অ্যানালাইসিস বিবি ডেস্ক
রমজান মাস হল মুসলমানদের ইবাদতের মাস। এ মাসে মুসলমানরা রোজা রাখাসহ অন্যান্য ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে আল্লাহর কাছে মুক্তি কামনা করে। নিয়মিত যারা নামাজ পড়েন না রমজান মাসে তারাও মসজিদে গিয়ে জামায়াতের সাথে পাঁচওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন। তারপর রমজানের আরেকটা আকর্ষণ হল-তারাবির নামাজ।
কিন্তু, কথিত লকডাউনের নাম করে বর্তমান ইসলাম বিদ্বেষী সরকার পবিত্র এই রমজান মাসে সারাদেশের মসজিদগুলোতে ইবাদত বন্দেগীতে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে।
সরকার নির্দেশ দিয়েছে-লকডাউন চলাকালীন সারাদেশের মসজিদগুলোতে পাঁচ ওয়াক্তের নামাজে ২০ জনের বেশি মুসল্লি উপস্থিত থাকতে পারবে না। ইতিমধ্যে বুধবার রাত থেকেই মসজিদগুলোতে সরকারের এই নির্দেশ কার্যকর করা হয়েছে। ২০ জন মুসল্লি মসজিদের ভেতরে যাওয়ার পরই মসজিদের গেট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। একটি মসজিদে গিয়ে দেখা গেছে-কয়েকজন মুসল্লি মসজিদের গেটে গিয়ে দাড়িয়ে আছেন। গেটটা খুলে দেয়ার জন্য তারা অনেক আকুতি মিনতি করে ইমাম সাহেবকে ডাকছেন। কিন্তু ভেতর থেকে কেউ কোনো সাড়া দিচ্ছে না। ইমাম সাহেবরা সরকারের কথিত নির্দেশনা পালন করছেন।
প্রশ্নটি এখন শুধু মুসল্লিদের পক্ষ থেকেই আসছে না। প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ মানুষও। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ এনিয়ে প্রচণ্ড ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
অনেকেই বলছেন, বিগত এক বছর সরকার সবকিছুই খোলা রেখেছে। এছাড়া লকডাউন ঘোষণা করলেও চলেছে বই মেলা বঙ্গবন্ধু গেমসসহ নানা আয়োজন। অন্যদিকে এক বছরে সব কিছু খুলে দিলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মানে সারাদেশের করোনা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসে জড়ো হয়েছিল।
গত এক সপ্তাহ সরকার সারাদেশে লকডাউনের নামে তামাশা করেছে। লকডাউনের নামে গণপরিবহণের ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়িয়ে দিয়েছে। অথচ-সরকারের এই কথিত লকডাউনে সবই ছিল খোলা।
এরপর, সরকার ১৪ এপ্রিল থেকে সারাদেশে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে। হাসিনাসহ তার তেলবাজ মন্ত্রীরা কয়েকদিন ধরেই বলে আসছে-কঠোর লকডাউন হবে। মানুষকে এক সপ্তাহ ঘরেই থাকতে হবে। এরপর রোববার কঠোর লকডাউনের প্রজ্ঞাপনও জারি করে সরকার।
প্রজ্ঞাপনে দেখা গেছে, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি ও শিল্পকারখানা ছাড়া লকডাউনে সবই বন্ধ থাকবে। প্রশ্ন হল-কঠোর লকডাউন হলে গার্মেন্টস ও শিল্পকারখানা খোলা থাকবে কেন? লাখ লাখ পোশাক শ্রমিক অফিসে যাওয়া আসার সময় কি করোনা ছড়াতে পারে না?
তারপর, সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয় হল-প্রজ্ঞাপন জারির একদিন পরই সরকার আবার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলো। বলা হল-ব্যাংক ও শেয়ারবাজারে লেনদেন চালু থাকবে। এই যে লোকজন দলে দলে ব্যাংক ও শেয়ারবাজারে যাবে তাদের মাধ্যমে কি করোনা ছড়াবে না?
এখন প্রশ্ন হল-কঠোর লকডাউনে গার্মেন্টস, শিল্পকারখানা, ব্যাংক, শেয়ারবাজার খোলা থাকবে, যেখানে লাখ লাখ মানুষ গিয়ে ভিড় করবে। এটা নিয়ে শেখ হাসিনার কোনো মাথা ব্যথা নেই। যত ব্যথা আল্লাহর ঘর মসজিদ নিয়ে। কথিত লকডাউনের অজুহাতে শেখ হাসিনা এখন মসজিদগুলোকেও নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছেন। সব যেখানে খোলা-সেখানে মসজিদে মুসল্লির সংখ্যা সীমিত থাকবে কেন?
সচেতন মহল বলছেন, মূল কারণ লকডাউন নয়, হাসিনা যে আসলেই বিদ্বেষী এর মাধ্যমে আবার প্রমাণ হল। তারা বলছেন, সরকার এর আগে মসজিদ গুলোতে সবা সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে। কৌশলে জনগণকে গণজমায়েত থেকে দূরে রেখে ফায়দা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে।
Discussion about this post