অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি মাস। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভোল্ট থেকে রিজার্ভের ১০১ মিলিয়ন বা ১০ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার হাতিয়ে নেয় সরকার। দায় চাপানো হয় বিদেশি হ্যাকারদের উপর। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের অদক্ষতা ও অবহেলায় এই ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন।
অনুসন্ধান বলছে, ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির সাথে সরাসরি শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয় জড়িত। তাদের নির্দেশেই সেদিন অপরিচিত কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মীদের কাছে নাম এন্ট্রি করা ছাড়াই ব্যাংকের ভেতরে ঢুকতে দিয়েছিলেন তৎকালীন গভর্নর ড. আতিউর রহমান।
এরপর থেকে নানা অযুহাতে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সরকার। কখনও চুরি, কখনও প্রণোদনা কিংবা কথিত উন্নয়নের নামে চলছে হরি লুট। কমছে ব্যাংকের তারল্য। এবার নজর পড়েছে প্রবাসী শ্রমিকদের রেমিটেন্স এর উপর।
জানা যায়, প্রবাসী শ্রমিকদের রেমিটেন্স আসায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ অতীতের রেকর্ড ভেঙেছে। হাসিনা এখন ব্যাংকের এই রিজার্ভ সরাতে কথিত উন্নয়নের নামে ‘বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিল’ গঠন করেছে। আর সেই তহবিলের জন্য টাকা নিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে।
ইতিমধ্যে পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের ক্যাপিটাল ও মেনটেইনেন্স ড্রেজিং’ প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিলের মাধ্যমে ৫ হাজার ৪১৭ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হচ্ছে পায়রা বন্দরকে।
দেশের অসাধু ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ব্যাংক থেকে মোটা অংকের লোন নিয়ে এখন এগুলো আর ফেরত দিচ্ছে না। যার কারণে অনেক তফসিলি ব্যাংক এখন তারল্য সংকটে ভোগছে।
আর বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভে টাকা রাখা হয় আপদকালীন সময় পার করার জন্য। অনেক সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভেও যথেষ্ট পরিমাণ টাকা থাকে না লোন দেয়ার জন্য। রিজার্ভে যথেষ্ট পরিমাণ টাকা থাকলে ব্যাংকগুলো আর বড় ধরণের সংকটে পড়ে না।
কিন্তু শেখ হাসিনা এখন কথিত উন্নয়নের নামে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সেই রিজার্ভে আবার হাত দিয়েছে। ২০২০-২০২১ সালের যে উচ্চভিলাশী বাজেট করেছিল সরকার, সেই বাজেটের ঘাটতি পূরণের জন্যও সরকারকে ব্যাংক থেকে অনেক লোন নিতে হয়েছে। এখন আবার কথিত উন্নয়নের নামে রিজার্ভের টাকা অন্যত্র সরাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর অবস্থা এখন খুবই খারাপ। সরকার বিগত ১২ বছর ধরে ব্যাংকগুলো থেকে বিভিন্ন কৌশলে টাকা নিচ্ছে। পদ্মাসেতুর জন্য সরকার ব্যাংকগুলো থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়েছে। কিন্তু এসব তথ্য কখনো প্রকাশ পায়নি। তারপর বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও এমপি পদে শেখ হাসিনা তার পছন্দের লোকদেরকে বসিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা সরিয়ে নিচ্ছে। যার ব্যাংকগুলো একেবারে ফতোর হয়ে গেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সারাদেশে শত শত কথিত উন্নয়ন প্রকল্প উদ্ভোধন করে টাকার অভাবে সেগুলো এখন আর বাস্তবায়ন করতে পারছে না। লুটপাটের জন্য এখন আবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভে হাত দিয়েছে শেখ হাসিনা। তারা হস্যরস করে বলছেন, কথায় আছে-বিড়াল যদি একবার পাতিল থেকে দুধ খাওয়ার সাদ পায় তাহলে সেই বিড়াল আর ঘর ছাড়ে না। চুরি করে হোক কিংবা মেউ মেউ করে ঘরের মানুষের জুগিয়ে হোক দুধ তাকে খেতেই হবে। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকটাও এখন মানুষের নামের সেই বিড়ালে চোখে পড়েছে। তারা চুরি করে হোক কিংবা কথিত উন্নয়নের নামে হোক টাকা এখান থেকে নিতেই হবে। ব্যাংকটাকে খালি না করা পর্যন্ত তারা নিস্তার হবে না।
Discussion about this post