অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশবিরোধী চুক্তির প্রতিবাদে স্ট্যাটাস দেয়ায় বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে ক্রিকেট স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে নির্মাভাবে হত্যা করেছে জঙ্গি খ্যাত সংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা। নৃশংস, বর্বরোচিত ও নির্মম এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে যখন সারাদেশ ক্ষোভে ফুসছে তখন রহস্যজনক কারণে হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা অমিত শাহকে মামলা থেকে বাদ দিয়েছে প্রশাসন।
জানা গেছে, অমিত শাহ বুয়েট ছাত্রলীগের উপ আইন বিষয়ক সম্পাদক। অমিত শাহ যে কক্ষে থাকতেন অর্থাৎ ২০১১ নম্বর কক্ষেই আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। বুয়েটের একাধিক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, এই অমিত শাহ-ই রোববার রাত ৮টায় আবরারকে রুম থেকে ডেকে এনে তার মোবাইল চেক করেছেন। মোবাইল চেক করে ভারত বিরোধী স্ট্যাটাস পাওয়ার পরই আবরারের ওপর তারা নির্যাতন শুরু করে। অথচ সেই অমিত শাহকেই মামলা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। এমনকি ছাত্রলীগ যাদেরকে বহিস্কার করেছে সেই তালিকাতেও অমিত শাহের নাম নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আবরারের একাধিক সহপাঠি অভিযোগ করে বলেন, এই হত্যাকান্ডের সাথে আমিত সাহা সরাসরি সম্পৃক্ত কিন্ত রহস্যজনকভাবে মামলার এজহার থেকে তার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। তিনি একজন বড় বড় কর্মকর্তার আত্নীয়। বিভিন্ন্য পত্র- পত্রিকা ও টেলিভিশনেও তার সম্পৃক্ততার খবর প্রচার করা হলেও তাকে আইনের আওতায় নেওয়া হয় নি। অনতিবিলম্বে তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে বলে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন তাকে নিয়ে এত কিছু করার মানে কি? এসব কি চলছে তাকে নিয়ে। অনেকেই মন্তব্য করে বলেছেন কোন জিনিষকে রক্ষা করতে ও কাকে খুশি করতে অমিতকে রাখা হচ্ছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অমিত শাহ বাংলাদেশে ভারতীয় সংগঠন ইস্কনের সদস্য। ইস্কনের নেতা হলেন ছাত্রলীগের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি লেখক ভট্টাচার্য। অমিত শাহ ছাত্রলীগ সেক্রেটারির ঘনিষ্ট বন্ধু। এই হত্যাকাণ্ডের পরই ছাত্রলীগ সেক্রেটারি ঢাকাস্থ ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ভারতীয় দূতাবাসের কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশে অবস্থান করা ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার এনিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে। হত্যা মামলা থেকে অমিত শাহকে বাদ দিতে তারা সরকারের ওপর প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি করে। এরপরই আবরার হত্যা মামলায় অমিত শাহের নাম অন্তর্ভূক্ত না করতে সরকারের পক্ষ থেকে পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই অমিত শাহকে ছাত্রলীগ থেকেও বহিস্কার করা হয়নি।
জানা গেছে, মামলা ও বহিস্কারের তালিকায় অমিত শাহের নাম না রাখায় ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মীও ক্ষোভ প্রকাশ করছে। বিশেষ করে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মী বলছেন, রহস্যজনক কারণে আবরার হত্যা মামলা থেকে অমিত শাহকে বাদ দেয়া হয়েছে। অথচ সেই এই হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা।