অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
রাসুল (স)কে নিয়ে হিন্দু যুবক বিপ্লবের কটূক্তি ও পুলিশের গুলিতে ৪ জন নিহতের পর ভোলার বোরহানউদ্দিনের পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলেও চাপা আতঙ্ক বিরাজ করছে এলাকার মানুষের মধ্যে। বিশেষ করে বোরহানউদ্দিনের বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের দিন কাটছে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে। তৌহিদী জনতার প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশ অন্যায়ভাবে গুলি করে ৪ জনকে হত্যা করে এখন পুরো দায়ভার বিএনপি-জামায়াতের উপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে।
ইতিমধ্যে শনিবার ভোলা জেলা প্রশাসকের কাছে এই ঘটনার একটি তদন্ত প্রতিদেবন জমা দিয়েছে পুলিশ। জানা গেছে, এই প্রতিবেদনে সরকারের নির্দেশে বিএনপি, ছাত্রদল, জামায়াত ও শিবিরের পরিচিত শতাধিক নেতাকর্মীকে জড়ানো হয়েছে।
বিপ্লবকে রক্ষায় পুলিশ
হিন্দু যুবক বিপ্লব রাসুল (স) ও তার মেয়ে ফাতেমাকে নিয়ে ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট করার পর প্রতিবাদে শুক্রবার সকালে তৌহিদী জনতা বিক্ষোভ মিছিল করে। উত্তপ্ত হয়ে উঠে এলাকার পরিস্থিতি। এরপর সন্ধ্যায় নিজেকে রক্ষায় থানায় গিয়ে আশ্রয় নেয় বিপ্লব। জানা গেছে, তখন পুলিশই বিপ্লবকে শিখিয়ে দেয় যে, তুমি বলবা আইডি হ্যাকড হয়ে গেছে। পুলিশের শেখানো বুলি অনুযায়ী বিপ্লব থানায় একটি জিডি করে যে, তার আইডি হ্যাকড করে অন্য কেউ এই ধরণের পোস্ট দিয়েছে।
পুলিশকে রক্ষায় সরকার
এরপর রোববার আবার প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দেয় তৌহিদী জনতা। ওইদিন থানায় স্থানীয় আলেম ও পুলিশের মধ্যে একটা সমঝোতা হয়েছিল যে, ঈদগাহ মাঠে লোকজন আসবে। ওই মঞ্চে তিনজন আলেম ও তিনজন পুলিশ কর্মকর্তা বক্তব্য রাখবেন। সাধারণ মানুষকে বিষয়টি বুঝিয়ে বলে তাদেরকে বিদায় করবেন। কিন্তু রোববার সকালে মানুষ আসার আগেই পুলিশ গিয়ে দুইজন ইমামকে জোরকরে মোনাজাত করে চলে যেতে বলেন। পুলিশ তাদেরকে মোনাজাত করে চলে যেতে বাধ্য করে। এঘটনা দেখেই তৌহিদী জনতা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। পুলিশের এই আচরণের প্রতিবাদে সাধারণ মানুষ মিছিল করলে পুলিশ তাদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়।
অথচ, পুলিশ এখন মিথ্যাচার করে বলছে যে, রাতে সমঝোতা হয়েছিল তারা রোববার সকালে সমাবেশ করবে না। বোরহানউদ্দিনের মাওলানা আতাউর রহমান পরে বিষয়টি একাত্তর টিভির টকশোতে পরিস্কার করে দিয়েছেন।
এরপর, ছাত্রদল নেতা সবুজ পুলিশের ওপর গুলি করার নির্দেশ দিয়েছে বলে আওয়ামী পন্থী কিছু মিডিয়া ফলাও করে প্রচার করছে। অথচ, ভিডিওতে শুনা যাচ্ছে-তিনি বিপ্লবকে লক্ষ্য করে কথাটা বলেছেন। সবুজ বলেছেন-ওরে গুলি করে মারছ না কেন? এখানে তিনি পুলিশের নাম উচ্চারণ করেননি। মুলত কুলাঙ্গার বিপ্লবকে গুলি করে মারার কথা বলেছেন তিনি।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বোরহানউদ্দিনের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচারের চেয়ে সরকার এখন জড়িত পুলিশ সদস্যদেরকে রক্ষায় বেশি তৎপর। আর এঘটনাকে সরকার এখন রাজনৈতিক রূপ দেয়ারও চেষ্টা করছে। বিপ্লবের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগও তুলছে সরকার। বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের উস্কানিতে এমন ঘটনা ঘটেছে মর্মে তদন্ত প্রতিবেদনে দেখানো হবে।