করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা কিছু নিয়ম মেনে চললেই করা যাবে নিজেকে ও দেশকে। হাত ধোয়া, মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ইত্যাদি ব্যবহারের পাশাপাশি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও সরকার জানিয়েছে, সব মানুষকেই গৃহবন্দি অবস্থায় থাকতে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে। রোগ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে কোয়ারেন্টাইন, হোম কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কিন্তু অনেক মানুষের কাছে এই তিনটি শব্দের মানে অজানা। চলুন দেখে নেওয়া যাক এই তিন শব্দের প্রকৃত অর্থ কী এবং এদের মধ্যে ফারাক কোথায়?
কোয়ারেন্টাইন : কোয়ারেন্টাইনের সহজ অর্থ হলো সংক্রামক রোগের সংক্রমণ বন্ধ করার জন্য কোনো ব্যক্তিকে আলাদা করা। অর্থাৎ, কোনো ব্যক্তির শরীরে রোগটি বাসা বেঁধেছে কি না বা সে আক্রান্ত হয়েছে কি না_ এটা বুঝতেই সেই ব্যক্তিকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়। অন্য রোগীর কথা ভেবেই কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা কখনোই হাসপাতালে করা হয় না, করোনা হতে পারে এমন ব্যক্তিকে সরকারি কোয়ারেন্টাইন পয়েন্টে রাখা হয়। করোনাভাইরাস শরীরে প্রবেশ করার পরই উপসর্গ সঙ্গে সঙ্গে দেখা যায় না। সপ্তাহখানেক কোনো লক্ষণ প্রকাশ না করেই ভাইরাসটি শরীরের মধ্যে থাকতে পারে। কোনো ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে এলে বা করোনা আক্রান্ত কোনো দেশ ঘুরে এলে কভিড-১৯ তার শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। সে ক্ষেত্রে সে করোনা পজিটিভ কি না_ তা জানতে তাকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়। সরকারি ব্যবস্থাপনায় কোয়ারেন্টাইন পয়েন্ট খোলা হয়। এখানে সন্দেহজনক কোনো ব্যক্তিকে ১৪ দিন পর্যন্ত কোনো ওষুধপত্র ছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। বাইরে বেরোনো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং বাড়ির লোকের প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা থাকে।
হোম কোয়ারেন্টাইন : হোম কোয়ারেন্টাইনের সব নিয়ম মেনে কোনো ব্যক্তি যখন নিজেকে নিজের বাড়িতেই আলাদা করে রাখেন, তখন তাকে হোম কোয়ারেন্টাইন বলে। কেউ আক্রান্ত দেশ ঘুরে এলে বা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে সেই ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয় পর্যবেক্ষণ করার জন্য। এ ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১৪ দিন ধরে তাকে আলাদা ঘরে রাখা হয়। কভিড-১৯ তার শরীরে বাসা বেঁধেছে কি না, তা বুঝে নিতেই এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রেও শুধু স্বাস্থ্যবিধি ছাড়া কোনো ধরনের ওষুধ দেওয়া হয় না এবং কাউকে সেই ব্যক্তির কাছে ঘেঁষতে দেওয়া হয় না।
আইসোলেশন : আইসোলেশন কারও শরীরে যদি করোনার লক্ষণসহ সোয়াব টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ হয়, তবে সেই ব্যক্তিকে চিকিৎসকের পরামর্শমতো আইসোলেশনে পাঠানো হয়। হাসপাতালে সম্পূর্ণ আলাদা জায়গায় আইসোলেশনের ব্যবস্থা রাখা হয়। ১৪ দিনের মেয়াদে চিকিৎসক ও নার্সদের তত্ত্বাবধানে এই পর্যবেক্ষণ চলে। রোগের প্রকৃতি দেখে এই মেয়াদ বাড়তেও পারে। আইসোলেশনে থাকার সময় রোগীকে যেমন বাইরে বেরোতে দেওয়া হয় না, তেমনি বাইরের কোনো ব্যক্তিকে রোগীর সঙ্গে দেখা করতেও দেওয়া হয় না। এই রোগের ক্ষেত্রে শুধু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো যায় এ রকম কিছু ওষুধ এবং খাবার দিয়ে রোগীকে চিকিৎসা করা হয়। যেহেতু এই রোগের কোনো প্রতিষেধক নেই। তাই কিছু অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধ প্রয়োগ করে রোগীকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করা হয়।
সূত্র: দেশ রূপান্তর