অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
আগামী বুধবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচন। এ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও কথিত নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) সে বিষয়ে সার্বক্ষণিক হালনাগাদ রাখতে একটি আইনশৃঙ্খলা সমন্বয় ও মনিটরিং সেল গঠন করেছে ক্ষমতাসীনরা।
তবে এই নির্বাচনের মাধ্যমে আদৌ কি যোগ্য প্রতিনিধি জয়ী করতে পারবে চট্রগ্রামবাসী তা নিয়ে যেন আশঙ্কা রয়েেই গেলো।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নৌকার প্রার্থী রেজাউল করিমকে কিভাবে জেতানো হবে সেই পরিকল্পনা সরকার আগেই গ্রহণ করেছে। বুধবার যেটা হবে সেটা শুধু নির্বাচনের নামে আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। সূত্রটির দাবি চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকার প্রার্থীকে জেতানোর সিদ্ধান্ত সরকারের উপর মহল থেকে নেয়া হয়েছে। এজন্য অধিকাংশ কেন্দ্রই তারা দখলে নিয়ে নেবে। আর সরকারের এসব সিদ্ধান্তের কথা দায়িত্ব পালনকারী পোলিং ও প্রিজাইডিং অফিসারদেরকে জানিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলছেন, গত চার দিন আগে পোলিং-প্রিসাইডিং অফিসারদের ট্রেনিং হয়েছে। ওই ট্রেনিংয়ে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে পোলিং ও প্রিসাইডিং অফিসারদের সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ভোটের দিন নিজের নিরাপত্তার চিন্তা নিজেদেরকেই করতে হবে। নির্বাচন কমিশন কারো নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে পারবে না।
তাহলে নিরাপত্তার দায়িত্ব কার? উপস্থিত একজনের প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিজের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিজেকেই নিতে হবে। প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে নয়। তাই নির্বাচন কমিশন নিরাপত্তা দিবে কেমন করে!
সচেতন মহল বলছেন, নির্বাচন কমিশনের এমন মন্ত্যব্য থেকে স্পষ্ট সরকারি দল যেভাবে চাইবে পোলিং ও প্রিসাইডিং অফিসারদেরকে সেইভাবেই কাজ করতে বাধ্য। আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা কেন্দ্রদখল করলেও কিছু বলা যাবে না। বুথে ঢুকে নৌকায় সিল মারলেও কথা বলা যাবে না। ইভিএম ছিনিয়ে নিয়ে গেলেও বাধা দেয়া যাবে না।
তারা বলছেন, সাংবিধানিকভাবে নির্বাচনের সময় প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের অধীনে হলেও বাস্তবে অধীনে থাকবে না। সেদিন প্রশাসন চলবে সরকারের অলিখিত গোপন নির্দেশে। আর বর্তমান প্রশাসনতো সব কাজেই আওয়ামী লীগকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনেও সেটার কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে বিগত নির্বাচনে ভোটের আগের রাতে অনিয়ম হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক আদনান।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের গত নির্বাচনে মেয়র হিসেবে জয়ী হয়েছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন। অন্যদিকে ফিরিঙ্গিবাজার ওয়ার্ডে সেবার জয়ী হয়েছিলেন হাসান মুরাদ বিপ্লব। এবার তিনি আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তিনি বলেন ‘আমি একটি ছোট্ট কথা বলছি। আপনারা মনে কষ্ট নিবেন না। আপনারা একটা জিনিস লক্ষ রাখবেন বিগত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আপনাদের এই স্কুলে ভোটের আগের দিন রাতে একটি অনিয়ম হয়েছিল। আগামী নির্বাচনে যেন এই অনিয়ম আর না হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই কেন্দ্রে অতীতেও ভোট ডাকাতি হয়েছিল গভীর রাতে। আমি সাক্ষী। আমাকে চট্টগ্রাম কলেজের একজন সিনিয়র শিক্ষক রাত সাড়ে তিনটার সময় ফোন করে বলে ভাই এই সেন্টারে দায়িত্বে আমি আছি। এখানে তো ভোট চুরির ঘটনা ঘটে গেছে। এখন কী করবো? আমি তখন আমাদের তৎকালীন কাউন্সিলর বর্তমান চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও বর্তমান মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জহিরুল আলম দোভাষকে সংবাদটি জানাই।’