অ্যানালােইসিস বিডি ডেস্ক
বাংলাদেশে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস এক ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে। দেশের এমন কোনো অঞ্চল নেই যেখানে করোনার প্রাদুর্ভাব ঘটেনি। আর করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর মিছিলতো দিন দিন বাড়তেই আছে। সরকারি হিসাবেই গত একদিনে দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২৮ জন মানুষ মারা গেছে। আর এর বইরে করোনার উপসর্গ নিয়ে প্রতিদিনি কত মানুষ যে মারা যাচ্ছে সেটার তো কোনো হিসাবই নেই।
করোনা যখন দেশে ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে ঠিক সেই সময় শেখ হাসিনা এক আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশের অভিজ্ঞ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞসহ বিশিষ্টজনদের মতামতকে উপেক্ষা করেই সরকার অফিস-্আদালত ও গণপরিবহন চালুর ঘোষণা দিয়েছে। সরকারের এই হঠকারী সিদ্ধান্তে বিশিষ্টজনেরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। আতঙ্ক বিরাজ করছে সারাদেশের সাধারণ মানুষের মধ্যেও।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভিসি অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া সরকারের এই হঠকারী সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করে বলেছেন, দুই মাসের শাটডাউন তুলে নেয়ার পরে মানুষের চলাচল বেড়ে গিয়ে দেশজুড়ে করোনাভাইরাসের মারাত্মক প্রাদুর্ভাবের সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও সীমিত সংখ্যক যাত্রী বহন করার বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, তবে গণপরিবহনে মানুষ যেভাবে গাদাগাদি করে যাতায়াত করতে অভ্যস্ত এতে এ নির্দেশনা বজায় রাখা সম্ভব হবে কি না এ নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
বিএসএমএমইউ ভিসি বলেন, স্বাস্থ্য নির্দেশনা না মেনে যেভাবে ছুটি কাটিয়ে মানুষ ফিরে আসা শুরু করেছেন তাতে ভাইরাসের আরও ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। আমরা ধরে নিতেই পারি করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ জুন অবধি বাড়বে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. বি-নাজির আহমেদ বলেন, ‘প্রতিদিন যেখানে করোনাভাইরাসের আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে সে সময়ে শাটডাউন তুলে নেয়াটা ভুল ও ঝুঁকিপূর্ণ পদক্ষেপ হবে। এর ফলে নিঃসন্দেহে ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাবে। আমরা পুরো জুন মাস জুড়েই ভাইরাসের মারত্মক প্রাদুর্ভাব দেখতে পাব।’
ডা. বি-নাজির আহমেদ বলেন, হাসপাতালগুলোতে এত রোগীকে সেবা দেয়ার ক্ষমতা নেই বলে পুরো মাস জুড়ে প্রাণহানির ঘটনাও অনেক বেড়ে যাবে।
ঢাকা কমিউনিটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের (ডিসিএমসিএইচ) মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. হারুন-অর-রশিদ বলেন, দৈনিক পরীক্ষা করা মানুষদের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পরিমাণ ৫-১০ শতাংশে নেমে আসার পর এ শাটডাউন শিথিল করা যেত। আমাদের দেশে পরীক্ষা করা রোগীদের মধ্যে আক্রান্তের পরিমাণ এখন ২১ শতাংশের বেশি। তাই, আমি মনে করি আমরা অফিস এবং পরিবহন পুনরায় চালু করে দিয়ে জাতির জন্য মারাত্মক বিপদ ডেকে আনছি।
সরকারের এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাধারণ মানুষও। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যগুলোতেও এনিয়ে কঠোর সমালোচনা হচ্ছে। করোনাভাইরাসে দেশের ৩০ থেকে ৪০ ভাগ মানুষ আক্রান্ত হয়ছেন বলে মনে করছেন বিজ্ঞানী বিজন কুমার শীল।
অনেকেই বলছেন, শেখ হাসিনা দেশকে অর্থনৈতিকভাবে ইতালি ও আমেরিকার মতো করতে পারেননি। প্রাণঘাতী করোনা ছড়িয়ে পড়ার পর দেশ দুইটি মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছিল। শেখ হাসিনা এখন বাংলাদেশকেও ইতালি-আমেরিকার মতো মৃত্যুপুরীতে পরিণত করতে চাচ্ছেন।
কেউ কেউ বলছেন, শেখ হাসিনার কাছে এদেশের মানুষের জীবনের কোনো মূল্য নেই। তিনি অর্থের পাগল। দেশ ও দেশের মানুষ ধ্বংস হয়ে যাক তাতে তার কোনো সমস্যা নেই। তার চায় টাকা।