অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
কর্মস্থলে পোশাক বিধির নির্দেশ জারি করা জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. মুহাম্মদ আব্দুর রহিমকে ওএসডি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার এ বিষয়ে একটি আদেশ জারি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়, ডা. তানভীর আহমেদ চৌধুরীকে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের নতুন পরিচালক করা হয়েছে।
এছাড়া সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পরিচালক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়াকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করেছে সরকার।
গত ২৮ অক্টোবর আব্দুর রহিম এক বিজ্ঞপ্তিতে তার কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিস চলাকালীন মোবাইল ফোন বন্ধ রাখা এবং মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের জন্য পুরুষ টাখনুর উপরে এবং নারীদের হিজাব পরে পর্দা মেনে চলার নির্দেশনা দেন। তাতে বলা হয়েছিল, ‘অত্র ইনস্টিটিউটের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, অফিস চলাকালীন সময়ে মোবাইল সাইলেন্ট/বন্ধ রাখা এবং মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের জন্য পুরুষ টাখনুর ওপরে এবং মহিলা হিজাবসহ টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান করা আবশ্যক এবং পর্দা মানিয়া চলার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হল।’
পর দিন গণমাধ্যমে এটি প্রকাশ হলে ক্ষমতাসন সরকার ও নাস্তিকরা সমালোচনা করে। এরপর সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপসচিব শারমিন আক্তার জাহান কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠিয়ে তিন কর্মদিবসের মধ্যে তার জবাব দিতে বলেন ডা. রহিমকে। এরপর রাতেই ওপরের চাপে নোটিসটি প্রত্যাহার করে জাতির কাছে ক্ষমা চান আব্দুর রহিম।
সেই বিজ্ঞপ্তিতে আব্দুর রহিম বলেন, ‘উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশিত সংবাদটির জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত এবং সকলের কাছে অনিচ্ছাকৃত এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে দুঃখপ্রকাশ করছি। সেই সাথে গোটা জাতির কাছে বিনীতভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের ভুল হবে না বলে প্রতিজ্ঞা করছি।’
এদিকে সেই সমালোচনার পর এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির ডা. মুহাম্মদ আব্দুর রহিম বলেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠানের মুসলিম কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যেন ইসলামের নির্দেশনা মেনে চলেন, পর্দার মধ্যে থাকেন, তারা যেন কবিরা গুনাহ না করেন, সেজন্যই প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে এ বিজ্ঞপ্তটি দেয়া হয়েছে। তবে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা তাদের পছন্দমাফিক রুচিশীল পোশাক পরিধান করতে পারবেন।’
পরিচালক হতাশার সুরে আরও বলেন, ‘ভালো একটি নির্দেশনা ভাইরাল হয় কিন্তু তিনি প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক হিসেবে যোগদানের পর প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নে যে সকল ভালো ভালো উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, তা ভাইরাল হয় না।’
‘পরিচালক হিসেবে যোগদানের পর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে কে কে তিন বছরের অতিরিক্ত সময় এ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন, তাদের কার কাছে কী কী অর্থসম্পদ রয়েছে, কে কতটুকু জাকাত দিচ্ছে, সকাল বেলা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হাজিরা খাতায় উপস্থিতি নিশ্চিত করা, প্রতিটি কক্ষে জাতীয় সঙ্গীতের আয়োজনসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সেসব ভাইরাল হয় না। পর্দা মেনে চলার ব্যাপারটি ভাইরাল ও সমালোচনা হয়, যা দুঃখজনক’, যোগ করেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ডা. মুহাম্মদ আব্দুর রহিম।