রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের ড্রেসকোড পরিবর্তনের নির্দেশনা দিয়েছে ক্ষমতাসীন সরকার। এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকরা।
জানা গেছে, মেয়েদের ড্রেসকোডে মাথায় স্কার্ফ বা ওড়না ব্যবহারের নির্দেশনা থাকলেও নতুন প্রণীত ড্রেসকোডে সেখানে স্কার্ফ বা ওড়না ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অন্যদিকে ছেলেদের মাথায় টুপি ব্যবহারকেও অঘোষিতভাবে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। শুধু শিক্ষার্থীই নয়, শিক্ষকদের মধ্যেও আগে যারা পাঞ্জাবী পরে স্কুলে আসতেন তাদেরকে এখন পাঞ্জাবী পরতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে কেউ পাঞ্জাবী পরলেও পাঞ্জাবীর উপরে আলাদাভাবে কটি পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষ দাবি করছেন তারা ড্রেসকোডে কোনো পরিবর্তন আনেননি। মেয়েদের ওড়না বা স্কার্ফ ব্যবহার এবং ছেলেদের টুপি ব্যবহারকে পুরোপুরি নিষেধও করা হয়নি। তবে এই ড্রেসগুলোকে শুধু ঐচ্ছিক করা হয়েছে মাত্র।
মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের দিবা শাখার এক শিক্ষক জানান, সম্প্রতি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির এক সভায় ড্রেস কোড পরিবর্তনের এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। কমিটিতে সরকারের পক্ষ থেকে একজন প্রতিনিধি ছিলেন। তার নাম আবু হেনা মোর্শেদ জামান। সরকারের কোনো কর্মকর্তা যখন স্কুল কমিটিতে কোনো সিদ্ধান্ত দেন তখন অন্যান্য সদস্যদের ওই সিদ্ধান্তই মেনে নিতে হয়। নতুন ড্রেসকোডের ক্ষেত্রেও সরকারি ওই কর্মকর্তার মতামতকেই প্রাধান্য দিয়ে গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, শিক্ষকদের ড্রেসের বিষয়ে নতুন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কোনো শিক্ষক এখন থেকে আর পাঞ্জাবী পরে স্কুলে আসতে পারবেন না। পাঞ্জাবী পরলেও এর উপরে বাধ্যতামূলকভাবে আলাদা কটি পরতে হবে। শিক্ষকদের জুতা ব্যবহারের ক্ষেত্রেও আলাদা কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের ড্রেসকোডের বিষয়ে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগম বলেন, আমরা ওড়না বা হিজাব পরাটাকে আমরা ঐচ্ছিক করেছি। চাইলে কেউ এই হিজাব ভালমতো পরবে আর কেউ না চাইলে না পরবে।
আগে তো’ মেয়েদের বড় ওড়না ব্যবহার আবশ্যিক ছিল, তাহলে এখন কেন এটাকে ঐচ্ছিক করলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি এড়িয়ে যান। তিনি দাবি করে বলেন, ওই বড় ওড়নাটা অনেকে সুন্দর করে পরে স্কুলে আসতো না। তাই আমরা বলেছি সুন্দর করে ওড়না পরতে হবে। যেনতেন বা অগোছালোভাবে ওই ওড়না পরা যাবে না। কাজেই ওড়নাতো একটি আছেই। আর যে কথাটি বলা হচ্ছে ওড়না নেই এটা আসলে সঠিক না।
শিক্ষকদের পায়জামা আর পাঞ্জাবী পরার বিষয়ে অধ্যক্ষ বলেন, শিক্ষকদের আমরা স্মার্ট হিসেবে দেখতে চাই। কেউ পাঞ্জাবী পরে স্কুলে আসতে চাইলে আমরা বলেছি শুধু পাঞ্জাবী পরে স্কুলে আসা যাবে না। পাঞ্জাবীর উপরে অবশ্যই আলাদা একটি কটি পরতে হবে। এছাড়া শিক্ষকদের জুতা ব্যবহারের বিষয়ে আমরা নির্দেশনা দিয়েছি।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে ওড়না ব্যবহার নিষেধাজ্ঞা নিয়ে তিব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। এছাড়া গত কয়েক দিন আগে ক্লাসে আরব দেশের পোশাক পরে আলোচনা সমালোচনায় উঠে আসেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ছাত্ররা।
তথ্য সূত্র: নয়াদিগন্ত