অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
দেশে করোনা পরিস্থিতি দিন দিন উন্নতি হচ্ছে। কমে আসছে করোনায় মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। শুক্রবার করোনায় সরকারি হিসাবে ৩৮ জন মারা গেছে আর আক্রান্ত হয়েছে দুই হাজারের বেশি। করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় দেড় বছর ধরে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১২ সেপ্টেম্বর রোববার থেকে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় চালু হবে।
কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগেই বন্ধের ইঙ্গিত দিচ্ছে সরকার দলীয় নেতাকর্মী ও বিশেষজ্ঞরা। পরিস্থিতি যখন দিন দিন উন্নতি হচ্ছে ঠিক সেই সময়ে সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ আসতে পারে-এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা। আগামী বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠেয় বিভাগীয় কমিশনারদের সমন্বয় বৈঠকে করোনার তৃতীয় ঢেউ সম্পর্কে মাঠ প্রশাসনের মতামত চাওয়া হবেও বলে জানান হয়েছে।
আইডিসিআরের উপদেষ্টা ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মোশতাক হোসেন গণমাধ্যমকে বলেছেন-আরেকটি ঢেউ আশার আশঙ্কা অবশ্যই আছে। এটি মোকাবিলায় সরকারের চিন্ত আছে, তবে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ থাকা দরকার। অন্যদিকে দেশে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ফের বন্ধের ঘোষণা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
স্কুল খোলার পর যুক্তরাষ্ট্রের করোনার সংক্রমণ বেড়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমেরিকা আর আমাদের দেশ এক নয়। করোনা সংক্রমণ বাড়লে অবশ্যই শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করবে, আমরাও সেই ধরনের পরামর্শ দেবো।
হঠাৎ করে সরকার দলীয় মন্ত্রী ও বিশেষজ্ঞরা করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা করছেন কেন? অন্য কোনো দেশেতো তৃতীয় ঢেউয়ের কোনো আশঙ্কা করছে না। সবাই নিয়মিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে রেখেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর বিভিন্ন দাবিতে ছাত্র আন্দোলন শুরু হতে পারে বলে আশঙ্খা করছে সরকার। যার মাধ্যমে সরকার পতনের আন্দোলনেও রূপ নিতে পারে। তখন সরকার চাইলেও হঠাৎ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করতে পারবে না। তাই-আগ থেকেই করোনার তৃতীয় ঢেউ আসার সংকেত দিয়ে রাখছে-যদি কোনো আন্দোলন হয় তাহলে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির নামে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভাষ্যমতে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে শিক্ষাঙ্গনগুলোতে নানান কৌশল, অপকৌশলে অস্থিরতা তৈরি হবে। অনেক অপশক্তি এবার মাঠে নামবে, চ্যালেঞ্জ করবে। তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরেই তারা অস্থিতিশীলতা তৈরি করবে। সামাজিক আন্দোলনের কোটা সংস্কার, সড়ক নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের মতো আবার অন্দোলন গড়ে উঠতে পারে। এসব অযুহাত দেখিয়ে ছাত্রলীগকে উস্কে দেন সেতুমন্ত্রী।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উস্কে দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, “অচিরেই বিশ্ববিদ্যালয় খুলছে। আপনাদের কিন্তু আটঘাট বেঁধে নামতে হবে।
ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজনৈতিক মহল ও সচেতন মহল। তারা বলছেন, করোনা কালীন সময়ে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের ধর্ষণের হাত থেকে রক্ষা পায়নি যশোর এমসি কলেজের এক শিক্ষার্থী। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় হল বন্ধ থাকার ঘোষনা থাকলেও তারা হল গুলোতেও থেকেছে ও বিভিন্ন অনিয়ম লুটপাট করেছেভ দীর্ঘ দেড় বছর পর বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ঘোষনা দিয়েই সেই সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগকে উস্কে দিচ্ছেন একজন সরকারের মন্ত্রী। সাধারণ মানুষের কাছে ছাত্রলীগের চরিত্র স্পষ্ট। আর উনি দলের একজন প্রভাবশালী নেতা হয়ে কিভাবে এমন সন্ত্রাসী সংগঠন উস্কে দিতে পারেন। তারা আসলে দেশ থেকে শিক্ষাকে ধ্বংস করতে চায়। এজন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা তৈরী করে লেখাপড়া থেকে শিক্ষার্থীদের বিমুখ করতে চায়।
Discussion about this post