অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
শেখ হাসিনা তার এক সময়ের ৫ কামলা দিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। যদিও বলা হয়ে থাকে যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। আসলে এটা শুধু কাগজে লেখার কথা, প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি ছাড়া বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি কিছুই করতে পারেন না। সুতরাং, শেখ হাসিনা যাদের নাম পছন্দ করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি তাদের নামই শুধু ঘোষনা করেছেন।
তুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ ও দেশবাসীর যে প্রত্যাশা ছিল তার প্রতিফলন ঘটেনি। সবার প্রত্যাশা ছিল-এবার দল নিরপেক্ষ লোক দিয়ে সরকার নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। কিন্তু সরকার সেটা করেনি। প্রধান নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে সব কমিশনারই শেখ হাসিনার আমলের সুবিধাভোগী ছিল।
বিশেষ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আওয়ালকে নিয়ে ইতিমধ্যে ব্যাপক প্রশ্ন উঠেছে। ২০১০ সালে আইন সচিব হিসেবে তার পদ অবৈধ ঘোষণা করেছিল সর্বোচ্চ আদালত। তারপর দুইজন বিচারকের অবসর নিয়েও তাকে ক্ষমা চাইতে হয়েছিল। এছাড়া শেখ হাসিনার অতিঘনিষ্ট হওয়ার কারণেই তাকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব করা হয়েছিল। তার সবচেয়ে বড় পরিচয় হল তিনি আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান। তার বাবা জেলহত্যা মামলার বাদী ছিলেন। মানে কাজী হাবিবুল আওয়াল নুরুল হুদার মতো শেখ হাসিনার পরিক্ষীত লোক। তাকে দিয়েই আগামী নির্বাচনে নির্বাচনের নামে আরেকটি প্রহসন করে ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করবেন শেখ হাসিনা।
এখন প্রশ্ন হল-এমন বিতর্কিত ব্যক্তিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে রাষ্ট্রপতি কিভাবে নিয়োগ দিলেন? জবাবটা একেবারে সোজা। আওয়ামী লীগ কাজী হাবিবুল আওয়ালের নাম প্রস্তাব করেনি। কাজী হাবিবকে নিরপেক্ষ ও যোগ্য প্রমাণ করতে শেখ হাসিনা তার একান্ত ও অত্যন্ত দক্ষ দালাল ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে দিয়ে নামটি প্রস্তাব করেছেন। সরকার জানে-ডা. জাফরুল্লাহকে মানুষ বিএনপির লোক হিসেবেই জানে। এর মানে বিএনপিপন্থী কথিত বুদ্ধিজীবীই কাজী হাবিবুল আওয়ালের নাম প্রস্তাব করেছে। আর রাষ্ট্রপতি সেটা গ্রহণ করেছেন। এখানে আওয়ামী লীগের কিছুই করার ছিল না।
ডা. জাফরুল্লাহর বিষয়ে নতুন করে আর কিছুই বলার নাই। অ্যানালাইসিস বিডির একাধিক প্রতিবেদনে তাকে লেখা হয়েছে।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী শেখ হাসিনার এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে দীর্ঘদিন ধরেই। তিনি বিএনপির লেবাস পরে তিনি মূলত সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনার পরামর্শেই কামাল-জাফরুল্লাহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছিল। আর জাফরুল্লাহর পরামর্শেই শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে এসেছিল বিএনপি।
এবার এই জাফরুল্লাহকে দিয়ে শেখ হাসিনা তার অনুগত কাজী হাবিবুল আওয়ালের নাম সিইসি হিসেবে প্রস্তাব করিয়েছেন এবং রাষ্ট্রপতি সেটা গ্রহণ করেছেন। আর শেখ হাসিনার পরামর্শেই মূলত জাফরুল্লাহ কাজী হাবিবের নাম প্রস্তাব করেছিল।
Discussion about this post