্বাচনের অবৈধ সরকারের কারনে বাংলাদেশ তার সার্বভৌমত্ব হারিয়েছে। হাসিনার সাথে বৈঠকের পর আদানি টুইট বার্তায় জানিয়েছে ১৬ ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশ আদানি থেকে ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাবে।

বিশ্লেষকদের ধারণা এই আমদানির পরিমাণ কমবে না বরং দিন দিন বাড়াবে ভারত সরকার। হাসিনা সরকারের টিকে থাকা নির্ভর করছে এই আমদানির ওপরে। হাসিনা দেশের সবকিছু ভারতকে তুলে দিচ্ছে। ভারতের ট্রানজিট ফি ফ্রি করে দিচ্ছে। ভারতের মোদি সরকার তাই হাসিনার সাথে নিজে মিটিং করার আগেই গৌতম আদানির সাথে মিটিং করিয়েছে। গৌতম আদানি থেকে উচ্চমূল্যে বিদ্যুৎ কিনে ও ধীরে ধীরে এনার্জি খাত ভারতের কাছে তুলে দেওয়ার বিনিময়ে সে হাসিনার সাথে মিটিং করবে। এর বিনিময়ে হাসিনা নিশ্চিত করবে আগামী ইলেকশনেও যাতে ভারত তাকে টিকিয়ে রাখে।

উল্লেখ্য গত কয়েক বছরে আদানি শিল্পগোষ্ঠী যেভাবে বাংলাদেশের ঘরে ঘরে ঢুকে পড়েছে তা প্রায় অভাবনীয়। বাংলাদেশ এডিবল অয়েল লিমিটেড – যারা জনপ্রিয় ভোজ্য তেল ব্র্যান্ড রূপচাঁদার উৎপাদন ও বিপণন করে থাকে – তারা ও ভারতেরই আদানি উইলমার লিমিটেডের একটি সহযোগী সংস্থা। চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে ভারতের একটি এসইজেড স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আদানি পোর্টসের চুক্তিও করা আছে। ঝাড়খন্ডে আদানির গোড্ডা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকেও পুরো উৎপাদনটাই বাংলাদেশ কেনার অঙ্গীকার করে রেখেছে – যার জন্য তাদের খুব চড়া হারে ক্যাপাসিটি চার্জও দিতে হচ্ছে। যদিও সেই বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ কবে শেষ হবে, তা এখনো অনিশ্চিত। পোর্ট, লজিস্টিকস, হাইড্রোকার্বন বা ক্লাইমেটের মতো খাতে বাংলাদেশে আদানির বিনিয়োগ অনেক বেশি।

 

লেখক : রাজনৈতিক বিশ্লেষক

সম্পর্কিত সংবাদ

Home Post

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫
Home Post

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫
Home Post

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

Discussion about this post

জনপ্রিয় সংবাদ

  • রক্তাক্ত ২৮ অক্টোবর: ১৫ বছর পরেও বেপরওয়া খুনিরা, সুবিচার পায়নি শহীদ পরিবার

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • Trademark Web based poker Crazy Expensive diamonds Gambling enterprise Video slot Genuine Imitation Financial

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • ভাষা আন্দোলন ও এর ঘটনা প্রবাহ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • পাহাড়ে পরিকল্পিতভাবে বাঙালি উচ্ছেদ ও ডি ইসলামাইজেশন করা হচ্ছে

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • Tagesordnungspunkt Spielbank Maklercourtage Ohne Einzahlung 2024

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

সাম্প্রতিক সংবাদ

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

মে ২১, ২০২৫

ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

মে ২১, ২০২৫

© Analysis BD

No Result
View All Result

© Analysis BD